বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের জমি নাশকতা মামলার আসামীদের দখলে!
সদরের শিবপুর ইউনিয়নের খানপুর বাজারের দক্ষিণ পাশে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের নামে দানকৃত জমি প্রাচীর দিয়ে দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মামুন হত্যা মামলাসহ একাধিক নাশকতা মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে। ফলে ওই জমি দখলমুক্ত করতে আ’লীগনেতাসহ বিভিন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের সদস্যরা। এদিকে আ’লীগ ক্ষমতায় থাকা স্বত্তে¡ও জামায়াতের ক্যাডারদের দ্বারা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের জমি দখল হওয়ায় চরম হতাশা ও আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় আ’লীগ নেতাসহ মুক্তিযোদ্ধারা।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী শিবপুর ইউনিয়ন আ’লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলামের মধ্যস্ততায় খানপুর গ্রামের মৃত মোঃ আলীর ছেলে শওকাত আলী ও সাহেব আলী খানপুর মৌজার সাবেক ২৮৩৭/ হাল ৩৪৩৮ দাগে ৪ গন্ডা জমি ১৫০৩ নং দলিলে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের নামে দান করেন। এরপর ২০১৪ সালে সেই জমি দখল করে নেন খানপুর এলাকার শাকর আলীর ছেলে জামায়াতের ক্যাডার জাফর, নিছারের ছেলে একাধিক নাশকতা মামলার আসামী মুকুল, শামছুরের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মামুনহত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামী আনিসুর। কিন্তু দেশের অবস্থা স্বাভাবিক হলে সেই জমি আবারও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের অধীনে চলে আসে। সেই থেকে ওই জমি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের দখলে ছিল। তবে এই বছরের নভেম্বরে ইউপি নির্বাচনের সুযোগে ওই জমিতে সীমানা প্রাচীর দিয়ে আবারও দখল করে নেন জামায়াতের ক্যাডার জাফর, নাশকতা মামলার আসামী মুকুল, একাধিক নাশকতা মামলার আসামী আনিসুর। ভোটের পর পাচিল তুলে দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের জমি কেন দখল করা হলো জানতে চাইলে জাফর, মুকুল, আনিসুর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতিসহ সদস্যদের মামলাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন অব্যাহত রেখেছে।
খানপুর ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আহারুল ইসলাম বলেন, ২০১৩ সাল থেকে ওই দাগের ৪ গন্ডা জমি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের নামে আছে। ওখানে একটি সাইনবোর্ডও ছিল। কিন্তু ক্রিমিনাল জাফরের নেতৃত্বে সেই জমি পাচিল দিয়ে দখল করে নেওয়া হয়েছে। আমি চাই, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের জমি দখলমুক্ত হোক এবং ওখানে একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত হোক।
খানপুর ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, নির্বাচনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জাফরের নেতৃত্বে জামায়াতের ক্যাডাররা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের নামে দানকৃত জমি পাচিল দিয়ে দখল করে নেয়। এরপর আমরা প্রতিবাদ করলে জাফর মামলাসহ বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান শুরু করে। আমরা পাচিলের কিছু অংশ ভেঙে দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়ায় গত শনিবার ওই জামায়াত ক্যাডারদের যোগসাজসে জাফর আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে সংবাদ পরিবেশন করে। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের নামে ওই জমি কোন জামায়াতের ক্যাডার দখল করে নেবে এটা আমিসহ কেউ মেনে নেবে না। আমি বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং আমার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় উপস্থাপন করার কারণে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জাফর বলেন, এই দাগে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের নামে জমি আছে তবে এখানে না। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের জমিতে অন্য লোক দোকান করেছে। আমি আমার ক্রয়কৃত জমিতে প্রাচীর দিয়েছি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)