দেবহাটার
ইজিবাইক চালক মনিরুলের প্রকৃত খুনিদের চিহিৃত করে তাদেরকে গ্রেফতার ও ন্যায় বিচারের সংবাদ সম্মেলন


সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের ইজিবাইক চালক মনিরুল হত্যার মূল পরিকল্পনাকারিকে খুঁজে বের করে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন নিহতের পরিবার। রবিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানান মামলার বাদি নিহতের ভাই শিমুলিয়া গ্রামের মৃত ইসমাইল গাজীর ছেলে মোঃ আমিরুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৫ জুন বৃস্পতিবার রাতে আমার ভাই ইজিবাইক চালক মনিরুল ইসলামকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এঘটনায় আমি নিজে বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা দেবহাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক উজ্জ্বল কুমার মৈত্র নিহত ভাই মনিরুলের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন ও একই উপজেলার কামটা গ্রামের সাইদুর রহমান রাজুকে আটক করে। পরে গত ২ জুলাই রাজু ও রাবেয়া সাতক্ষীরা বিচারিক হাকিম বিকাশ কুমার মন্ডলের আদালতে হত্যাকান্ডের সাথে নিজেদের সম্পৃক্তরার কথা স্বীকার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। তবে হত্যাকান্ডে অংশ নেয়া বাকিদের সর্ম্পকে কিছু উল্লেখ করেনি এবং মনিরুলের ইজিবাইক সর্ম্পকে কোন তথ্য দেয়নি। জবানবন্দিতে রাজু ও রাবেয়া ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দেন। ১০ জুন সকালে বিজিবি হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী মাদক ব্যবসায়ী ইউপি মেম্বর আরমানের দেখিয়ে দেয়া মতে পুলিশ কামটা গ্রামের একটি পুকুর থেকে ইজিবাইকের অংশবিশেষ উদ্ধার করে। যা মনিরুলের ইজিবাইকের অংশ ছিল না। মনিরুল হত্যা মামলার অন্যতম হোতা নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান নারীলোভি মুজিবরকে বাঁচাতে আরমান মেম্বর ইজিবাইকের অংশবিশেষ উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাই মনিরুলের স্ত্রী রাবেয়ার সাথে বিগত ২০১২ সাল থেকে চেয়ারম্যান মুজিবরের অবৈধ সর্ম্পক গড়ে উঠে। যার জন্য চেয়ারম্যান মজিবর ২০১৩ সালের গরানবাড়িয়ায় আলমগীর হত্যা মামলায় ভাই মনিরুলকে ফাঁসিয়ে দেয়। এতে মনিরুল প্রায় ৯ মাস জেলে ছিল। আমার ভাই জেলে থাকা অবস্থায় ভাবী রাবেয়াকে নিয়ে চেয়ারম্যান মুজিবর বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যেত এবং প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ভাইয়ের বাসায় আসতো। এতে আমার পিতা মরহুম ইসমাইল গাজী বাধা দিলে চেয়ারম্যান মুজিবর ভাবী রাবেয়াকে বাদি করে ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধ পিতার বিরুদ্ধে ধর্ষন চেষ্টার মামলা করায়। জেলা থেকে ছাড়া পেয়ে আমার পিতা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে চেয়াম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান মুজিবর ও তার দুই ছেলে গাজিরহাট বাজারে আমার বৃদ্ধ পিতাকে মারপিট করে। এঘটনার কিছুদিন পর আমার বৃদ্ধ পিতা অসুস্থ হয়ে মারা যান। চেয়ারম্যান মুজিবরের সাথে অবৈধ সম্পর্ক থাকায় প্রায়ই ভাবীর সাথে ভাইয়ের ঝগড়া হতো। আমার ভাই মনিরুল যে দিন নিহত হয় ওই দিন সন্ধ্যা থেকে পরের দিন ভোর ৫টা পর্যন্ত চেয়ারম্যান মুজিবর ভাবি রাবেয়ার সাথে ১৩ বার মোবাইলে কথা বলেন। যা অত্যান্ত সন্দেহজনক।
মামলার বাদি আমিরুল ইসলাম আরো বলেন, মুজিবর চেয়াম্যানের সাথে আমার ভাবির অবৈধ সর্ম্পকের বিষয়টি আমি মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক উজ্জ্বল কুমার মৈত্রকে জানালে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্থ করেন। কিন্তু কিছুদিন পরে মোবাইলে তিনি আমাকে জানান, যে উপরের চাপ আছে আমি মামলার তদন্ত করতে পারছিনা। ধর্য্য ধরেন কোন সূত্র পেলেই আমি চেয়ারম্যান মুজিবরকে আটক করবো। যার অডিও রেকড আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। কিন্তু প্রায় দুইমাস হতে চললো এখনো আমার ভাই মনিরুলের প্রকৃত হত্যাকারিরা আটক ও হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। আমার বিশ্বাস নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবর ও ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বর আরমানকে আটক করলে মনিরুল হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে। তারা দু’জনেই প্রভাবশালী হওয়ায় মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার উপর অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে মামলাটি ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করছে।
তিনি ভাই মনিরুলের প্রকৃত খুনিদের চিহিৃত করে তাদেরকে গ্রেফতার ও এই হত্যাকান্ডের ন্যায় বিচারের দাবিতে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মহোদয় ও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এসময় নিহত মনিরুলের মা আলেয়া বিবি, বোন ছকিনা খাতুন ও দুই শিশু পুত্র রুহুল আমিন ও আল মামুন।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
