শ্যামনগরে বেড়িবাঁধ কেটে লোনা পানি তোলার প্রতিবাদ করায় মামলা দিয়ে হয়রানি!
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কালিঞ্চীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ কেটে মসজিদ, কবরস্থান, ঈদগাহের মাঠ ও মিষ্টি পানির পুকুর সহ ফসলের ক্ষতিসাধনের প্রতিবাদ করায় মিথ্যে মামলায় মসজিদ কমিটির লোকজন ও জেলে বাওয়ালীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শ্যামনগর উপজেলার কালিঞ্চী গ্রামের মোঃ রুহুল আমিন গাজীর ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান (জগলু) এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী গ্রামের মৃত আবু নুর আলমের ছেলে শাহাবুদ্দীন কালিঞ্চী উত্তরপাড়া জামে মসজিদের পাশে পাউবো’র বেড়িবাঁধ কেটে ফসলি জমিতে লবন পানি তুলে চিংড়ি চাষ করছেন। অবৈধভাবে বেড়িবাঁধ কেটে লবন পানি তোলার কারণে আমাদের এলাকার মিষ্টি পানির পুকুর ও ফসলের ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া গত আকাশ বণ্যার সময়ও এই অবৈধ কল দিয়ে লোনা পানি তুলে আমাদের কবরস্থান, মসজিদ, মিষ্টি পানির পুকুর ও বাড়িঘর ডুবিয়ে দেয়া হয়। শাহাবুদ্দীনের এই অবৈধ কল বন্ধের দাবি জানিয়ে আমরা এলাকার কয়েকশ’ মানুষ গণস্বাক্ষর করে পাউবো’র চেয়ারম্যান, নির্বাহী প্রকৌশলী ও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করলেও এখনো তার কোন তদন্ত করা হয়নি। এসময় বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়। কিন্তু বেড়িবাঁধ কেটে লোকালয়ে লবন পানি উঠিয়ে ক্ষতিসাধন করার কোন প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে পাউবো’র এসও মাসুদ রানার পরামর্শে গত ৩ সেপ্টেম্বর জুম্মার নামাজের পর মুসল্লিরা মসজিদ ও কবরস্থান রক্ষার জন্য মাটি ভরাট করে অবৈধ কলটি বন্ধ করে দেয়।
হাবিবুর রহমান আরো বলেন, এঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাহাবুদ্দীন মসজিদ কমিটির ও এলাকার জেলে বাওয়ালীসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১৫জনকে আসামী করে শ্যামনগর থানায় একটি চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করে। (মামলা নং-৯/৩৪১, তাং-৪/৯/২১)। এই মামলা তাসলিমা নামের সদ্য সন্তান প্রসুত এক নারীকে আসামী করা হয়। শাহাবুদ্দীন সম্পদশালী ও প্রভাবশালী হওয়ায় এঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এলাকার কিছু সাংবাদিক পরিচয়ধারীকে ম্যানেজ করে অনলাইনে ও কয়েকটি মিডিয়ায় মিথ্যে সংবাদ প্রচার করে। অথছ এর আগে ওইসব সাংবাদিক পরিচয়ধারীরা সত্য ঘটনা তুলে ধরে শাহাবুদ্দীনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করেছিল।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, শাহাবুদ্দীন তার এজাহারে ঘের লুটপাট ও ঘেরের বাসা ভাংচুরের অভিযোগ করলেও বাসটি অক্ষত ছিল। তাছাড়া যেখানে কল বন্ধ করা হয়েছে সেখান থেকে শাহাবুদ্দীনের ঘের প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে। প্রকাশ্য দিবালোকে কল বন্ধ করার ঘটনার পর সম্পূর্ন একটি মিথ্যে মামলায় এলাকার সাধারণ মানুষ ও নিরীহ জেলে বাওয়ালীদের আসামী কওে হয়রানি করা হচ্ছে। অবৈধভাবে পাউবো’র বেড়িবাঁধ কেটে পাইপ বসিয়ে লবন পানি তুলে এলাকার ক্ষতিসাধান করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/বি ধারার অপরাধ। অথচ এলকার দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডেও এসও মাসুদ রানা অবৈধ কল মালিকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা না করে একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন মাত্র। অপরদিকে মিথ্যে চাঁদাবাজীর মামলা দিয়ে ক্ষ্যান্ত না হয়ে শাহাবুদ্দীন গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে নিজের ঘেরের বাসা নিজেই জ্বালিয়ে দিয়ে আমাদেরকে আবারও একটি মিথ্যে মামলায় ফাসানোর চেষ্টা করছেন। এছাড়া শাহাবুদ্দীন বিভিন্ন জায়গা থেকে ভাড়াটিয়া গুন্ডা এনে প্রকাশ্য দিবালোকে আবার বেড়িবাঁধ কেটে লবন পানি তুলে আমাদেও ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করছেন এবং আমাদের প্রত্যোকের নাম ৫/টি মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দিচ্ছেন।
তিনি শাহাবুদ্দীনের অত্যাচার, নির্যাতন ও মিথ্যে মামলার দায় থেকে অব্যহতি পেতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)