অপহৃত সেই নোমান সীমান্ত থেকে উদ্ধার


নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর থেকে অপহৃত যুবক নোমান মিয়াকে (২১) ফেনীর পরশুরাম এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পরশুরাম থানা পুলিশের সহযোগিতায় দুর্গাপুর থানা ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল বুধবার রাত ৮টার দিকে সীমান্তবর্তী জয়ন্তনগর এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ফেনী থেকে দুর্গাপুর থানায় আনা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নেত্রকোনার দুর্গাপুরের ওই যুবক নোমান মিয়াকে কাজ দেওয়ার কথা বলে ফেনীতে অপহরণ করে নেওয়ার অভিযোগে প্রতিবেশী বাদশা মিয়া নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা দাবি করেছে জানিয়ে নোমানের বাবা সোমবার রাতে দুর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
নোমান মিয়ার বাবা দুর্গাপুর উপজেলার পাটলী গ্রামের শক্কুর আলী বলেন, নোমান গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় রিকশা চালাত। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সে গ্রামের বাড়িতে আসে। ওই ন বিকালেই প্রতিবেশী বাদশা মিয়া তাকে কাজ দেওয়ার কথা বলে ফেনীতে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, এর পর দিন নোমান মুঠোফোনে তার ছোট বোন নূরজাহানকে বার্তা পাটিয়ে জানায় তাকে অপহরণ করে শারীরিক নির্যাতন ও এক লাখ ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হচ্ছে। টাকা না দিলে তাকে খুন করা হবে এমন হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া লাবু মিয়া নামের অপর এক ব্যক্তি নোমানের বড় ভাই শামীমকে ফোন করে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ পাঠাতে বলেন। অপহরণকারীরা তাকে গাছের সঙ্গে শিকলে বেঁধে মারধরের ভিডিও ফুটেজ ও ছবিও পাঠায় শামীমের ইমো নম্বরে।
এ ঘটনায় শক্কুর আলী বলেন, পাটলী গ্রামের বাদশা মিয়া ও ফেনীর লাবু মিয়া নামের দুই ব্যক্তি এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত। নোমানকে ফেনীতে নেওয়ার দুদিন পর বাদশা মিয়া বাড়িতে চলে আসে।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে দুর্গাপুর থানা পুলিশ বাদশা মিয়াকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে নিয়ে ফেনীর পরশুরামে উদ্ধার অভিযানে যায় দুর্গাপুর থানা ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল। তারা বুধবার রাতে জয়ন্তনগর এলাকা থেকে নোমানকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তাকে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণ চক্রের সদস্যরা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে গেছে বলে জানান উদ্ধারকারী পুলিশ দলের সদস্যরা।
উদ্ধার হওয়া নোমান ও আটক বাদশা মিয়া বর্তমানে দুর্গাপুর থানায় হেফাজতে রয়েছে।
নেত্রকোনা ডিবি পুলিশের এসআই ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে নোমান ও অপহরণের ঘটনায় জড়িত বাদশা এবং লাবুসহ চক্রটির প্রত্যেকে মাদককারবারির সঙ্গে জড়িত। তারা সীমান্ত এলাকা দিয়ে গাঁজা আনা-নেওয়ার কাজ করত। নোমান ছিল তাদের বাহক। গাঁজা ব্যবসার দেনা-পাওনা নিয়ে বিরোধের কারণে চক্রটি নোমানকে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করে।’
উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্গাপুর থানার ওসি মীর মাহবুবুর রহমান ও ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহমেদ।
দুর্গাপুর থানার ওসি মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা নোমানকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
