সাতক্ষীরায় নাগরিক সংলাপ : জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে উপকূলে গুরুত্ব দেয়ার দাবি
জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও সংকট নিরূপণে উপকূলীয় জেলাগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। একই সাথে জলবায়ু তহবিলের অর্থ ব্যয়েও জলবায়ু উদ্বাস্তুদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এজন্য আসন্ন কপ-২৮ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলোর কাছ থেকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে হবে।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) সাতক্ষীরা শহরের ম্যানগ্রোভ সভাঘরে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) আয়োজিত ‘উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু সংকট ও ন্যায় বিচার’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এই দাবি জানান।
সাতক্ষীরায় নাগরিক সংলাপ : জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি ও সংকট নিরূপণে উপকূলীয় জেলাগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার দাবি।
বক্তারা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও নানা সংকটের কথা তুলে ধরে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা বেড়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বার বার নদী ভাঙনের ফলে মানুষ বাস্তু-ভিটা-সহায় সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্তার বিস্তার ঘটছে। মিষ্টি পানির উৎস নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। লবণ পানি ব্যবহারের কারণে উপকূলীয় নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। মার্টির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে কৃষি উৎপাদন। প্রাণ বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। উপকূলীয় এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় পুষ্টিহীনতা বাড়ছে। বাল্য বিবাহ ও ঝরে পড়ার হার কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে শিশু শ্রম। নারীদের গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ। মানুষ কর্মসংস্থানের অভাবে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় থাকলেও তার কোনো সুফল উপকূলের মানুষ পাচ্ছে না। তারা নিজস্ব শক্তি সামর্থ্য ও জ্ঞান দিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। কিন্তু বার বার প্রাকৃতিক দুর্যোগে এক সময় বাস্তুচ্যুত হয়ে শহরের বস্তিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তা না হলে সাতক্ষীরা অঞ্চলের জলবায়ু উদ্বাস্তুর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।
বক্তারা উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে উপকূলের জন্য উপযোগী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠনের দাবি জানান।
সংলাপে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অ্যাড. আজাদ হোসেন বেলালের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর এসএএম আব্দুল ওয়াহেদ, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পরিবেশ কর্মী অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, সুজন-সাতক্ষীরার সভাপতি অধ্যাপক পবিত্র মোহন দাশ, সংগীত শিল্পী আফফান রোজবাবু, সাংস্কৃতিক কর্মী মোসফিকুর রহমান মিল্টন, উন্নয়ন কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, মহিলা পরিষদ নেত্রী জোৎনা দত্ত, গণফোরাম নেতা আলী নূর খান বাবুল, প্রথম আলো সাতক্ষীরা বন্ধুসভার সভাপতি কর্ন বিশ্বাস, সাতক্ষীরা ব্যোটানিক্যাল সোসাইটির সভাপতি তারিক ইসলাম,শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সদস্য মুশফিকুর রহমান,সাতক্ষীরা ইয়ুথ হাবের হৃদয় মন্ডল, বারসিক কর্মকর্তা গাজী মাহিদা মিজান প্রমুখ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)