বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
রহমতউল্লাহ আশিক: মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষা ব্যবহারকারীদের গৌরবোজ্জ্বল মাতৃভাষা আন্দোলনের আজ ৭২ বছর পূর্ণ হলো। ১৯৫২ সালের এইদিনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর তৎকালীন পুলিশ নির্মমভাবে গুলিবর্ষণ করে।
এতে শহীদ হন সালাম, বরকত, রফিক, শফিউর, জব্বারসহ অনেকেই। তাই দিনটিকে শহিদ দিবস বলা হয়ে থাকে। ২০১০ সালে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিকে সারাবিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
একুশের মহান শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে সুর্যোদয়ের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অর্ধনমিত রাখা হয়। এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহার নেতৃত্বে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরের পূর্ব দিক থেকে যাত্রা শুরু করে অস্থায়ী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়। পরে শহিদদের শ্রদ্বা জানাতে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে শুরু হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্ব।
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রভাষক তানজিম নাসরিন রেজার সঞ্চালনায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. হাসিবুল আলম প্রধান।
ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, আন্দোলনের সময় ও পরবর্তী সময়ের আলোচনা করে অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, ভাষা ও জাতি পরস্পর সম্পর্কিত। পৃথিবীতে বাঙালিই একমাত্র জাতি যারা মাতৃভাষায় কথা বলার জন্য রক্ত ঝরিয়েছিলেন। বাংলা ভাষা রক্ষায় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। এ জন্য বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার গৌরবময় ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে হবে।
তাদের মধ্যে বাঙালি জাতিসত্ত্বাকে জাগ্রত করতে হবে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতার দেখানো পথে চলতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরন করে সাম্প্রদায়িকতা বর্জন করে অসাম্প্রদায়িক ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের প্রধান মাইল ফলক হিসেবে গণ্য করা হয় একুশে ফেব্রুয়ারিকে। ১৯৫২ সালে মাতৃভাষার অধিকার আদায়ে প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন অনেক ছাত্র তরুণ। অনেক বাঁধা বিপত্তি পার করে ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ভাষা শহিদ দিবস একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
অনুষ্ঠানে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. ফয়জার রহমান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মো. হাবিবুল্লাহ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে মুখ্য আলোচককে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, কো-অর্ডিনেটর, রেজিস্ট্রারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)