শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

পর্ব-৪

রামাদান ও যাকাত

” রামাদান ও যাকাত ” -পর্ব-৪
——————
” ঈমান ও সালাতের পরে যাকাত ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ |অনেক ইবাদতই কুরআন কারীমে মাত্র’ ২/৪ ‘বার উল্লিখিত হয়েছে, যেমন রোযা, হজ্ব ইত্যাদি |
আবার কিছু ইবাদত অনেক বেশী বার উল্লেখ করা হয়েছে | কুরআনে একবার বললেই ফরয হয়ে যায় | বারবার বলার অর্থ গুরুত্ব বুঝানো ৷ সালাতের পরে সবচেয়ে বেশী যাকাতের কথা কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে | আমরা সাধারণত দীনের সবচেয়ে বড় কাজ বুঝাতে বলি ” নামাজ-রোযা “, কিন্তু কুরআনে কোথাও” নামাজ-রোযা ” বলা হয় নি ,সব সময় বলা হয়েছে ” নামায-যাকাত ” | রোযা হলো যাকাতের পরে | যাকাত না দেওয়া কাফিরদের বৈশিষ্ট্য ও জাহান্নামের শাস্তির অন্যতম কারন |

* আল্লাহ বলেন:-

وَوَيْلٌ لِّلْمُشْرِكِيْنَ الَّذِيْنَ لَا يُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَهُمْ بِالْاٰخِرَةِ هُمْ

” ধ্বংস মুশরিকদের জন্য ,যারা যাকাত প্রদান করেনা,আর যারা আখেরাতে অবিশ্বাস করে |”
সূরা-ফুসসিলাত আয়াত: ৬-৭ |
* And woe to those who join gods with Allah- Those who pay not Zakat and who even deny the Hereafter |
————————————
” অপরাধীদের সম্পর্কে —— ,عَنِ الْمُجْرِمِيْنَۙ
———————————–
” তোমাদেরকে কিসে সাকার-এ নিক্ষেপ করিয়াছে?’

مَا سَلَـكَكُمْ فِىْ سَقَرَ
————————————
” উহারা বলিবে, আমরা মুসল্লিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না,

قَالُوْا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّيْنَ
———————————–
আর আমরা দরিদ্রগণকে খাওয়াতাম না |

وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِيْنَۙ
সূরা-আল মুদ্দাসসির আয়াত ৪২-৪৩ |

* And ( ask) of the sinners- What led you into Hell- Fire ?- They will say :” We were not of those who prayed ” – Nor were we of those who fed the indigent |
———————————-

*” আমরা মনে করি, বৈধ-অবৈধভাবে মাল বৃদ্ধি করলে এবং সঞ্চয় করলেই সম্পদশালী হলাম | কিন্তু আল্লাহ বলেন উল্টো কথা | ব্যয় করলেই আল্লাহ বৃদ্ধি করেন । আপনি দুয়ে দুয়ে চার গুনছেন | কিন্তু কার জন্য গুণলেন ? আপনার জন্য না সন্তানদের জন্য ? আল্লাহ বরকত নষ্ট করে দিলে কিছুই থাকবে না | কিভাবে বরকত নষ্ট হবে তা আপনি বুঝতেও পারবেন না | আল্লাহ তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করেন না |

* আল্লাহ বলেন:

يَمْحَقُ اللّٰهُ الرِّبٰوا وَيُرْبِى الصَّدَقٰتِ‌ؕ وَاللّٰهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ اَثِيْمٍ

” আল্লাহ সুদের বৃদ্ধিকে ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন করেন আর !সাদাকাহ ! বা যাকাতকে বৃদ্ধি করেন | আল্লাহ পছন্দ করেন না কোন অবিশ্বাসী পাপীকে |”- সূরা-বাকারা:২৭৬ আয়াত |
** Allah wilt deprive usury of all blessing, but will give increase for deeds of charity : for He loveth not any ungrateful dinner. !
———————————
* আল্লাহ বলেন:

وَمَاۤ اٰتَيْتُمْ مِّنْ رِّبًا لِّيَرْبُوَا۟ فِىْۤ اَمْوَالِ النَّاسِ فَلَا يَرْبُوْا عِنْدَ اللّٰهِ‌ۚ وَمَاۤ اٰتَيْتُمْ مِّنْ زَكٰوةٍ تُرِيْدُوْنَ وَجْهَ اللّٰهِ فَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الْمُضْعِفُوْنَ

” এবং তোমরা মানুষের সম্পদ বৃদ্ধির জন্য যে বৃদ্ধি (সুদ) প্রদান কর তা আল্লাহর নিকট বৃদ্ধি পায় না | আর আল্লাহ র সন্তষ্টি অর্জনের জন্য তোমরা যে যাকাত প্রদান কর সেই যাকাতই হল বহুগুণ বৃদ্ধিকারী | -সূরা রূম:৩৯ আয়াত |
” That which you give in usury for increase through the property of ( other) people ,will have no increase with ‘ Allah ‘ but that which you give for charity, seeking the countenance of ! Allah ! ( Will increase) it is these who will get a recompense multiplied “|
———————————
“” হাদীস””

