‘সাদা সোনা’ রোপনে ব্যস্ত রাজগঞ্জের খালিয়া গ্রামের চাষীরা
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের খালিয়া গ্রামের মাঠে মাঠে সারিবদ্ধ ভাবে বসে বাটি-ডালা হাতে নিয়ে ‘সাদা সোনা’ নামে খ্যাত রসুন রোপন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।
তারা প্রায় পাঁচ যুগেরও বেশী সময় ধরে রসুন চাষ করে আসছেন এ গ্রামের মাঠে। অনেক পরিবার রসুন চাষের মাধ্যমে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন এনেছেন।
ভূমিহীন চাষিরা অন্যের জমি বর্গা নিয়েও রসুন চাষ করে থাকেন।
ভোজন বিলাসীদের কাছে রসুন একটি অতিপ্রিয় মসলা। প্রায় সব ধরণের খাবার তৈরিতে রসুনের ব্যবহার রয়েছে। বাজারে রসুনের আচার, তেল, জেলিসহ নানা ধরনের খাবার বিক্রি হয়ে থাকে।
সরেজমিনে রাজগঞ্জের ঝাঁপা ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে— চাষীরা সারিবদ্ধ ভাবে বসে রসুন রোপন করছেন।
এসময় কথা হয় চাষীদের সাথে, তারা বলেন— বানিজ্যিক ভিত্তিতে রসুন চাষ করা হয় এ মাঠে। বর্ষা মৌসুমের পরপরই সাধারণত কার্ত্তিক মাসের শুরুতে রসুনের বীজ রোপন করা হয়। দীর্ঘ পরিচর্যার পর ফাল্গুন মাসের শেষ দিকে জমি থেকে রসুন তোলা শুরু হয়। দেশী জাতের রসুন বাড়িতেই বীজ তৈরি করে সংরক্ষণ করে থাকেন এখানকার চাষীরা। প্রতিটি বীজ রসুন থেকে ২০/২৫টা বীজ রোপন করা যায়। বিঘা প্রতি প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মণ রসুন উৎপাদন করে থাকেন তারা। রসুন আহরণের মৌসুমে বাজারে দাম প্রতি কেজি প্রায় ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করেন তারা।
এলাকার চাষী আব্দুল মাজিদ জানান, এবছর প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে রসুন রোপন করেছেন। বিঘা প্রতি তার ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। প্রতি বিঘা জমি হতে তিনি প্রায় ৬০ হাজার টাকার বেশি রসুন বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।
অনেকে আবার জমি লিজ নিয়ে রসুন চাষ করেছেন। চাষীরা জানান— রসুন বিক্রি করতে আমাদের মোকামে যেতে হয় না। স্থানীয় রাজগঞ্জ বাজারে বিভিন্ন এলাকা থেকে বেপারীরা আসেন রসুন কিনতে। সেখান থেকে ট্রাক বোঝাই হয়ে এখানকার রসুন চলে যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
স্থানীয় ইউনিয়ন কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজগঞ্জের খালিয়া গ্রামে বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদিত হয় রসুন। বহু বছর ধরে এখানকার চাষীরা ক্ষেত থেকেই বাছাই করে বীজ সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে রোপন করেন। গুনে মানে উৎকৃষ্ট হওয়ায় স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে এর চাহিদাও রয়েছে অনেক।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)