সেই এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন


চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন)। সারাদেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন এই পরীক্ষায়। তবে প্রথম দিনই ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা।
মায়ের মেজর স্ট্রোকের কারণে পরীক্ষা শুরুর সময় কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি একজন পরীক্ষার্থী। দেড় ঘণ্টা পরে কেন্দ্রে পৌঁছলেও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ মেলেনি তার। পরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি, দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থাকার পরে কেন্দ্রের গেটের বাইরে থেকে চলে যান ওই পরীক্ষার্থী। তবে ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার।
শুক্রবার (২৭ জুন) এ তথ্য জানিয়েছে চীফ অ্যাডভাইজার (জিওবি) পেজে।
এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার বলেন, মানবিক বিবেচনায় ওই শিক্ষার্থীর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত আইন ও বিধির আলোকে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তার এ দুঃসময়ে আমরাও সমব্যথী। এ পরীক্ষার্থীকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে এইচএসসি ও সমমানের প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। প্রথম দিনের এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজধানীর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ কেন্দ্রের এক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা না দিতে পারার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। পরীক্ষা দিতে না পারায় ওই কেন্দ্রের সামনে তাকে কাঁদতে দেখা যায়। তবুও ওই শিক্ষার্থী কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেনি। বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষা শুরুর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্রে পৌঁছেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের বাইরে কেন্দ্রে পৌঁছানোয় তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং দায়িত্বরতরা জানিয়ে দেন, নিয়মের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
ওই শিক্ষার্থীর খালা গণমাধ্যমকে জানান, মেয়েটির বাবা নেই। সকালে তার মা স্ট্রোক করেছেন। পুরো পরিবারে কেউ নেই যে, তার দায়িত্ব নিতে পারে। তাই মেয়েটিই মাকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যান। সেখান থেকে দৌড়ে এসে পরীক্ষা দিতে এসেও হলে ঢুকতে পারেননি।
কেন্দ্রের গেটের বাইরে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই শিক্ষার্থী। এই দৃশ্য দেখেছেন বহু অভিভাবক, পথচারী এবং পরীক্ষার্থী। অনেকেই বলেন, এমন মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও একজন পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে পৌঁছেছেন- এটাই প্রমাণ করে তার অদম্য চেষ্টা। অথচ পরীক্ষার সুযোগ না দিয়ে তার ভবিষ্যৎকে আটকে দেওয়া হলো কেবল ‘নিয়ম’-এর নামে।
একজন অভিভাবক বলেন, ‘মেয়েটা কি শখ করে লেট করেছে? মা স্ট্রোকে আক্রান্ত, সেই মাকে হাসপাতালে রেখে এসেছে, এর চেয়ে বড় পরীক্ষা আর কী হতে পারে। ওকে সুযোগ দেওয়া যেত।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
