অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে যবিপ্রবির সাবেক কর্মচারী নেতার সদস্যপদ বাতিল
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালযের (যবিপ্রবি) কর্মচারী সমিতির ২০১৯-২০ সেশনের সদ্য সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সমিতির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। যবিপ্রবি কর্মচারী সমিতি দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর গত ৩ নভেম্বর ২০২০ খ্রি. নতুন কমিটি অর্থের হিসাব বুঝে নিতে গিয়ে হিসাবে অসামঞ্জস্যতা পাওয়ার পর পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিলের পর অর্থ আত্মসাতের প্রমান মিলেছে। আজ মঙ্গলবার যবিপ্রবি কর্মচারী সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কর্মচারী নেতৃবৃন্দ এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে তারা জানান, গত ০৩ নভেম্বর ২০২০ খ্রি. তারিখে নব-গঠিত কর্মচারী সমিতির ১ম সাধারণ সভায় বিগত কমিটির নিকট হতে সমিতির আয়-ব্যয় বুঝে নেবার জন্য ০৫ (পাঁচ) সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি কর্তৃক বুঝে দেওয়া অর্থের মধ্যে ১,৪৪,০০০ (এক লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার) টাকার হিসাব অসঙ্গতি পেয়ে হিসাব দাখিল করে। প্রাপ্ত রিপোর্ট এর ভিত্তিতে কর্মচারী সমিতির কার্য নির্বাহী কমিটি ২৪ জানুয়ারী ২০২১ খ্রি. তারিখের সভায় বিগত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিকট আয়ের অসঙ্গতি কারণ জানতে চেয়ে পত্র প্রদান করার সিদ্ধান গৃহীত হয় এবং ২৫ জানুয়ারী ২০২১ খ্রি. তারিখে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিকট ব্যাখ্যা চেয়ে পত্র প্রদান করা হয়। বিগত সভাপতি ব্যাখ্যা প্রদান করলেও সাধারণ সম্পাদক ব্যাখ্যা প্রদান না করায় পুনরায় ২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ খ্রি. তারিখে দ্বিতীয় বার তার নিকট পত্র প্রেরণ করা হয়। পত্রের আলোকে ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১খ্রি. তারিখে সাধারণ সম্পাদক ব্যাখ্যা প্রদান করেন। ব্যাখ্যার আলোকে সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নিকট চাহিদা ব্যাখ্যা সন্তোষজনক মনে না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সুষ্ঠু মতামত প্রদানের জন্য গত ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১খ্রি. তারিখে ০৫ (পাঁচ) সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সুষ্ঠু মতামতের লক্ষ্যে গত ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১খ্রি. তারিখে ০৫ (পাঁচ) কর্মদিবসের সময় চেয়ে বর্তমান গঠিত কর্মচারী সমিতির নিকট একটি পত্র প্রদান করেন। পত্রের আলোকে কার্যনির্বাহী কমিটি গত ১৫ফেব্রুয়ারী ২০২১খ্রি. তারিখে ০৫ (পাঁচ) কর্মদিবস সময় বর্ধিত করে মতামত কমিটির নিকট পত্র দেন। অত্র কমিটি গত ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ খ্রি. তারিখে উক্ত পত্রের মতামত রিপোর্ট জমা দেয়।
তারা আরও জানান, সমস্ত বিষয়াদি, তদন্ত প্রতিবেদন, পরিপার্শ্বিকতা এবং নথি পত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, বিগত কর্মচারী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সমিতির নিয়ম মাফিকভাবে সমিতির পরিচালনা তদা উত্তোলন এবং আয় ব্যায়ের হিসাব না করে নিজে ইচ্ছা খুশি ও মর্জিতে করেছেন। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন সময় হতে অত্যন্ত দক্ষতা, ন্যায়, নিষ্ঠা এবং সুনামের সহিত পরিচালিত হয়ে আসছিল কিন্ত অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় বিগত কর্মচারী সমিতি ২০১৯-২০২০ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই সুনাম-কে ভুলণ্ঠিত করেন। কর্মচারী সমিতিকে অনেকটা হেয়প্রতিপন্ন এবং খাটো করেছেন।
সকল বিষয় বিবেচনায় সমিতির বিগত সভাপতি তার ভুল স্বীকার ও নিঃস্বার্থ ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এছাড়া তিনি বর্তমানে কর্মচারী সমিতির সদস্য নয়। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তার সম্মান ও ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টি বিবেচনা করে বর্তমান সমিতির সাধারণ সভায় উপস্থিত সকল সদস্যের সম্মতিতে তাকে অসঙ্গতি অর্থ বিগত কর্মচারী কমিটির সাধারণ সম্পাদকের সাথে মিল করে উক্ত অর্থ যবিপ্রবি কর্মচারী সমিতির ব্যাংক হিসাব নম্বরে ফেরত প্রদান করতে হবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
নেতৃবৃন্দ আরও জানান, সাধারণ সম্পাদক পদ যেহেতু একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল পদ হওয়ায় তিনি দায়িত্বে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থ আতœসাত এবং কর্মচারীদের কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণে কাজ করেছেন সেটা প্রমাণিত হওয়ায় যবিপ্রবি কর্মচারী সমিতির গঠণতন্ত্রের চতুর্থ ভাগের অনুচ্ছে ১২ ধারা (খ, গ, চ ও ছ) লঙ্ঘন করেছেন বিধায় তৃতীয় ভাগের অনুচ্ছেদ ছ এর ধারা (ক ও ঘ) মোতাবেক সমিতির সদস্য পদ বাতিলের জন্য অদ্য ২৩ফেব্রুয়ারী ২০২১খ্রি. তারিখে কর্মচারী সমিতির সাধারণ সভায় উপস্থিত সকল সদস্যের সামনে উপস্থাপন করা হলে সকল সদস্যের সর্ব-সম্মতিক্রমে আজীবন যবিপ্রবি কর্মচারী সমিতির সদস্য পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং সমিতির অর্থ আত্মসাতের টাকা সমিতির ব্যাংক হিসাব নম্বরে ফেরত আনার জন্য বর্তমান কর্মচারী সমিতি ০৩ (তিন) সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত সাধারণ সভায় গৃহীত হয় এবং বিগত যবিপ্রবি কর্মচারী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে আত্মসাতের টাকা ফেরত আনার জন্য গঠিত কমিটি সর্বোময় ক্ষমতার অধিকারী থাকবে। উক্ত অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে গঠিত ০৩ (তিন) সদস্য বিশিষ্ট কমিটি আইনী সহযোগীতাও গ্রহণ করতে পারবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)