রবিবার, মার্চ ৩০, ২০২৫

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

জলবায়ু সংকট মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জলবায়ু সংকট মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি। জলবায়ু দুর্যোগজনিত আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার চীনের বোআও ফোরাম বার্ষিক সম্মেলন ২০২৫-এ বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, লিখিত বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতার ধারণা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তন তীব্রতর হচ্ছে। ঋণের বোঝা অসহনীয় হয়ে উঠছে এবং মানবিক সংকট ক্রমশ জটিল হচ্ছে। উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা দুর্বল হচ্ছে, যা বৈশ্বিক কর্মকাণ্ডে গুরুতর ঘাটতির সৃষ্টি করছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বের ৬০ শতাংশ জনগণ এবং বৈশ্বিক জিডিপির ৫৫ শতাংশ ধারণকারী এশিয়া এই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। নতুন নতুন নীতি, নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং প্রযুক্তি শাসন ব্যবস্থা ও অর্থনীতিকে পুনর্গঠিত করছে। দশ বছর আগে নীতিনির্ধারণের জন্য যেসব অনুমান কার্যকর ছিল, তা এখন আর প্রাসঙ্গিক নয়। আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা আজ আরও তীব্র হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ক্ষুদ্রঋণের উপর অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য ২০০৭ সালে বোয়াও ফোরামে যোগ দিয়েছিলাম। আজ একটি ভিন্ন ভূমিকায় এমন এক বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি যা গত বছর জুলাই-আগস্টে এক ঐতিহাসিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে গেছে। বিশ্ব দেখেছে কীভাবে আমাদের জনগণ নিপীড়ন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের যুবসমাজ এবং সাধারণ জনগণ ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনের জন্য অসাধারণ সংকল্প ও দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছে। জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে স্বাধীন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এসব সংস্কার বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ একটি মৌলিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথে আমাদের সামনে বহু চ্যালেঞ্জ রয়েছে যা অন্যান্য এশীয় দেশের সঙ্গেও সম্পর্কিত। বিশ্বের আর্থিক বাজারের অস্থিরতা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, কূটনৈতিক টানাপোড়েন এবং বাণিজ্যিক বাধাগুলো এশিয়ার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুদের হার বৃদ্ধি এবং ঋণের সুদ পরিশোধের উচ্চ ব্যয় আমাদের মহাদেশের ঋণ সংকটকে গভীরতর করছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ব ২০৩০ এজেন্ডার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও, অগ্রগতি হতাশাজনক। এখন পর্যন্ত মাত্র ২৪ শতাংশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জিত হয়েছে। উন্নয়নশীল এশীয় দেশগুলোকে বছরে ২ দশমিক ৫ থেকে ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত এসডিজি অর্থায়নের ঘাটতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ অতীতে দুর্নীতি এবং অবৈধ অর্থপাচারের শিকার হয়েছে। এ ধরনের দুর্নীতির ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলো প্রতি বছর প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার হারায়, যা তাদের প্রাপ্ত বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তার (ওডিএ) তুলনায় অনেক বেশি। এশিয়াকে অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করে একটি বহুপাক্ষিক সম্পদ পুনরুদ্ধার ও প্রত্যাবর্তন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা ক্রমশ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর জন্য জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ এ সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। খাদ্য সরবরাহ চেইনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বিনিয়োগ অপরিহার্য।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমাদের সভ্যতা ঝুঁকিতে রয়েছে কারণ আমরা আত্মবিধ্বংসী অর্থনৈতিক মূল্যবোধ গ্রহণ করে চলেছি। বর্তমান অর্থনৈতিক মডেল অসীম ভোগবাদ এবং পরিবেশগত অবক্ষয়কে উৎসাহিত করে। আমাদের অবশ্যই একটি টেকসই অর্থনৈতিক মডেলের দিকে এগিয়ে যেতে হবে, যেখানে মানুষের এবং পৃথিবীর কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, জলবায়ু সংকট মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি। জলবায়ু দুর্যোগজনিত আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও নতুন উদ্যোগকে শক্তিশালী করতে হবে।