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُونُسَ النَّسَائِيُّ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ “* بْنُ إِسْحَاقَ، بِإِسْنَادِهِ بِهَذَا الْحَدِيثِ قَالَ مُسْلِمُ بْنُ شُعْبَةَ ‏.‏ قَالَ فِيهِ وَالشَّافِعُ الَّتِي فِي بَطْنِهَا الْوَلَدُ ‏.‏ قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَقَرَأْتُ فِي كِتَابِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَالِمٍ بِحِمْصَ عِنْدَ آلِ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ الْحِمْصِيِّ عَنِ الزُّبَيْدِيِّ قَالَ وَأَخْبَرَنِي يَحْيَى بْنُ جَابِرٍ عَنْ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُعَاوِيَةَ الْغَاضِرِيِّ – مِنْ غَاضِرَةِ قَيْسٍ – قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ ثَلاَثٌ مَنْ فَعَلَهُنَّ فَقَدْ طَعِمَ طَعْمَ الإِيمَانِ مَنْ عَبَدَ اللَّهَ وَحْدَهُ وَأَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَعْطَى زَكَاةَ مَالِهِ طَيِّبَةً بِهَا نَفْسُهُ رَافِدَةً عَلَيْهِ كُلَّ عَامٍ وَلاَ يُعْطِي الْهَرِمَةَ وَلاَ الدَّرِنَةَ وَلاَ الْمَرِيضَةَ وَلاَ الشَّرَطَ اللَّئِيمَةَ وَلَكِنْ مِنْ وَسَطِ أَمْوَالِكُمْ فَإِنَّ اللَّهَ لَمْ يَسْأَلْكُمْ خَيْرَهُ وَلَمْ يَأْمُرْكُمْ بِشَرِّهِ ‏”‏ ‏.‏

যাকারিয়্যাহ ইবনু ইসহাক্ব (রঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তার সানাদে উপরোক্ত হাদীস বর্ণিত। বর্ণনাকরীর মুসলিম ইবনু শু‘বাহ তার বর্ণনায় বলেন, শাফি’ বলা হয় গর্ভবতী বকরীকে।

গাদিরাহ ক্বায়িসের ‘আবদুল্লাহ ইবনু মু‘আবিয়াহ আল-গাদিরী সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি তিনটি কাজ করেছে সে ঈমানের স্বাদ পেয়েছে। (এক) যে এক আল্লাহ ‘ইবাদাত করে। (দুই) এ বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। (তিন) যে স্বতঃস্ফূর্ত মনে নিঃসঙ্কোচে প্রতি বছর তার মালের যাকাত দেয়। বৃদ্ধ বয়সের রোগগ্রস্থ, ত্রুটিপূর্ণ ও নিকৃষ্টি মাল যাকাত দেয় না, বরং মধ্যম মানের যাকাত দিয়ে থাকে। কেননা আল্লাহ তোমাদের উৎকৃষ্ট সম্পদ চান না এবং তোমাদের নিকৃষ্ট দেয়ারও নিদের্শ করেন না।

সহীহ।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৫৮২
———————————-
“”
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا بْنُ إِسْحَاقَ الْمَكِّيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ صَيْفِيِّ، عَنْ أَبِي مَعْبَدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ مُعَاذًا إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ ‏ “‏ إِنَّكَ تَأْتِي قَوْمًا أَهْلَ كِتَابٍ فَادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوكَ لِذَلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوكَ لِذَلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً فِي أَمْوَالِهِمْ تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ وَتُرَدُّ فِي فُقَرَائِهِمْ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوكَ لِذَلِكَ فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أَمْوَالِهِمْ وَاتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ فَإِنَّهَا لَيْسَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللَّهِ حِجَابٌ ‏”‏ ‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মূ‘আয (রাঃ) -কে ইয়ামানে প্রেরণকালে বললেন, তিমি এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে যাচ্ছো যারা আহলি কিতাব। তুমি (সর্বপ্রথম) তাদেরকে এ সাক্ষ্য দিতে আহবান করবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। এবং আমি (মুহাম্মাদ) আল্লাহ রসূল। তারা তোমার এ কথা মেনে নিলে তাদেরকে অবহিত করবে, আল্লাহ তাদের উপর তাদের মালের যাকাত প্রদান ফরয করেছেন, যা তাদের ধনীদের কাছ থেকে নেয়া হবে এবং তাদের গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হবে। যদি তারা তোমার এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদের উত্তম সম্পদগুলো গ্রহণ করা হতে বিরত থাকবে। আর মযলুমের বদদু‘আকে ভয় করবে। কেননা তার দু‘আ ও আল্লাহর মাঝে কোনো প্রতিবন্ধক নেই।

সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৫৮৪ |

——————————
“””
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ دَاوُدَ بْنِ سُفْيَانَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ مُوسَى أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سَعْدِ بْنِ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، حَدَّثَنِي خُبَيْبُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِيهِ، سُلَيْمَانَ عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، قَالَ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْمُرُنَا أَنْ نُخْرِجَ الصَّدَقَةَ مِنَ الَّذِي نُعِدُّ لِلْبَيْعِ ‏.

সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে বাণিজ্যিক পণ্যের যাকাত দিতে নির্দেশ করেছেন।

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৫৬২|

——————————

” তিনটি বিষয় আমি শপথ করে বলছি: যে ব্যক্তির
ইসলামে অংশ আছে আর যার ইসলামে কোন অংশ নেই দুজনকে আল্লাহ কখনোই সমান করবেন না | ইসলামের অংশ তিনটি : সালাত ,সিয়াম ও যাকাত |” -হাকীম, আল-মুসতাদরাক: ১/৬৭ | অালবানী সহীহুত তারগীব:১/৮৯,১৮১ | হাদীসটি সহীহ |
——————————-
“””
أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ مُسَاوِرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ شَابُورَ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ سَلَّامٍ، عَنْ أَخِيهِ زَيْدِ بْنِ سَلَّامٍ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ عَنْ جَدِّهِ أَبِي سَلَّامٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ غُنْمٍ، أَنَّ أَبَا مَالِكٍ الْأَشْعَرِيَّ، حَدَّثَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ شَطْرُ الْإِيمَانِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَأُ الْمِيزَانَ، وَالتَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ يَمْلَأُ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَالصَّلَاةُ نُورٌ، وَالزَّكَاةُ بُرْهَانٌ، وَالصَّبْرُ ضِيَاءٌ، وَالْقُرْآنُ حُجَّةٌ لَكَ أَوْ عَلَيْكَ»

আবূ মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: পূর্ণাংগ রূপে উযু করা ঈমানের অর্ধেক। আর আলহামদু লিল্লাহ্ মীযানকে পরিপূর্ণ করে ফেলবে, তাসবীহ্ এবং তাকবীর আসমানসমূহ এবং যমীনকে পরিপূর্ণ করে ফেলবে। সালাত হল নূর (আলো) আর যাকাত হল দলীল, ধৈর্য (সাওম) হল জ্যোতি এবং কুরআন হল তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে প্রমাণ

সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪৩৭ |

——————————-
“”
أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ بْنِ سَعِيدِ بْنِ كَثِيرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ شُعَيْبٍ، عَنْ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ «مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ مِنْ شَيْءٍ مِنَ الْأَشْيَاءِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، دُعِيَ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ يَا عَبْدَ اللَّهِ هَذَا خَيْرٌ لَكَ، وَلِلْجَنَّةِ أَبْوَابٌ، فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّلَاةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّلَاةِ، وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجِهَادِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الْجِهَادِ، وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّدَقَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّدَقَةِ، وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصِّيَامِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الرَّيَّانِ»، قَالَ أَبُو بَكْرٍ: هَلْ عَلَى مَنْ يُدْعَى مِنْ تِلْكَ الْأَبْوَابِ مِنْ ضَرُورَةٍ، فَهَلْ يُدْعَى مِنْهَا كُلِّهَا أَحَدٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «نَعَمْ، وَإِنِّي أَرْجُو أَنْ تَكُونَ مِنْهُمْ» يَعْنِي أَبَا بَكْرٍ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র রাস্তায় যে কোন জিনিসের এক জোড়া বস্তুও দান করে, তাকে জান্নাতের দরজাসমূহ হতে আহবান করা হবে : হে আল্লাহ্‌র বান্দা, এ (দরজা) তোমার জন্য উত্তম। (বস্তুত:) জান্নাতের অনেক দরজা আছে। যে সালাত আদায়কারী হবে তাকে সালাতের দরজা হতে ডাকা হবে, যে ব্যক্তি জিহাদকারী হবে তাকে জিহাদের দরজা হতে আহবান করা হবে। যে ব্যক্তি যাকাত প্রদানকারী হবে তাকে যাকাতের দরজা হতে আহবান করা হবে। যে ব্যক্তি সাওম পালনকারী হবে তাকে ‘রাইয়্যান’ (পরিতৃপ্তি) নামক দরজা হতে আহবান করা হবে। আবূ বকর (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! যাকে ঐসব দরজা দিয়ে আহবান করা হবে, তার তো কোন সংকটই নেই। তবে কাউকে কি প্রত্যেক দরজা দিয়েই আহবান করা হবে ? তিনি বললেন, হ্যাঁ এবং আমি আশা করি যে, তুমি তাদের মধ্য থেকেই হবে অর্থাৎ আবু বকর (রাঃ)।

সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪৩৯
হাদীসের মান: সহীহ |
——————————–
“””

أَخْبَرَنَا مُجَاهِدُ بْنُ مُوسَى، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ جَامِعِ بْنِ أَبِي رَاشِدٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ رَجُلٍ لَهُ مَالٌ لَا يُؤَدِّي حَقَّ مَالِهِ إِلَّا جُعِلَ لَهُ طَوْقًا فِي عُنُقِهِ، شُجَاعٌ أَقْرَعُ وَهُوَ يَفِرُّ مِنْهُ وَهُوَ يَتْبَعُهُ»، ثُمَّ قَرَأَ مِصْدَاقَهُ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ: (وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ هُوَ خَيْرًا لَهُمْ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَهُمْ سَيُطَوَّقُونَ مَا بَخِلُوا بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ) الْآيَةَ

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যে ব্যক্তির ধন সম্পদ রয়েছে অথচ সে তার সম্পদের ‘হক’ (যাকাত) প্রদান করছে না, সেগুলো দিয়ে তার গলায় দুর্দান্ত ও অতি বিষাক্ত সাপ রূপে বেড়ি দেওয়া হবে, সেই ব্যক্তি সর্প থেকে পলায়ন করতে থাকবে কিন্তু সর্প তার পশ্চাদ্ধাবন করতে থাকবে। এরপর তিনি কুরআন থেকে তার প্রমাণ পাঠ করলেন(আরবি)
(এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যা তাদের দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে, তাদের জন্য তা মঙ্গল, ইহা যেন তারা কিছুতেই মনে না করে। বরং ইহা তাদের জন্য অমঙ্গল। যাতে তারা কৃপণতা করে কিয়ামতে দিন তাই তাদের গলায় বেড়ি বানিয়ে দেয়া হবে। (৩: ১৮০)।

সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪৪১।
হাদীসের মান: সহীহ ৷
——————————–
“””
أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ يَحْيَى، ح وأَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ سُفْيَانَ، وَشُعْبَةَ، وَمَالِكٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَيْسَ فِيمَا دُونَ خَمْسَةِ أَوْسُقٍ صَدَقَةٌ، وَلَا فِيمَا دُونَ خَمْسِ ذَوْدٍ صَدَقَةٌ، وَلَا فِيمَا دُونَ خَمْسَةِ أَوَاقٍ صَدَقَةٌ»

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: পাঁচ ওয়াসাক (এক হাজার কেজি বা ১ টন)-এর কম মালে (শষ্যে) যাকাত ওয়াজিব হয় না। পাঁচ উটের কমেও যাকাত ওয়াজিব হয় না এবং পাঁচ ওকিয়া (দুই শত দিরহাম-সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা)-এর কমেও যাকাত ওয়াজিব হয় না।

সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪৪৫|
হাদীসের মান – সহীহ |
———————————-
“”
أَخْبَرَنَا الْفَضْلُ بْنُ سَهْلٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الَّذِي لَا يُؤَدِّي زَكَاةَ مَالِهِ يُخَيَّلُ إِلَيْهِ مَالُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُجَاعًا أَقْرَعَ لَهُ زَبِيبَتَانِ»، قَالَ: «فَيَلْتَزِمُهُ أَوْ يُطَوِّقُهُ»، قَالَ: ” يَقُولُ: أَنَا كَنْزُكَ، أَنَا كَنْزُكَ ”

ইব্‌ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার মালের যাকাত আদায় করে না কিয়ামতের দিন তার মাল তার কাছে এক বিষধর সাপের আকৃতিতে উপস্থিত করা হবে, যার চোখের উপর দুটি কালো (বিন্দু) থাকবে। রাবী বলেন, সে সাপ তাকে জড়িয়ে ধরবে অথবা গলায় বেড়ি রূপে পেঁচিয়ে ধরবে। রাবী বলেন, সে সাপ বলতে থাকবে যে, আমি তোমার ধন ভাণ্ডার, আমি তোমার ধন ভাণ্ডার।

সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪৮১|
——————————–

*” রাসূল (সা.) বলেছেন: তিন ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ
করবে তারা হলো : (১) সেচ্ছাচারী শাসক বা প্রশাসক ,(২) সম্পদশালী ব্যক্তি যে তার সম্পদে আল্লাহর যে অধিকার (যাকাত) তা প্রদান করে না এবং (৩) পাপাচারে লিপ্ত দরিদ্র ব্যক্তি |”-ইবনু হিব্বান, আস-সহীহ ১০/ ৫১৩ |অালবানী,সাহীহুত তারগীব ২/৬৬
——————————-
“”
وَ عَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ : شَهَادَةِ أَنْ لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ وَإقَامِ الصَّلاَةِ وَإيتَاءِ الزَّكَاةِ وَحَجِّ البَيْتِ وَصَوْمِ رَمَضَانَ متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “পাঁচটি ভিত্তির উপর দ্বীনে ইসলাম স্থাপিত। (১) এই সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সা.)তাঁর বান্দা ও রসূল। (২) নামায প্রতিষ্ঠা করা। (৩) যাকাত আদায় করা। (৪) বায়তুল্লাহর (কা’বা গৃহে)র হজ্জ করা। এবং (৫) রমযানের রোযা পালন করা।” (বুখারী ৮, মুসলিম ১২২)

