বোরো মৌসুমে ধান, চাল ও গম কেনা শুরু সরকারের
চলতি মৌসুমে সরকারের বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার (৭ মে)। দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তর থেকে ভার্চুয়ালি বিভিন্ন জেলার সঙ্গে যুক্ত হয়ে ধান-চাল ও গম কেনা কর্মসূচি উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চললেও জুনের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ অর্জনের নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রী।
কৃষকদের হয়রানি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার কৃষকরা টেলিফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, আজ আমরা বোরো মৌসুমে ধান, চাল ও গম কেনার উদ্বোধন করেছি। এর আগে (২১ এপ্রিল) আমরা খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় লক্ষ্যমাত্রা ও দাম নির্ধারণ করেছি।
বোরোতে এবার ১৭ লাখ টন ধান ও চাল কিনবে সরকার। এর মধ্যে পাঁচ লাখ টন ধান, ১১ লাখ টন সিদ্ধ চাল, এক লাখ টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি বোরো ধানের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ধান ৩২ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪৫ টাকা এবং আতপ চাল ৪৪ টাকা। একই সঙ্গে ৩৪ টাকা দরে ৫০ হাজার টন গম কেনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বিভিন্ন পয়েন্টে জেলা প্রশাসকরা উপস্থিত ছিলেন। আরসি ফুড (আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক), ডিসি ফুড (জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক), কৃষি উপপরিচালক, কৃষক, চালকল মালিকরা ছিলেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের নির্দেশনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে সঠিক সময়ে সংগ্রহ (ধান, চাল ও গম) করতে হবে। আমরা জুন মাসের মধ্যে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ করার জন্য বলেছি। হাওরের ধানকে প্রাধান্য দিয়ে হাওরে বরাদ্দ বেশি দিয়েছি। কৃষকদের যেন হয়রানি না হয় সেজন্য প্রতি ইউনিয়নে তিনজন কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তার কাছে একটি করে ময়েশ্চার মিটার (ধানের আর্দ্রতা মাপার যন্ত্র) দেওয়া হয়েছে। যে কৃষকরা ধান দেবেন বলে আবেদন করেছেন, তালিকা পাঠিয়েছেন, তাদের বাড়ি গিয়ে মিটার দিয়ে ধানটা পরীক্ষা করে আসবেন। আর্দ্রতা ১৪ শতাংশের বেশি থাকলে তাদের বলবেন আরও শুকিয়ে ১৪ শতাংশে নিয়ে আসেন।
‘কৃষক হয়রানি যেন না হয় সেজন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়েছি এডিবি ফান্ডের কৃষির অংশ থেকে আরও ময়েশ্চার মিটার কিনে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দেওয়া জন্য।’ বলেন মন্ত্রী।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, গোডাউনে ধান দিতে এসে কোনো শ্রমিক যেন কৃষকদের হয়রানি না করে। সেজন্য ডিসি ও আমাদের কর্মকর্তাদের নজর রাখতে বলেছি। কোনো কৃষক যেন কোনোভাবে অপমানিত ও হয়রানি না হয়, সেই বিষয়ে আমরা সদা সচেষ্ট থাকবো। যদি সেটা (কৃষককে হয়রানি) করে তবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।
অভিযোগ জানাতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দুটি নম্বর দিয়ে দেয়া হবে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষক বা কোনো ব্যক্তি ওই নম্বরে যেন ফোন করে হয়রানির কথা জানাতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি ধান ও চালের গুণগত মান যাতে ভালো হয়, কোয়ালিটির সঙ্গে যাতে কোনো আপস না হয় সেটাই আমরাদের নির্দেশনা।
মন্ত্রী বলেন, গত বছর আমরা লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছি, এবারও লক্ষ্যমাত্রা পার হবে বলে আশা করছি।
চালের বস্তার গায়ে ধানের জাত ও দাম লেখার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এটা চলছে বলেও জানিয়েছেন সাধন চন্দ্র মজুমদার।
সামগ্রিকভাবে সারাদেশে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। সাড়ে সাত হাজার থেকে আট হাজার কোটি টাকার বোরো ধান-চাল কেনা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন খাদ্যসচিব মো. ইসমাইল হোসেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)