সুন্দরবন উপকূলে নারীর স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত
সাতক্ষীরায় সুন্দরবন উপকূলে লোনা পানির প্রভাব ও নারীর স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেমিনারে বক্তারা লবণাক্ততার কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যজনিত ঝুঁকি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নারীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে সমন্বিতভাবে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ, বিস্তর গবেষণা ও সুনির্দিষ্ট তহবিল গঠন করার উপর গুরুত্বারোধ করেন।
শনিবার (২৭ আগস্ট) সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সভা কক্ষে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে জেলা স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার পুলক চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজমুন নাহারের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সাতক্ষীরা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বাবুল আক্তার, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আনিছুর রহিম, বারসিকের পরিচালক ও গবেষক পাভেল পার্থ।
ধারণাপত্র পাঠ করেন সাংবাদিক আমিনা বিলকিস ময়না।
আলোচনায় অংশ নেন, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সোনা রানী দাশ, ডা. স্মৃতিভা, ডা. আসাদুজ্জামান নূর, ডা. আশরাফুল, ডা. এসএমএ মুক্তাদির তামিম, সাংবাদিক মিজানুর রহমান, এম কামরুজ্জামান, শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, গোলাম সরোয়ার, ইয়ারব হোসেন, আসাদুজ্জামান সরদার, পিযুষ বাউলিয়া পিন্টু, রাম কৃষ্ণ জোয়ারদার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, লবণাক্ততার কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের নারীদের অকাল গর্ভপাত, প্রজননতন্ত্রের সমস্যা, ঋতুচক্র জনিত সমস্যাসহ জরায়ু কেটে ফেলার মতো ভয়াবহ ঘটনাও ঘটছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি কেবল উপকূলের নারীদের স্বাস্থ্যহানি ঘটাবে না, বরং জাতীয় অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলবে। কারণ এই নারীরাই উপকূলের কৃষি ও মৎস্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
বক্তারা বলেন, উপকূলীয় এলাকার কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, উপজেলা ও জেলা হাসপাতালকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমানে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার উপকরণ, ওষুধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কিশোরী ও নারীরা তাদের প্রজনন স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা যাতে তাদের পরিবারও চিকিৎসকদের কাছে নিরাপদে তুলে ধরতে পারে এরকম সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
সেমিনারে গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. সোনা রানী দাশ বলেন, জরায়ুুমুখে ক্যান্সার হচ্ছে কি না, এর পরীক্ষার ব্যবস্থা সরকারি হাসপাতালে আছে। কিন্তু বায়োপসি পরীক্ষার ব্যবস্থা আমাদের সব জায়গায় নেই। লবণাক্ততার কারণেই জরায়ু ক্যান্সার বাড়ছে কি না, এ বিষয়ে আমাদের আরও বেশি গবেষণা দরকার।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত বলেন, বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ ও জনস্বাস্থ্যের বিষয়। শ্যামনগর উপকূলে একটি পাইলট স্ট্যাডি করতে পারে লবণাক্ততা ও নারীর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নিয়ে। আমাদের চিকিৎসকদেরকেরও গবেষণা কাজে আরও বেশি যুক্ত হওয়ার দরকার। এভিডেন্স বেজ প্রাকটিস এবং এভিডেন্স বেজ ট্রিটমেন্ট আরও বেশি বাড়ানো দরকার।##
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)