হাদীস সম্ভার, হাদীস নং ৯০৭|
——————————
“”

وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ  أَنَّ أَعْرَابِياً أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا عَمِلْتُهُ دَخَلْتُ الجَنَّةَ قَالَ تَعْبُدُ اللهَ لاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئاً وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ وَتُؤتِي الزَّكَاةَ المَفْرُوضَةَ وَتَصُومُ رَمَضَانَ قَالَ : وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ أَزِيدُ عَلَى هَذَا فَلَمَّا وَلَّى قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى هَذَا متفقٌ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

এক বেদুঈন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট এসে নিবেদন করল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন এক আমলের কথা বলে দিন, যার উপর আমল করলে, আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব।’ তিনি বললেন, “আল্লাহর ইবাদত করবে ও তাঁর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার স্থির করবে না। নামায কায়েম করবে, ফরয যাকাত আদায় করবে ও রামাদানের রোযা পালন করবে।” সে বলল, ‘সেই মহান সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার জীবন আছে, আমি এর চেয়ে বেশী করব না।’ তারপর যখন সে লোকটা পিঠ ফিরে চলতে লাগল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “যে ব্যক্তি জান্নাতবাসীদের কোন লোক দেখতে আগ্রহী, সে যেন এই লোকটিকে দেখে।” (বুখারী ১২৯৭, মুসলিম ১১৬)

হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ৯১৩|

——————————

” আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেন সুদ গ্রহণকারী , সুদ প্রদানকারী, সুদের লেখক,সাক্ষীদ্বয়- যদি তা জেনে শুনে করে, সৌন্দর্যের জন্য যে নারী নিজের দেহে উল্কি কাটে বা অন্যের দেহে উল্কি কেটে দেয়, যাকাত প্রদানে যে ব্যক্তি টালবাহানা করে বিরত থাকে এবং হিজরত করার পরে আবার যে ব্যক্তি বেদুইন (যাযাবর) জীবনে ফিরে যায় তারা সকলেই কেয়ামতের দিন রাসুল (সা.) এর জবানিতে অভিশপ্ত মালা’উন |” -আহমদ, আল-মুসনাদ-১/৪০৯, ৪৩০,৪৬৪ |
——————————-
“” যারা যাকাত না দিয়ে সম্পদ জমা করে রাখে তাদের বিষয়ে আল্লাহ বলেন :

وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بِمَاۤ اٰتٰٮهُمُ اللّٰهُ مِنْ فَضْلِهٖ هُوَ خَيْـرًا لَّهُمْ‌ؕ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَّهُمْ‌ؕ سَيُطَوَّقُوْنَ مَا بَخِلُوْا بِهٖ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ ‌ؕ
.
আল্লাহ অনুগ্রহ করে যে সম্পদ দান করেছেন সেই সম্পদ নিয়ে যারা কৃপণতা করে, তারা যেন কখনই মনে না করে যে, তাদের এই সম্পাদ তাদের জন্য কল্যাণবহ বা উপকারি, বরং তা তাদের জন্য ক্ষতিকর | তাদের কৃপণতা করে সঞ্চিত সম্পদ কিয়ামতের দিন তাদের গলার বেড়ী হবে |” সূরা আল ইমরান আয়াত: ১৮০ |

—————————–

“” হাদীসের আলোকে জানা যায় যে, কিছু কঠিন পাপ আছে যেগুলির শাস্তি শুধু আখেরাতেই নয় দুনিয়াতে ভোগ করতে হয় | বিশেষত যে পাপগুলি মানুষের অধিকারের সাথে জড়িত এবং যে পাপের ফলে অন্য মানুষ কষ্ট পায় বা সমাজের ক্ষতি হয় | এরূপ পাপ যদি সমাজে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে তবে আল্লাহ সে সমাজে গজব দেন এবং সমাজের সকলেই সে শাস্তি ভোগ করেন | যাকাত প্রদানে টালবাহানা যে সকল পাপের অন্যতম | রাসূল (সা.) বলেছেন:

