রাজধানীর সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বৃষ্টি মাথায় নিয়েই লকডাউনে দায়িত্বপালন
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।
সাপ্তাহিক ছুটি ও বৃষ্টির কারণে শুক্রবার (২ জুলাই) সকালে রাজধানীর সড়কগুলো বৃহস্পতিবারের তুলনায় বেশ ফাঁকা ছিল।
মিরপুর এলাকার বিভিন্ন সড়কে আগের দিনের তুলনায় ব্যক্তিগত গাড়ির উপস্থিতি ছিল কম, তবে রিকশা ছিল প্রচুর। সড়কগুলোতে দায়িত্বপালন করতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। এদিকে, সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে সাধারণ জনগণের উপস্থিতি খুবই কম থাকলেও তারা চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
চেকপোস্টে দায়িত্ব পালনের সময় বৃষ্টিতে ভিজেই পুলিশ সদস্যরা বাইরে বের হওয়া মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। কোনো কোনো চেকপোস্টে বৃষ্টি থেকে বাঁচার উপায় না থাকায় খানিকটা দূরে সুবিধাজনক অবস্থানে দাঁড়িয়েই দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে তাদের।
মিরপুর ১০ নম্বর শাহ আলী মার্কেটের পেছনে দোকান খোলা রাখায় সকালে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আদালত তাদের বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তি দেয়া দিয়েছেন জানান বলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ফরহাদ জানিয়েছেন।
এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি সড়কগুলোতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের পেট্রোলিং করতে দেখা গেছে।
ফরহাদ বলেন, ‘মিরপুর ১০ নম্বরে দুটি চেকপোস্টের কার্যক্রম চলমান। আমরা বের হওয়ার কারণ জানতে চাচ্ছি। যৌক্তিক ও সন্তোষজনক কারণ না দেখাতে পারলে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এদিকে, রাস্তায় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের উপস্থিতিও ছিল কম।
মিরপুর ১৩, ২ ও ১ নম্বরেও পুলিশ সদস্যরা বৃষ্টিতে ভিজেই দায়িত্ব পালন করেছেন। লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে পুলিশ ছিল যথেষ্ট নমনীয়।
মিরপুর ১০ নম্বর হয়ে গাড়ি নিয়ে করোনা টিকা নিতে যাচ্ছিলেন প্রবাসী শ্রমিক রায়হান। পুলিশের চেকপোস্টে
গাড়ি থামিয়ে বের হবার কারণ জানতে চাইলে তিনি কুর্মিটোলা হাসপাতালে করোনা টিকা নিতে যাচ্ছেন বলে কাগজপত্র দেখান। তখন গাড়ির চালক ও রায়হান ছাড়া গাড়িতে থাকা অন্যদের ফেরত পাঠায় পুলিশ।
মিরপুর এলাকার লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে, আবার আজ শুক্রবার তাই বাইরে মানুষের উপস্থিতি কম। তবুও পুলিশ এবং অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা কড়া অবস্থানে আছে।’
তিনি বলেন, মিরপুর জোনে মোট ৩৫টি নিয়মিত চেকপোস্ট রয়েছে। অযাচিত চলাচল বন্ধে পুলিশ কাজ করছে।
তবে পুলিশের কয়েকজন বলছেন, গতকাল লকডাউনের প্রথম দিনে কঠোর অবস্থানে ছিল পুলিশ। আজ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাস্তায় বের হওয়া মানুষদের সচেতন করার চেষ্টা করছেন তারা।
সকাল থেকে মানুষজন কম থাকলেও বিকেলের দিকে মানুষ এবং গাড়ির সংখ্যা বাড়তে পারে পুলিশ বলছে।
চলমান লকডাউন অমান্য করে প্রথম দিন অযৌক্তিক কারণে বাইরে বের হওয়ার অভিযোগে রাজধানীতে পুলিশের আটটি বিভাগ অভিযান পরিচালনা করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চালানো এসব অভিযানে ৫৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আরও জানানো হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আটটি বিভাগের ৫১টি থানা এলাকায় বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করেছে।
এছাড়া মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২১২ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে ৩৯১ জনকে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)