কলারোয়ায় অনলাইন প্লাটফরম ব্যবহারের মাধ্যমে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে সচেতনতামূলক সভা
জি.এম আবুল হোসাইন : কলারোয়া উপজেলায় কমিউনিটি পর্যায়ে, শিশু পাচার, বাল্যবিবাহ, নিরাপদ অভিবাসনসহ অনলাইন প্লাটফরম ব্যবহারের মাধ্যমে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় রাইটস যশোর সংস্থার মুক্তি সাউথ এশিয়া প্রকল্প কর্তৃক আয়োজিত কেরালকাতা গ্রামে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে উক্ত সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাইটস যশোর এর বাস্তবায়নে একপাট-লুক্সেমবার্গ সহযোগিতায় ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর অর্থায়নে কেরালকাতা ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মিজানুর রহমান এর সভাপতিত্বে সচেনতনতামূলক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
সভার শুরুতেই প্রকল্পের মূল বিষয়বস্তু বিস্তারিত ভাবে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন, রাইটস যশোর এর প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী মো. বাদশা মিয়া।
অনুষ্ঠানে ধারাবাহিক ভাবে প্রথমে আলোচনা সভা, সংস্থা ও প্রকল্পের কার্যক্রমের উপস্থাপনা, ভিডিও শো এবং কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পাচারকারীরা শিশু শিকার ফাঁদে ফেলতে এখন নানাভাবে ব্যবহার করছে সামাজিক মাধ্যম। একসময় সরাসরি বা পরিচিতদের মাধ্যমে মানুষদের বিদেশে চাকরির লোভ দেখিয়ে পাচারের চেষ্টা করা হলেও এখন সেই স্থান দখল করে নিয়েেেছ সামাজিক মাধ্যম। প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধ বেশি হচ্ছে, অপরাধী হয়তো দেশের বাইরে আছে। তিনি ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোবাইল বা অন্য কোন মাধ্যমে টাকা নিচ্ছেন। তাকে ভুক্তভোগীর ফেস টু ফেস হতে হচ্ছে না। ভুক্তভোগী প্রতারিত হলেও মূল আসামীকে দেখছেন না। আবার ভাইবার, ইমো ব্যবহার করে তাকে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে, খুব সহজে টার্গেট করা হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে অথবা ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে মানব পাচারের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার বেড়েছে। বিশেষ করে ফেসবুক, টিকটক, ইমোসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, মাঠ পর্যায়ে গবেষণা করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, পাচারকারীরা অনেক বেশি সক্রিয় হচ্ছে অনলাইনে। ফেসবুক, টিকটক, ওয়াটসঅ্যাপ, ইমো এই সমস্ত জায়গায় যারা সক্রিয়, তাদের কাউকে কাউকে ভারতে পাচারের জন্য তারা প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করছে, প্রলোভন দেখাচ্ছে, কখনো টিকটকের মডেল বানানোর কথা বলছে। কাজের প্রতিশ্রতি দিয়ে আমাদের দেশ থেকে নারীদের ভারতে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। প্রত্যেকে তাদের বক্তব্যে রাইটস যশোর’র এমন একটি মহতি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং তাদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। বর্তমান সমাজে অনলাইন প্লাট ফরম যেমন-হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ফেসবুক ব্যবহার করে মানব পাচারের ক্ষেত্রে একটি কুচক্রী মহল কাজ করে যাচ্ছে যা বর্তমানে যুব সমাজকে ধংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে।
মানব পাচারের শিকার প্রত্যাবাসন সারভাইভারদের স্বাস্থ্যসেবা, আইনী সহায়তা প্রদান এবং আর্থিক সক্ষমতার লক্ষ্যে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে তাদেরকে সমাজের মূল শ্রোতধারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসাই হল প্রকল্পের মুল উদ্দেশ্য।
আলোচনা সভা শেষে উপস্থিত সকলের মাঝে বিষয় ভিত্তিক প্রশ্ন উত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয় এবং সঠিক উত্তর দাতাদের মধ্যে বিজয়ী ৫ জনকে পুরুষ্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেরালকাতা ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য সোনিয়া লায়লা ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক মো. জিন্নাত আলী।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রাইটস যশোর এর মুক্তি সাউথ এশিয়া প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার মো. আসাদুজ্জামান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)