” (১) ” যখন কোন সম্প্রদায়ের মধ্যে অশ্লীলতা এমন ভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে তারা প্রকাশ্যে অশ্লীলতায় লিপ্ত হতে থাকে, তখন তাদের মধ্যে এমন সব রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে যা তাদের পূর্বপুরুষদের মধ্যে প্রসারিত ছিল না | (২) যখন কোন সম্প্রদায়ের মানুষেরা ওজনে কম বা ভেজাল দিতে থাকে , তখন তারা দুর্ভিক্ষ,জীবনযাত্রার কাঠিন্য ও প্রশাসনের বা ক্ষমতাশীলদের অত্যাচারের শিকার হয় |(৩) যদি কোন সম্প্রদায়ের মানুষেরা যাকাত প্রদান না করে, তাহলে তারা অনাবৃষ্টির শিকার হয় । যদি পশুপাখি না থাকতো তাহলে তারা বৃষ্টি থেকে একেবারেই বঞ্চিত হতো | ( ৪) যখন কোন সম্প্রদায়ের মানুষ আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের ওয়াদা আল্লাহর নামে প্রদত্ত ওয়াদা ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের কোন বিজাতীয় শত্রুকে তাদের উপর ক্ষমতাবান করে দেন , যারা তাদের কিছু সম্পদ নিয়ে যায় |(৫) আর যদি কোন সম্প্রদায়ের শাসকবর্গ ও নেতাগণ আল্লাহর কিতাব (পবিত্র কুরআন) অনুযায়ী বিচার না করে, এবং আল্লাহর বিধানের সঠিক ও ন্যায়ানুগ প্রয়োগের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা না করে ,তখন আল্লাহ তাদের মধ্যে পরস্পর শত্রুতা ও মতবিরোধ সৃষ্টি করে দেন,তারা তাদের বীরত্ব একে অপরকে দেখাতে থাকে | -” ইবনু মাজাহ,আস-সুনান ২/১৩৩২ |আলবানী,সহীহুত তারগীব ১/১৮৭ |
—————————–

**” মূলত পাঁচ প্রকার সম্পদের যাকাত প্রদান করা ফরয(১) বিচরণশীল উট, গরু,ছাগল ইত্যাদি গৃহপালিত পশু ,(২) সোনা- রূপা , (৩) নগদ টাকা, (৪) ব্যবসা বা বিক্রয়ের জন্য রক্ষিত দ্রব্য ও (৫) কৃষি উৎপাদন বা ফল ও ফসল | যেহেতু আমাদের দেশে খোলা চারণভূমিতে পশু পালনের ব্যবস্থা নেই এবং নিসাবযোগ্য পশু ও কারো থাকে না , সেহেতু আমাদের দেশে গৃহপালিত পশুর যাকাত সাধারণভাবে কাউকে দিতে হয় না | এছাড়া বাকি সম্পদগুলির থাকাত প্রদানের নিয়ম নিম্নরূপ:

* (১) স্বর্ণ: যদি কারো নিকট সাড়ে ‘৭’তোলা (ভরি) বা তার বেশি স্বর্ণ থাকে তবে তার প্রতি চান্দ্র বৎসর (৩৫৪) দিন পূর্তিতে মোট স্বর্ণের ( ২.৫% ) যাকাত প্রদান করতে হবে | যেমন কারো যদি ‘১০ ‘ ভরি স্বর্ণ থাকে তবে প্রতি বৎসরে তাকে ‘ ০.২৫’ ভরি স্বর্ণ বা তার দাম যাকাত প্রদান করতে হবে |সাড়ে ‘৭ ‘ ভরি কম স্বর্ণ থাকলে যাকাত ফরয হবে না |

* (২) রৌপ্য: যদি কারো কাছে সাড়ে !৫২! তোলা বা তার বেশি রূপা থাকে তবে প্রতি চান্দ্র বৎসরে’২৫’ যাকাত প্রদান করতে হবে |

* (৩) নগদ টাকা | নগদ টাকার নিসাব হবে স্বর্ণ বা রৌপ্যের নিসাবে | হাদীসে মূলত রৌপ্যের নিসাবই বলা হয়েছে | এছাড়া রূপার নিসাবে আগে যাকাত ফরয হয় | এজন্য বর্তমানে কারো কাছে যদি সাড়ে ‘৫২’ তোলা রূপার দাম বাজার মূল্য অনুসারে: ২৪/২৫ হাজার টাকা : এক বৎসর সঞ্চিত থাকে তবে তাকে মোট টাকার ‘ ২.৫%’ যাকাত দিতে হবে | যেমন কারো যদি ‘৩০’ হাজার টাকা সঞ্চিত থাকে তবে তাকে বছর শেষে ‘৬৫০’ টাকা যাকাত দিতে হবে |

* (৪) ব্যবসায়ের সম্পদ | বিক্রয়ের জন্য রক্ষিত সকল সম্পদের যাকাত দিতে হবে | যদি দোকানে, গোডাউনে ,বাড়িতে মাঠে বা যে কোন স্থানে বিক্রয়ের জন্য রক্ষিত মাটি, বালি,ইট, গাড়ি , জমি ,বাড়ি, ফ্লাট বা অন্য যে কোনো পণ্য থাকে এবং তার মূল্য সাড়ে ‘৫২’ তোলা রূপার মূল্যের সমান বা তার চেয়ে বেশি হয় তবে তবে বৎসর শেষে মোট সম্পদের মূল্যের’ ২.৫%’ যাকাত দিতে হবে |

