যাত্রী পারাপার বন্ধ! তবু ফেরিতে উপচেপড়া ভিড়


কঠোর লকডাউনের তৃতীয় দিনেও ফেরিতে থেমে নেই যাত্রী পারাপার। যাত্রীবাহী পরিবহন পারাপার বন্ধ থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে ভেঙে ভেঙে ছোট যানবাহনে ঘাটে আসা যাত্রীরা অনেকটা নির্বিঘ্নেই ফেরিতে উঠতে পারছেন।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার নামে পরিচিত দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ঢাকাফেরত ও ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। বেড়েছে ছোট যানবাহনের চাপও।
রোববার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নদী পার হয়ে ঢাকা থেকে যাত্রীরা তাদের বাড়ি ফিরছে এবং ঢাকামুখী যাত্রীরা তাদের কর্মস্থলে ফিরছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিকাল নাগাদ আরও যাত্রীর চাপ বাড়ে।
ঢাকাফেরত যাত্রী সজল বলেন, ঢাকায় ঈদ করে আজকে বাড়ি ফিরছি। বাড়িতে গিয়ে প্রিয়জনদের সঙ্গে লকডাউনের এই কয়েক দিন থাকব।
ঢাকাগামী যাত্রী রানা বলেন, ভোরেই বাড়ি থেকে বের হয়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এসে ৩ ঘণ্টা বসে অপেক্ষা করছি। ৩ ঘণ্টা পর একটি ফেরি ফিরেছে। এ ছাড়া ফেরি পুরোপুরি না ভরা পর্যন্ত নদী পাড়ি দিচ্ছে না বলে জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, এই রুটে ছোট-বড় মিলে ৯টি ফেরি চলাচল করছে।
শুধু জরুরি গাড়ি পারাপারের জন্য ফেরিগুলো চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, শিবচরের বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরিতেও যাত্রীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে।
ঈদের তৃতীয় দিনে রাজধানীমুখী সাধারণ যাত্রীদের ফেরি পারাপার হতে দেখা গেছে। তবে ফেরিতে যাত্রীবাহী কোনো বাস, মাইক্রোবাস পার হতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রাইভেটকার, অ্যাম্বুলেন্সসহ পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান পার হচ্ছে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হলে গণপরিবহণের সঙ্গে নৌরুটে বন্ধ রাখা হয় লঞ্চ চলাচল। ঈদের দ্বিতীয় দিন গত ২২ জুলাই দিনরাত নৌরুট দিয়ে যাত্রীরা রাজধানী ঢাকায় পৌঁছেছেন।
শুক্রবার সকালে আগের রাতে আটকে থাকা শতাধিক ছোট যানবাহন পার করা হয়। তবে বিভিন্ন যানবাহনে ভেঙে ভেঙে বাংলাবাজার ঘাটে আসা সাধারণ যাত্রীরা অনায়াসেই ফেরিতে পার হতে পারছে।
রোববার সকাল থেকেও নৌরুটে ফেরিতে ছিল যাত্রীদের ভিড়। সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি মোটরসাইকেল আরোহীদের পদ্মা পার হতে দেখা গেছে।
ঢাকাগামী যাত্রী শাহীন জানান, অফিস খোলা রয়েছে। তাই ঢাকা যাচ্ছি। বরিশাল থেকে ভেঙে ভেঙে বাংলাবাজার ঘাটে এসেছি। লকডাউনে দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ। মাহিন্দ্রা (থ্রি-হুইলার) গাড়িতে করে ঘাটে এসেছি। ফেরিতে ২৫ টাকার টিকিট কেটে উঠেছি। কোনো সমস্যা হয়নি।
আরেক যাত্রী বলেন, জরুরি দরকারে ঢাকা যাচ্ছি। পথে পুলিশ জিজ্ঞেস করেছিল। আমি জরুরি দরকারের কথা জানাতে ছেড়ে দিয়েছে। ফেরিতে উঠতে সমস্যা হয়নি।
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটসূত্রে জানা গেছে, রোববার নৌরুটে রো রো ফেরিসহ মোট সাতটি ফেরি চলাচল করছে। নৌরুটে যাত্রীবাহী সব পরিবহণ পারাপার বন্ধ আছে। অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লাশবাহী গাড়ি এবং জরুরি দরকারে যাওয়া ব্যক্তিগত যানবাহন পার করা হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্সে রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনরা পার হতে পারছেন।
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, নৌরুটে সকাল থেকে সাতটি ফেরি চলছে। পণ্যবাহী ট্রাকের পাশাপাশি জরুরি যানবাহন পার করা হচ্ছে ফেরিতে। যাত্রীবাহী কোনো যানবাহন পার হতে দেওয়া হচ্ছে না।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
