জার্মানিকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড
বিশ্বকাপ কিংবা ইউরো- বড় আসরে যতবারই জার্মানির মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ড, প্রতিবারই পরাজয় হয়েছে সঙ্গী। ২৫ বছর আগে, ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ডের বর্তমান কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের টাইব্রেকারে পেনাল্টি শট মিসের কারণে নকআউটে হারতে হয়েছিল ইংল্যান্ডকে।
এবার আর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে দিল না হ্যারি কেইনরা। বরং, ইতিহাসটাই বদলে দিয়েছে তারা। জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোর্টার ফাইনালে জায়গা করে নিলো ইংল্যান্ড। একই সঙ্গে ইউরোর মঞ্চে এই প্রথম দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিতে হলো জার্মানিকে।
লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের হয়ে জয়সূচক গোল দুটি করেন রাহিম স্টার্লিং এবং হ্যারি কেইন। ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে রাহিম স্টার্লিং এবং ৮৬ মিনিটে হ্যারি কেইন গোল করে জয় এনে দেন ইংলিশদের।
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনাল, ফাইনাল অনেক বড় ম্যাচ হতে পারে; কিন্তু এই ম্যাচের চেয়ে বড় এবং আকর্ষণীয় হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, শেষ ষোলোতেই মুখোমুখি হলো শিরোপার অন্যতম দুই প্রত্যাশী ইংল্যান্ড এবং জার্মানি। এই দুই হেভিওয়েটের লড়াই ছিল চোখে দেখার মত।
অন্তত ম্যাচের প্রথমার্ধ দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কেউ কাউকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দিতে নারাজ। আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে খেলা বেশ উপভোগ্য হলেও, ফুটবলের আসল যে মজা, সেটাই পায়নি দর্শক-সমর্থকরা। কারণ, গোলই যে হয়নি প্রথমার্ধে! ৪৫ মিনিটের খেলা শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থায়।
কিন্তু প্রথমার্ধের পরিস্থিতিকে দ্বিতীয়ার্ধে স্থায়ী হতে দিল না ইংলিশরা। সম্মিলিত আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দিয়ে ৭৫তম মিনিটে গোল আদায় করে নেয় ইংল্যান্ড। লুক শ’র বাড়িয়ে ক্রসে পা লাগিয়ে জার্মানির জালে বল জড়িয়ে দেন রাহিম স্টার্লিং। টুর্নামেন্টে এটা স্টার্লিংয়ের তৃতীয় গোল। আবার কথায় বলে রাহিম গোল করলে হারে না ইংল্যান্ড। সেটা আবারও প্রমাণ হলো আজ।
এরপর ৮৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন হ্যারি কেইন। জ্যাক গ্রিলিশের বাড়িয়ে দেয়া ক্রস অসাধারণ দক্ষতায় হেড করেন কেইন। সেটিই ম্যানুয়েল ন্যুয়ারকে ফাঁকি দিয়ে জড়িয়ে যায় জার্মানির জালে।
করোনার মধ্যেও স্টেডিয়ামে দর্শক প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সমর্থকদের মুহুর্মুহু করতালি আর চিৎকারে যেন একটু উজ্জীবিতই হয়ে উঠেছিল ইংলিশ ফুটবলাররা। কিন্তু সেই উজ্জীবনি ফল এনে দিল না ইংলিশদের।
প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে, যোগ করা সময়ে ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইন যে সুযোগ পেয়েছিলেন, সেটা পুরো ম্যাচে আর পাবেন কি না সন্দেহ। কিন্তু সেই সুবর্ণ সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলেন কেইন। জার্মান ডিফেন্সের তড়িৎ তৎপরতায় অবশ্য কেইনের কিছু করারও ছিল না।
প্রথম থেকেই আক্রমণে ঝড় তোলে ঘরের মাঠে খেলা ইংল্যান্ড। ১৬ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত তারা। সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন স্টারলিং। মাঝখান থেকে উঠে এসে সরাসরি গোলে শট করেন তিনি। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে বল বাইরে বের করে দেন নয়্যার।
কর্নার থেকেও দলকে এগিয়ে দিতে পারতেন হ্যারি ম্যাগুইরে। ফাঁকায় সুযোগ পেয়েও গোলে জোরাল হেড করতে পারেননি তিনি। তবে ৩২ মিনিটে সুযোগ পায় জার্মানি। কাই হাভাৎসের থ্রু থেকে টিমো ওয়ার্নার বল ধরলে সামনে কোনও ডিফেন্ডার ছিলেন না। এগিয়ে এসে কোন ছোট করে তাঁর শট বাঁচান পিকফোর্ড।
প্রথমার্ধের শেষদিকে ফের সুযোগ পায় ইংল্যান্ড স্টারলিং ফের বল নিয়ে ঢুকতে গেলে তিন ডিফেন্ডার বাধা দেন। কোনও ভাবে বল তাদের গায়ে লেগে হ্যারি কেনের কাছে যায়। তবে কেনের প্রথম টাচ ভালো না হওয়ায় ম্যাট হ্যামেলস বল বাইরে বের করে দেন। ৮২ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন টমাস মুলার। তার শট অল্পের জন্য বাইরে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আক্রমণ করতে থাকে জার্মানি। কাই হাভাৎসের বাঁ পায়ের ভলি দারুণ দক্ষতায় বাঁচান পিকফোর্ড। বারবার আক্রমণ করলেও গোল করতে পারেনি জার্মানি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)