*” আল্লাহ বলেন:

يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْفِقُوْا مِنْ طَيِّبٰتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّاۤ اَخْرَجْنَا لَـكُمْ مِّنَ الْاَرْضِ

” ! হে মুনীনগণ ! তোমরা তোমাদের পবিত্র উপার্জন থেকে খরচ কর (যাকাত প্রদান কর ) এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যা বের করেছি তা থেকে (যাকাত প্রদান কর )” সূরা বাকারা : আয়াত -২৬৭ |

——————————-

*” তিনিই লতা ও বৃক্ষ-উদ্যান সমূহ সৃষ্টি করিয়াছেন এবং খেজুর বৃক্ষ, বিভিন্ন স্বাদ-বিশিষ্ট খাদ্য শস্য, যায়তূন ও দাড়িম্বও সৃষ্টি করিয়াছেন-এই গুলি একে অন্যের সদৃশ এবং বিসদৃশও। যখন উহা ফলবান হয় তখন উহার ফল আহার করিবে আর ফসল তুলিবার দিনে উহার হক (যাকাত) প্রদান করিবে এবং অপচয় করিবে না; নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।

وَهُوَ الَّذِىْۤ اَنْشَاَ جَنّٰتٍ مَّعْرُوْشٰتٍ وَّغَيْرَ مَعْرُوْشٰتٍ وَّالنَّخْلَ وَالزَّرْعَ مُخْتَلِفًا اُكُلُهٗ وَالزَّيْتُوْنَ وَالرُّمَّانَ مُتَشَابِهًا وَّغَيْرَ مُتَشَابِهٍ ‌ؕ كُلُوْا مِنْ ثَمَرِهٖۤ اِذَاۤ اَثْمَرَ وَاٰتُوْا حَقَّهٗ يَوْمَ حَصَادِهٖ‌ ‌ۖ وَلَا تُسْرِفُوْا‌ ؕ اِنَّهٗ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِيْنَ

——————————

*” সকল প্রকার যাকাত মূলত দরিদ্রদের পাওনা | আল্লাহ বলেন:

اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلْفُقَرَآءِ وَالْمَسٰكِيْنِ وَالْعٰمِلِيْنَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّـفَةِ قُلُوْبُهُمْ وَفِى الرِّقَابِ وَالْغٰرِمِيْنَ وَفِىْ سَبِيْلِ اللّٰهِ وَابْنِ السَّبِيْلِ‌ؕ فَرِيْضَةً مِّنَ اللّٰهِ‌ؕ وَاللّٰهُ عَلِيْمٌ حَكِيْم

” নিশ্চয় সাদাকাহ (যাকাত) শুধুমাত্র অভাবীদের জন্য ,সম্বলহীনদের জন্য, যারা এ খাতে কর্ম করে তাদের জন্য , যাদের অন্তর আকর্ষিত করতে হবে তাদের জন্য ,দাসমুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য , আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের জন্য | আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারন | আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও মহাপ্রজ্ঞাময় | ”
সূরা তাওবাহ,আয়াত:৬০ |
*- Alms are for the poor and the needy ,and those employed to administer the ( funds) for those whose hearts have been ( recently) reconciled ( to truth) for those in bondage and in debt ; in the cause of Allah ; and for the wayfarer: ( thus is it ) ordained by Allah .And Allah is full of knowledge and wisdom |

——————————

*” ইসলামের যাকাত ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো দারিদ্র্য বিমোচন করা | যাকাতের মাধ্যমে দুভাবে দরিদ্রকে সাহায্য করতে হবে | প্রথমত তাদের তাৎক্ষণিক চাহিদা মেটানো এবং দ্বিতীয়তঃ তাদের দারিদ্র্যের স্থায়ী সমাধান করা । এজন্য ইসলামে যাকাতকে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় প্রদান করা হয়েছে | যাকাতের সম্পদ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রধান মূলনীতি হলো তা ব্যক্তিকে প্রদান করতে হবে এবং প্রদান নি:শর্ত হবে | যাকাতের অর্থ কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে, মসজিদ,-মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট ইত্যাদি কাজে ব্যয় করা যাবে না । অনুরূপভাবে মৃত ব্যক্তির দাফন কাফন ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যয় করা যাবে না |

* যাকাত গ্রহণকারী অবশ্য অবশ্যই মুসলিম হবেন | যাকাত শুধুমাত্র মুসলিমদের প্রাপ্য কোন অমুসলিম যাকাত পাবে না | মুসলিম নামধারী কোন ব্যক্তি যদি নামাজ না পড়ে বা প্রকাশ্য শিরক বা কুফরীতে লিপ্ত থাকে তাহলে তাকে যাকাত দেওয়া যাবে না | একজন মুসলিম কোনো অমুসলিমকে নফল দান, সাহায্য ও সামাজিক সহযোগিতা করতে পারেন | কিন্তু তার ফরয দান বা যাকাত তিনি শুধুমাত্র মুসলিমকেই প্রদান করবেন | নিজের পিতা মাতা, স্ত্রী ও সন্তানগণকে যাকাত দেওয়া যায় না | এছাড়া ভাই বোন, চাচা, মামা ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন কেউ দরিদ্র হলে তাকে যাকাত দেওয়া যায় | বরং তাদেরকে সবচেয়ে আগে বিবেচনা করতে হবে |

*” যাকাত এবং সকল দানের ক্ষেত্রে একটি মূলনীতি হল এর উপকার যত ব্যাপক হবে সাওয়াব ও তত বেশি হবে | যেমন যে কোন মুসলিম দরিদ্রকে যাকাত প্রদান করা যাবে | তবে একজন দরিদ্র তালেবে এলেম বা আলেমকে যাকাত প্রদান করলে এর সাহায্য তাকে অধিকতর ইলম চর্চা ও প্রসারের সুযোগ দেবে, যা উক্ত যাকাত দ্বারা অর্জিত অতিরিক্ত উপকার| এজন্য যাকাত দাতার সাওয়াব বৃদ্ধি পাবে | যাকাত ও উশর প্রদানের সময় এ মূলনীতির দিকে লক্ষ রাখা দরকার, যেন আমাদের যাকাত শুধুই ব্যক্তিগত আর্থিক সাহায্য না হয়ে অধিক কিছু কল্যাণে পরোক্ষভাবে হলেও অবদান রাখে | কোন ভালো মাদ্রাসায় যদি যাকাত ও উশরের টাকা বা ফসল সেখানে দেবেন। এতে যাকাত আদায় ছাড়াও ইলম প্রচারের অতিরিক্ত সাওয়াব হবে | অনুরূপভাবে দ্বীনদার দরিদ্র মানুষকে দিলে যাকাত আদায় ছাড়াও দীন পালনে সহযোগিতা হবে |আল্লাহ আমাদেরকে সঠিকভাবে যাকাত আদায় করার তাওফীক দান করুন |আমীন ।
*আসুন আমরা সবাই পবিএ মাহে রামাদানে যাকাত আদায় করি ,বেশী বেশী দান করি -আর আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই প্রানঘাতি করোনা ভাইরাসের গযব থেকে মহান আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন | আমাদের দেশকে রক্ষা করুন | আমিন |

* দোয়ার মুহতাজ *
মাওলানা জিয়াউল ইসলাম যুক্তিবাদী
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও গবেষক
কলারোয়া, সাতক্ষীরা|

একই রকম সংবাদ সমূহ

‘লাইলাতুল কদরে প্রত্যেক বরকতপূর্ণ বিষয় অবতীর্ণ হয়’

‘লাইলাতুল কদরে প্রত্যেক বরকতপূর্ণ বিষয় অবতীর্ণ হয়’ আলহাজ্ব প্রফেসর মো. আবু নসরবিস্তারিত পড়ুন

পাপ মুক্তি ও রহমতের রজনী ‘পবিত্র শবে বরাত’

পাপ মুক্তি ও রহমতের রজনী ‘পবিত্র শবে বরাত’ আলহাজ্ব প্রফেসর মো. আবুবিস্তারিত পড়ুন

বাংলা ভাষার জন্য বাঙালিদের আত্মত্যাগ বিশ্বের দৃষ্টান্ত

বাংলা ভাষার জন্য বাঙালিদের আত্মত্যাগ বিশ্বের দৃষ্টান্ত প্রফেসর মো. আবু নসর ৫২’রবিস্তারিত পড়ুন

  • সাতক্ষীরার প্রথম মহকুমা প্রশাসক নওয়াব আব্দুল লতিফ
  • A visionary leader committed to serving the constituents of Satkhira-1
  • সবুজ হোসেন-এর কবিতা “কুয়াশা”
  • আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও আমাদের ভাবনা
  • বিশ্বের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে
  • বদলে যাওয়া বাংলাদেশের গল্প
  • আওয়ামী লীগের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই : রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হারুন-অর-রশিদ
  • বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান
  • প্রধানমন্ত্রীর সফলতা ও জাতীয় উন্নয়ন
  • যশোর শিক্ষা বোর্ডের আইসিটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রে পাঠ্যপুস্তক-বহির্ভূত প্রশ্ন!
  • ছিলো নদীবন্দর: কলারোয়ার চান্দুড়িয়ায় স্থলবন্দর চালুর দাবি
  • বহু ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর সাক্ষী আশুরা