সাতক্ষীরা জেলায় জলাবদ্ধতা প্রধান কারণ অপরিকল্পিত মৎস্য ঘের


আবু সাঈদ : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের মাছখোলা, শাল্যে, বেড়াডাঙ্গী, তালতলা, কুন্দরডাঙ্গা, দেবনগর, খেজুরডাঙ্গা ও আমতলা গ্রাম এখন পানির নিচে। বর্ষা মৌসুমে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দিয়ে মৎস্য ঘের নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে হাজারো মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, প্রভাবশালী ঘের মালিকেরা পানি নিষ্কাশনের প্রাকৃতিক পথ বন্ধ করে দেওয়ায় বছরের পর বছর জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলছে না। তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বহু ঘরবাড়ি ও আঙিনা পানিতে তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট ডুবে থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এলাকা। একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে কলার ভেলা। রান্নাঘর ও শৌচাগার পানিতে ডুবে থাকায় চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা। ডায়রিয়া, টাইফয়েড ও চর্মরোগসহ নানা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। গবাদিপশু নিয়েও পড়েছেন বিপাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের জমি-ঘর সব পানিতে ডুবিয়ে মাছ চাষ করছে। খালের মুখগুলো একে একে বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে।”
আরেক ভুক্তভোগী বলেন চুলার মধ্যে পানি, বাচ্চাদের নিয়ে ভয়াবহ কষ্টে আছি। সাপের ভয়, পোকার ভয় রাতের বেলা ঘুমাতেও পারি না।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রভাবশালী ঘের মালিকরা নিজেদের স্বার্থে খাল ও প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে রেখেছে। বহুবার অভিযোগ জানালেও স্থায়ী সমাধান মেলেনি। তাদের মতে, প্রশাসন মাঝে মধ্যে লোক দেখানো পদক্ষেপ নিলেও তা কার্যকর হয়নি।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোয়াইব আহমাদ বলেন জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসন কাজ করছে। অবৈধভাবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ করে রাখা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে প্রশাসনের আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা। তাদের দাবি, প্রতিবছরই আশ্বাস দেওয়া হলেও প্রভাবশালী ঘের মালিকদের দৌরাত্ম্যের কাছে অসহায় সাধারণ মানুষ। তাই দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ উন্মুক্ত করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার দাবি জানিয়েছেন তারা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)

একই রকম সংবাদ সমূহ

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারীর প্রতি সহিংসতা: সাতক্ষীরার উপকূলে বাড়ছে দ্বৈত সংকট
গাজী হাবিব, সাতক্ষীরা: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূল সাতক্ষীরা। সুন্দরবনের সন্নিকটে এই অঞ্চলটি শুধুবিস্তারিত পড়ুন

সাতক্ষীরায় জামায়াতের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন, যুবদলের ৬ নেতাকর্মীর যোগদান
হাফিজুল ইসলাম, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ৯নং ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের বাংলাদেশ জামায়াতেবিস্তারিত পড়ুন

স্বদেশ’র আয়োজনে কমিউনিটি লিগ্যাল ক্যাম্প
স্বদেশ সংস্থার বাস্তবায়নে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর সহযোগিতায় দাতা সংস্থাবিস্তারিত পড়ুন