লিখিত বক্তব্যের প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এশিয়ার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি তার অন্যতম শক্তি। ইসলাম, কনফুসিয়ানিজম, বৌদ্ধ এবং হিন্দু দর্শন বিশ্ব চিন্তাধারাকে সমৃদ্ধ করেছে। আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রণ এশিয়াকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এশিয়ার তরুণ জনসংখ্যা বিশাল সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। তাদের উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে নারী নেতৃত্বের পরিসর বিস্তৃত করতে হবে।

তিনি বলেন, বিশ্বের চলমান সংকট- ফিলিস্তিনের গণহত্যা, ইউক্রেন যুদ্ধ, মিয়ানমারের সংকটও এশিয়ার জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ৭ বছর ধরে বাংলাদেশ ১ দশমিক ২ মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু এটি দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। এশিয়ার দেশগুলোকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, পরিবর্তিত বিশ্বে এশিয়ার ভবিষ্যৎ অভিন্ন। আমাদের চারটি খাতে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। খাতগুলো হলো:

আর্থিক সহযোগিতা: টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।
বাণিজ্য সহযোগিতা: এশিয়াকে আরও সমন্বিত বানিজ্য অঞ্চলে রূপান্তর করতে হবে।
খাদ্য ও কৃষি সহযোগিতা: প্রযুক্তিনির্ভর, টেকসই কৃষি উন্নয়ন করতে হবে
প্রযুক্তি সহযোগিতা: যৌথ উদ্ভাবন ও জ্ঞান বিনিময় বাড়াতে হবে।

এছাড়া শূন্য কার্বন নির্গমন, শূন্য সম্পদ কুক্ষিগতকরণ এবং শূন্য বেকারত্ব- এ তিনটি লক্ষ্য পূরণ করার লক্ষ্যে তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বর্তমানে চীনে অবস্থান করছেন প্রধান উপদেষ্টা। সফরের দ্বিতীয় দিনে তিনি আজ বোয়াও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছেন।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য পরিবর্তিত বিশ্বে এশিয়া: এক অভিন্ন ভবিষ্যতের পথে।

একই রকম সংবাদ সমূহ

২০২৮ সাল পর্যন্ত চীনে শুল্ক-কোটামুক্ত বাজার সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ডিং জুয়েশিয়াং বলেছেন, চীন ২০২৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশি পণ্যের জন্যবিস্তারিত পড়ুন

কৃষি ব্যাংকে রেমিট্যান্স এনে সারা দেশে তৃতীয় কলারোয়ার আসমা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কলারোয়া শাখার উদ্যোগে রেমিট্যান্স উৎসব ২০২৫ অনুষ্ঠিতবিস্তারিত পড়ুন

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে যে বার্তা দিলেন ট্রাম্প

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বাংলাদেশের জনগণেরবিস্তারিত পড়ুন

  • সম্পর্ক আরও গভীর করবে চীন ও বাংলাদেশ
  • গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বান কি মুনের সমর্থন চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
  • যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের ‘র’ এর ওপর নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ, ক্ষুব্ধ দিল্লি
  • ভারতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি: মার্কিন কমিশন
  • ড. ইউনূসের সঙ্গে এফএও মহাপরিচালক কু ডংইয়ের সাক্ষাৎ
  • বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে ভারতের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
  • কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে স্বাধীনতা দিবস পালিত
  • ভারতের স্থলবন্দরে হেনস্তার শিকার বাংলাদেশি, পাঠানো হলো ফেরত
  • ভালো খেলেও ভারতের বিপক্ষে ড্র হামজা চৌধুরীর বাংলাদেশের
  • মোদি–ইউনূস বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ বিবেচনাধীন: জয়শঙ্কর
  • ‘হাসিনাবিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে জানলেও হস্তক্ষেপ করতে পারেনি ভারত’ : দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন