আসছে ঈদ, ব্যস্ততা বেড়েছে কলারোয়ার দর্জি কারিগরদের, ভিড় গার্মেন্টসেও
চলছে করোনা ভাইরাস আর লকডাউন। আসছে পবিত্র ঈদ। রমজান মাসের দুই তৃতীয়াংশ শেষের পথে। বিধিনিষেধের মধ্যে দোকানপাট খোলা ও বেচাকেনা চলমান।
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসদরসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারের দর্জি ও গার্মেন্টস দোকানগুলোতে পুরোদমে চলছে পোষাক তৈরি ও বেচাকেনার কাজ। হিড়িক পড়েছে দর্জিপট্টিতে নতুন পোষাক তৈরিতে, গার্মেন্টস দোকানে নতুন পোশাক বেঁচাতে।
করোনার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যবিধি কখনো মানা হচ্ছে, আবার কখনো উপেক্ষিতও হচ্ছে। ক্রেতাদের বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক পরতে দেখা গেছে, আবার মুখের থুথনিতে ঝুলতেও দেখা গেছে। তবে কোনভাবেই সামাজিক দূরত্ব পরিলক্ষিত হয়নি। কোনা কোন দোকানে গোল আবৃত বা দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা প্রদর্শন করা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেটা যেনো কাগজেকলমে আর মুখে মুখেই থেকে যাচ্ছে। ভাবটা এমন যেনো- ‘বিক্রেতাদের কাছে আগে বিক্রি, আর ক্রেতাদের কাছে আগে কেনা’।
এদিকে, দর্জির দোকানের পাশাপাশি রেডিমেট গার্মেন্টস দোকানেও ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত নানান বয়সী নারী-পুরুষের হরেক রকমের বাহারী ঢং আর নামের রেডিমেট পোশাক বেচাকেনা বৃদ্ধি পেয়েছে। শার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জি, পাঞ্জাবি, পাজাবা, থ্রি-পিচ, ওয়ানপিচ, শাড়িসহ বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে হরহামেশা।
এমআর মার্কেটসহ পৌসদরের পাইলট হাইস্কুল মোড় এলাকার কয়েকটি মার্কেট, থানা রোড, কাপুড়িয়া পট্টি, জেলা পরিষদ মার্কেট, পুরাতন ইসলামী ব্যাংক এলাকার কয়েকটি মার্কেট ও গার্মেন্টস দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ক্রেতাদের বেশির ভাগই মহিলা ও কম বয়সী মেয়েরা।
দর্জি দোকানগুলোতে মেঝেতে কাপড়ের স্তুপ। ডান-বায়ের দেয়ালেও ঝুলছে নানা রঙ ও নকশার বানানো পোশাক। সেলাই মেশিনের একটানা খটখট আওয়াজ চলছে। এর মধ্যেই নেওয়া হচ্ছে নতুন পোশাকের অর্ডার। একই সঙ্গে চলছে মাপ অনুয়ায়ী কাপড় কাটার কাজও।
বেশ কয়েকটি দর্জির দোকানে ঘুরে এমন ব্যস্ততা ও ক্রেতাদের ভীড় দেখা গেছে।
কয়েকজন দর্জি বললেন, ‘আমরা আজ থেকে পোষাক তৈরির অর্ডার আর নিচ্ছি না। কারণ এত অল্প সময়ের মধ্যে ক্রেতাদের কথামত পোশাক দিতে পারব না। কারিগড়রা আর কত পোষাক তৈরি করবে?’
ক্রেতারা জানান, ‘আর কয়েকদিন পরেই ঈদুল ফিতর। হাতে আর তেমন সময় নেই। যারা তৈরি পোশাক (রেডিমেড) পরতে পছন্দ করেন না বা নিজের পছন্দমতো মাপে ও ডিজাইনে পড়তে অভ্যস্ত, তারা এখন ভিড় করছেন দর্জি দোকানগুলোতে।’
দর্জি দোকানিরা জানালেন, ‘এখন ব্যস্ততাটা একটু বেশিই। প্রতিবছর রমজান মাস শুরুতে কাজ শুরু করি। পূর্বে ঈদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করতে হতো, আর এখন সকাল থেকে গভীর রাত অবধি কাজ করতে হচ্ছে। কারণ, ঈদের মৌসুমে বাড়তি কাজের অর্ডার হয়। এতে বাড়তি আয়ও করা যায়।’
কলারোয়া বাজারের চৌরাস্তা মোড়ের দর্জিপট্টি নুর টের্লাসের মালিক রিপন বাবু জানান, আধুনিক ডিজাইনের রুচিসম্মত পোশাক তৈরি করি, প্রায় ২০ বছর হতে নির্ভরযোগ্য আমাদের প্রতিষ্ঠান।
মহিলাদের পোষাক তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ভীড় দেখা যায় বাজারের মেইন রোডে স্টাইল টেইর্লাসে।
এছাড়াও ইউনিক টেইলাসে পাঞ্জাবী, স্টুডেন্ট টেইলার্স, মিলন টেইলার্স, আশা টেইলার্স এ ক্রেতাদের ভীড় দেখা যায়।
এবারের ঈদে প্রতিটি প্যান্টের জন্য ৪০০ টাকা, শার্টে ৩০০ টাকা, পাঞ্জাবিতে ৪০০ থেকে ৩০০ টাকা পযন্ত মজুরি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান স্থানীয় দর্জিরা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)