সাতক্ষীরায় মুক্তিপণ আদায়, শ্রমিকলীগের সভাপতি ও ছাত্রলীগ নেতাসহ কারাগারে ৪
সাতক্ষীরার তালায় মুক্তিপণ আদায়ের সময় উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি, ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে মুক্তিপণ দাবি ও মুক্তিপণ আদায় করার দায়ে মামলা রুজু করে আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মাঝ রাতে তালা ও ডুমুরিয়া সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন- তুহিন শেখ (৩৩) সে তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হাজরাকাটি গ্রামের মোসলেম শেখের ছেলে। একই সাথে তিনি তালা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সদ্য-সাবেক সভাপতি। মামলার অপর আসামি- সেলিম হোসেন (৩৬) তিনি তালা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এবং খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য, মামলার অপর দুই আসামিরা হলো, একই এলাকার নাসির তালুকদারের ছেলে রিয়াজ তালুকদার (২৮), লেকয়াত মোলঙ্গীর ছেলে রাহুল মোলঙ্গী(৩০)।
অপরদিকে, মামলার বাদী ডুমুরিয়া উপজেলার গোণালী গ্রামের অজিত বিশ্বাসের ছেলে শিবপদ বিশ্বাস।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তালা উপজেলার আটারই গ্রাম থেকে দুই ব্যক্তিকে অবরুদ্ধ করে রাখে অভিযুক্ত চার ব্যক্তিসহ তাদের সহযোগীরা। ওই দুই ব্যক্তির কাছে গাঁজা রয়েছে এই মর্মে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাদের দেহ তল্লাশি করে। পরবর্তীতে তাদের অভিভাবকদের কাছে ফোন করে কয়েক ধাপে ১৯ হাজার ৫০০ টাকা মুক্তিপণ গ্রহণ করে। চাহিদামতো মুক্তিপণ না পেয়ে এক পর্যায়ে তাদেরকে তালা উপজেলা ও ডুমুরিয়া সীমান্তের কাছাকাছি মৎস্য ঘের সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে ওই দুই ব্যক্তির পরিবারের কাছে পুনরায় মুক্তিপণ দাবি করে অভিযুক্তরা। এসময় ভুক্তভোগীদের পরিবার মুক্তিপণের টাকা দিয়ে তাদের ছেলেদের উদ্ধার করতে সম্মতি জানায়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মুক্তিপণের টাকা নিয়ে ডুমুরিয়া থানার সীমান্ত এলাকা মাগুরখালীতে যেতে বলে।
পরবর্তীতে তাৎক্ষণিকভাবে ডুমুরিয়া থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে সেখানে গিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক করে পুলিশ। তবে এসময় তাদের অন্য সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
ডুমুরিয়া থানার সাব ইন্সপেক্টর কামরুল ইসলাম জানান, মুক্তিপণের কাঙ্ক্ষিত টাকা না পেয়ে তালা উপজেলা থেকে তাদেরকে ডুমুরিয়া সীমান্তে নিয়ে আসে। এসময় ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশের ফোর্স সেখানে গিয়ে অভিযুক্ত চার ব্যক্তিকে মুক্তিপণের টাকাসহ আটক করা হয়। এসময় তাদের সঙ্গে থাকা অন্য সহযোগীরা পালিয়ে যায় তাই তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি।
তালা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, দুই ব্যক্তিকে আটকে রেখে তাদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবির ঘটনা ঘটেছে গতকাল রাতে। তালা থানার সীমানা অতিক্রম করে ডুমুরিয়া থানার অন্তর্গত চলে যায় তারা। পরবর্তীতে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ তাদেরকে আটক করেছে।
ডুমুরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ কনি মিয়া বলেন, দু’জনকে আটক করে চাঁদা দাবি করছিল। কয়েক দফায় ১৯ হাজার পাঁচশত টাকা মুক্তিপণ গ্রহণ করেছে। তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে চার ব্যক্তিকে আটক করা হয়। আটকদের বিরুদ্ধে মুক্তিপণ দাবি ও আদায় করার দায়ে মামলা হয়েছে। তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)