এসএসসি-এইচএসসিতে পরীক্ষা ৫০ নম্বরের, সময় দেড় ঘণ্টা!
চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় কমে যাচ্ছে সময় ও নম্বর।
২০২২ সালের এই দুই পাবলিক পরীক্ষা তিন ঘণ্টার পরিবর্তে নেওয়া হবে দেড় ঘণ্টায়। আর পরীক্ষায় পূর্ণমান ১০০ নম্বরের পরিবর্তে নির্ধারিত থাকছে ৫০ নম্বর।
গত বছর এসএসসি-এইচএসসিতে টেস্ট বা নির্বাচনী পরীক্ষা নেওয়া না হলেও এই বছর ছাত্র-ছাত্রীদের চূড়ান্ত পরীক্ষার আগে বসতে হবে টেস্ট পরীক্ষায়।
সম্প্রতি মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠান-সংক্রান্ত ভার্চুয়াল সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ অন্যরা এতে অংশ নেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত পুনর্বিন্যস্ত পাঠ্যসূচি (এসএসসি পর্যায়ে ১৫০ দিনের এবং এইচএসসি পর্যায়ে ১৮০ দিনের) অনুযায়ী এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সশরীরে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রয়োজনীয় ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এখনো স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে। তাই নম্বর কমিয়ে ও সময় কমিয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষা নিয়ে অনেক পরিকল্পনাই পরিবর্তন করতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, এসএসসি-এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য তারিখও নির্ধারণ করা হয় সভায়।
তথ্য মতে, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার টেস্ট পরীক্ষা ৩ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে। এসএসসির চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হবে ১৯ মে, বৃহস্পতিবার। আর শেষ হবে ৯ জুন, বৃহস্পতিবার। এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার টেস্ট পরীক্ষা শেষ করতে হবে ৭ জুনের মধ্যে। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হবে ১৮ জুলাই, সোমবার।
৩১ আগস্ট, বুধবার এই পরীক্ষা শেষ হবে।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ বলেন, দুই পাবলিক পরীক্ষায় নম্বর ও সময় কমিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। আইসিটি বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষার ক্ষেত্রে। এ ছাড়া প্রতিটি বিষয়ে নম্বর ও সময় কমিয়ে পৃথক পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত কোনো তারিখ বা সময় জানানো হয়নি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সভায় উপস্থিত থাকা একটি সূত্র জানায়, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ক্ষেত্রে বাদ দেওয়া হচ্ছে ইসলাম শিক্ষা বা ধর্ম বিষয় এবং আইসিটি।
এ ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, এ ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।
সভা সূত্র আরও জানায়, এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানে প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষার পূর্ণমান হবে ৫০ নম্বর। প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষা আলাদাভাবে গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময় থাকবে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের নম্বর বণ্টনের ক্ষেত্রে বাংলা প্রথম পত্রে এমসিকিউ অংশে ২০ নম্বরে এবং লিখিত অংশের ৩০ নম্বরে পরীক্ষা নেওয়া হবে। বাংলা দ্বিতীয় পত্রে রচনামূলক অংশে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে দুই পাবলিক পরীক্ষায় বাংলা প্রথম পত্রে লিখিত অংশের ছয়টি প্রশ্নের মধ্যে যে কোনো তিনটি উত্তর দিতে হবে। যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা নেই সেগুলোর লিখিত অংশে ১১টি প্রশ্নের মধ্যে যে কোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা রয়েছে এমন বিষয়ে লিখিত অংশে আটটি প্রশ্নের মধ্যে যে কোনো তিনটির উত্তর দিতে হবে। এসএসসি-এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রমের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায়।
মাউশি সূত্র জানায়, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্ধারিত ২৫ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের মধ্যে ১৭ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম বাকি রয়েছে। বাকি অ্যাসাইনমেন্ট দ্রুত শুরু করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রেণি কার্যক্রমে জোর দিতে বলা হয়েছে। সপ্তাহে ছয় দিনে প্রতিদিন চারটি বিষয়ে ক্লাস নিতে হবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইনে ও টিভিতে ক্লাস চলমান থাকবে।
তথ্যসূত্র: বিডি প্রতিদিন
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)