যশোর-সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় ভিন দেশি, ভিন্নভাষী পাগলের আনাগোনা


সম্প্রতি যশোর ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় বহু সংখ্যায় নানান পাগলের দেখা মিলছে। বাহ্যিক বেশভুশার ভিন্নতার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ওই সকল পাগলের অনেকেরই ভাষা ভিন্ন। বাংলা নয়, রবং হিন্দি ভাষায় কথা বলতে শোনা যাচ্ছে ওই সকল পাগলদের। এমনকি তাদের অনেকেই ভারতীয় গুজরাটি, তামিল ভাষাতেও কথা বলছেন, তবে কোন ভাবেই বাংলাতে নয়। স্থানীয়রা বলছেন, এসকল পাগল সব ভারতীয়।
মানসিক বিকারগ্রস্থ কিংবা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি এই সকল নারী ও পুরুষদের দেখতে পাওয়া যাচ্ছে সাতক্ষীরার ভোমরা থেকে যশোরের বেনাপোল বন্দর এলাকাসহ এর আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় গত কয়েক মাস ও সম্প্রতি যশোর এবং সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নারী ও পুরুষ এই সকল পাগলকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে রাস্তার ধারে, দোকানপাটের পাশে কিংবা বিভিন্ন স্থানে। শুধু পোশাক-পরিচ্ছদ নয় বাহ্যিক বেশভুশা দেখলেও বোঝা যাচ্ছে ওই সকল পাগল বাংলাদেশি বা বাঙালি নয়। কারণ তাদের অনেকেই অনরগল কথা বলছেন হিন্দি ও ভিন্ন ভাষায়। বাংলায় কিছু জিজ্ঞাসা করলেও তারা বুঝতে পারছে না কিংবা নূন্যতম বাংলা বলতে পারছে না। আবার অনেকের গলায়, হাতে, পায়ে, কপালে ভারতীয় বিভিন্ন রাজ্যের সুনির্দিষ্ট প্রতীকী অলংকারও শোভা পাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগি কলারোয়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মঞ্জুরুজ্জামান বলেন, ‘আমি বেনাপোল যাচ্ছিলাম। পথে বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য পাগল ব্যক্তিদের দেখতে পেলাম। গ্রাম্য রাস্তা দিয়ে জামতলা থেকে শার্শা পর্যন্ত যেতে যেতে কমপক্ষে ৪/৫জন নারী ও পুরুষ পাগল দেখলাম। বেনাপোলে কয়েকঘন্টা অবস্থানকালীন সময়ে বেনাপোলের কয়েকটি স্থানে ১০/১২জন পাগল ব্যক্তি দেখলাম। এরা সকলেই ভারতীয়। বাংলা বলতে পারছে না। সবাই হিন্দিতে কথা বলছে। দেখে মনে হলো পাগলের মেলা।’
মঞ্জুরুজ্জামান আরো বলেন, ‘সম্প্রতি কলারোয়াতেও এই ধরণের একাধিক পাগল দেখা যাচ্ছে। যাদের এর আগে কখনো এ অঞ্চলে দেখা যায়নি। বাহ্যিক বেশভুশা দেশি পাগল কিছুটা হলেও চেনা গেলেও এসকল পাগলদের অপরিচিতই মনে হচ্ছে। কেননা দেশি পাগল একদিন না একদিন, কোন না কোন স্থানে দেখা যায়। কিন্তু এরা নতুন, এর আগে কোনদিন দেখা মেলেনি। ভিনদেশি ও ভিন্নভাষী ওই সকল পাগল এমন আচরণ করছে যা আমাদের কাছে অপরিচিত ও অচেনা। তাদের কথাবার্তা ও আচরণও আক্রমনাত্মক, রুখে রুখে আসছে।’
আরেক ভুক্তভোগি ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী শেখ সেলিম হোসেন বলেন, ‘হিন্দিভাষী ভারতীয় এক মহিলা পাগলকে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে গতকাল সন্ধ্যার পর রুক্ষ আচরণ ও উচ্চস্বরে হিন্দি ভাষায় কথা বলতে দেখেছি। হিন্দি ভাষায় গালিগালাজও করছিলো। আমরা অনেকেই তার সাথে বাংলায় কথা বললেও সে একটি বারও বাংলায় কথা বলেনি। সম্ভবত সে বাংলা বুঝতে পারিনি। আজ তাকে কলারোয়া কাঁচাবাজারে দেখলাম। তার দিকে তাকাতেই রুখে আসার ভাব তার। খুব জ্বালাচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ওই মহিলা পাগলের হাতে অসংখ্য চুড়ি দেখে মনে হচ্ছে সে ভারতীয় গুজরাট কিংবা তামিল রাজ্যের হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে এসকল নারী-পুরুষ পাগলদের সীমান্ত পার করে বাংলাদেশি ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।’
চায়ের দোকানদার আব্দুর রহিম বলেন, ‘ভারতীয় হিন্দিভাষী এক মহিলা পাগলকে আমার দোকানের পাশে বসে অনেকক্ষণ কাঁদতে দেখলাম। আমি তাকে কলা-পাউরুটি খেতে দিলে সে হাত বাড়িয়ে নিয়ে খেলো। কিছুক্ষণ পর কাগজ কুড়াচ্ছে আর হিন্দি ভাষায় উচ্চস্বরে গালিগালাজ করে অন্যদের দিকে তেড়ে তেড়ে যাচ্ছে।’
এদিকে, প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই বলছেন, ‘ইন্ডিয়ান পাগলদের কৌশলে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। এরা সকলেই হিন্দিভাষী কিংবা ভারতীয় নানান রাজ্যের স্থানীয় ভাষায় কথা বলছে। মধ্যেপড়ে আমরা বাংলাদেশিরা ভুগছি।’
এসকল পাগল বিদেশি কোন সংস্থার লোকজন কিনা তা নিয়েও সন্দিহান অনেকে।
বিষয়টি নিরসনে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সচেতন মহল।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
