দালালমুক্ত করা হলো বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন
দালালমুক্ত করা হলো বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক কাস্টমস ও পুলিশ ইমিগ্রেশন। চলতি বছরের শুরু থেকেই বহিরাগতদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে এই চেকপোস্টে। ভারত গমনাগমনকারী পাসপোর্ট যাত্রী হয়রানি বন্ধে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ফলে পাসপোর্ট ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন টার্মিনালে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন তরফদার দালালদের পুনরায় পুনর্গঠিত করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে কাস্টমসের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে মামুন তরফদার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম-কমিশনার আব্দুর রশিদ মিয়া যোগদানের পরপরই কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত করতে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক স্ক্যানিক মেশিন। এছাড়া সশস্ত্র আনসার দিয়ে জোরদার করা হয়েছে যাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৫০ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করেছে। যাত্রীদের কাছ থেকে এ সময় বিদেশে ভ্রমণ কর বাবদ রাজস্ব আদায় করেছে ৪১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
আন্তর্জাতিক কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন এলাকায় বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা, যাত্রীদের করা হয়েছে বিশ্রামাগার, রয়েছে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। বহির্গমন ও আগমনের জন্য যাত্রীদের পৃথক ব্যবস্থা করা হয়েছে স্টিলের রেলিং দিয়ে। টার্মিনালের প্রধান ফটকে বন্দরের নিরাপত্তা কর্মী, আনসার সদস্য ও কাস্টমস অফিসাররা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখায় প্রবেশ করতে পারছে না পাসপোর্ট দালালেরা। যদিও করোনার কারণে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত গমনাগমনকারী পাসপোর্ট যাত্রী সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে। ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাদের সেবার মান বৃদ্ধি করায় যাত্রীরা দ্রুত ও সুশৃঙ্খলভাবে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারছেন নিজেরাই।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্র জানায়, দির্ঘদিন ধরে বেনাপোল চেকপোস্টে এক শ্রেণির লোক দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের নানা ভাবে হয়রানি করে আসছিল। সিরিয়াল ছাড়া তাদের পাসপোর্ট দ্রুত করে দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি।
পাসপোর্ট যাত্রীদের পক্ষ থেকে কাস্টমসের যুগ্ম-কমিশনারকে অভিযোগ করলে তিনি কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত করার ঘোষণা দেন। যাত্রীদের সেবার মান উন্নত করতে চেকপোস্ট প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের বহিরাগত দালাল উৎখাতে এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যাতে টার্মিনাল এলাকায় বহিরাগত কোনো দালাল ঢুকতে না পারে, সেজন্য প্রতিনিয়ত তদারকি করা হচ্ছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ওসি রাজু আহমেদ জানান, করোনার আগে প্রতিদিন বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করে ভারতে। সেসময় প্রতিমাসে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হতো বিদেশ ভ্রমণ কর থেকে।
বেনাপোল চেকপোস্টে কোনো পাসপোর্টযাত্রী যাতে হয়রানি না হয়, সেজন্য দালালমুক্ত করা হয়েছে বলে জানান যুগ্ম কমিশনার। ঝামেলামুক্ত হয়ে যাত্রীরা যাতে ভারত যাতায়াত করতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। বর্তমানে প্রতিজন যাত্রীকে সিরিয়ালে দাঁড় করিয়ে তাদের পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হচ্ছে।
বেনাপোল কাস্টমস যুগ্ম-কমিশনার আব্দুর রশিদ মিয়া জানান, বর্তমানে চেকপোস্ট কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত করা হয়েছে। তবে এটি বাস্তবায়ন করতে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে। বর্তমানে কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়া নিরাপদে যাত্রীরা ভারত গমনাগমন করছেন। কোনো ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে কাস্টমস এ দালাল প্রবেশ করতে পারবে না।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)