শরিকদের অর্ধশত আসন ছাড় দেবে বিএনপি, জোটে জামায়াত থাকলে হিসাব ভিন্ন
আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে দলীয় ও জোটগত কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা যার যার নির্বাচনি এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এককভাবে নির্বাচন করলে দল কীভাবে প্রার্থী বাছাই করবে এবং জোটগতভাবে নির্বাচন করলে কীভাবে আসন ভাগ হবে সেসব বিষয়ে শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা চলছে।
জানা গেছে, ৩০০ আসন ঘিরে দলটির কার্যক্রম পরিচালনা হলেও আন্দোলনের শরিকদের অন্তত অর্ধশত আসন ছাড় দেবে দলটি। এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও বর্তমানে ৩০০ আসনে ভোটের ঘোষণা দিয়ে সারা দেশ চষে বেড়াচ্ছে দলটির নেতা-কর্মীরা। তবে বিএনপির সঙ্গে জোট করে ভোট করা জামায়াত যদি জোটগতভাবে নির্বাচন করে তবে ভোটের হিসাব হবে ভিন্ন। সেক্ষেত্রে বিএনপি শরিকদের জন্য বেশি সংখ্যক আসন ছাড়বে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী সব দলকে নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। দলগুলোর সঙ্গে আমাদের নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি বিজয়ী হলে সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠিত হবে। তিনি বলেন, আন্দোলনের শরিকদের আসন ছাড়ের বিষয়ে দল মূল্যায়ন করবে।
বিএনপির আন্দোলনের অন্যতম শরিক জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাধিকবার আমাদের বলেছেন, শরিকদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। আশা করছি, বিএনপি কমপক্ষে ৫০টি আসন শরিকদের ছাড় দেবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অন্তর্বর্তী। তাদের উচিত দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের দিকে যাওয়া। তিনি বলেন, নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা হলে দেশে অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
জানা যায়, চলমান পরিস্থিতিতে আগামী সংসদ নির্বাচনের কোনো নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত না হলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নির্বাচনের কৌশল সাজাচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে আন্দোলনের শরিক দলগুলোকে দুই দফায় অন্তত ২০ শীর্ষ নেতাকে বিএনপির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামীতে তারা ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সরকার গঠনের তাগিদ দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের পাশে টানছে দলটি। শরিকদের নিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনে জোট হতে পারে বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, অতীতের মতো যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলের সঙ্গে ঐক্য ধরে রাখতে চায় বিএনপি। আগামীতে তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনি যুদ্ধে নামতে চায় দেশের অন্যতম বৃহত্তম এই দলটি। এমন বার্তা দিতে ইতোমধ্যে তাদের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা। যদিও নির্বাচনের আগে চাওয়া-পাওয়া নিয়ে বিএনপির সঙ্গে দরকষাকষি করবে দলগুলো। বিএনপি তাদের জাতীয় সরকারের অংশীদার করার আশ্বাস দিয়ে অতীতের মতো জোটবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছে। দলগুলো বিএনপির প্রতি আস্থা রেখে একসঙ্গে পথ চলতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীতে এককভাবে ভোট করাসহ ইসলামী দলগুলো দিয়ে জোট গঠনের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জামায়াত বিএনপি একসঙ্গে আগামীতে ভোট করলে অতীতের মতোই বিএনপিকে জামায়াতের জন্য বড় আসন ছাড় দিতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আযাদ জানান, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ, মতবিনিময় হচ্ছে। নির্বাচন কেন্দ্র করে অনেক দলই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। সব দলই আগামী নির্বাচন ঘিরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীও নির্বাচন কেন্দ্র করে দলকে সংগঠিত করছে। সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংস্কারের পর নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা হবে। তখন পরিস্থিতি অনুযায়ী জামায়াত নির্বাচনি সিদ্ধান্ত নেবে।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)