কলারোয়ায় গাছে গাছে পেরেক ঠুকে নির্বাচনী বিলবোর্ড
গাছ মানুষের পরম বন্ধু। গাছ যেমন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, তেমনি আর্থিকভাবেও উপকার করে। কিন্তু আমরা গাছের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করে থাকি। প্রয়োজনে– অপ্রয়োজনে গাছকে হত্যা করার অলিখিত প্রতিযোগিতা চলছে যেন সর্বত্র। এ রকমই এক প্রতযোগিতা চলছে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধিনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন তফশীল অনুযায়ী প্রথম ধাপে ৩৪২টি ইউনিয়নের নির্বাচন আগামী ১১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে।
এর মধ্যে কলারোয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ঐ একই তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। ৩ই মার্চ তফশীল ঘোষনা হলেও আসান্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সড়কের পাশে সরকারী গাছে গাছে ঝুলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের প্রচার-প্রচারণার অসংখ্য সাইনবোর্ড-ব্যানার-ফেস্টুন ও বিজ্ঞাপন। এসব ব্যানার, ফেস্টুন, বিজ্ঞাপন ঝোলানো হয়েছে পেরেক ঠুকে। একেকটি গাছ যেন একেকটি বিজ্ঞাপন বোর্ড। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এভাবে গাছে পেরেক ঠুকা হচ্ছে, অথচ তা দেখার কেউ নেই। আসলে কারও এ বিষয়ে কোনো মাথাব্যথাই নেই।
সাইনবোর্ড-ব্যানার-ফেস্টুন ও বিজ্ঞাপনে এমনভাবে ছেয়ে গেছে যে কোনটা কোন গাছ, তা আর চেনার উপায় থাকে না। এটা খুবই বিপজ্জনক একটি ব্যাপার।
পরিবেশবিদদের মতে, পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয়, তা দিয়ে পানি ও এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় দ্রæত পচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এতে গাছ মারাও যেতে পারে। তাই কোনো গাছে পেরেক ঠোকা মানে ওই গাছের চরম ক্ষতি করা। যেখানে আমাদের বেশি করে গাছ লাগানো এবং গাছের পরিচর্যা করা প্রয়োজন, সেখানে আমরা উল্টো গাছের ক্ষতি করে চলেছি।
উপজেলা বন ও পরিবেশে বিভাগের কর্মকর্তা মুহাম্মদ ও শামছুর রহমান বলেন এভাবে রাজনৈতিক দলের প্রচার প্রচারণা গাছ ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে। একান্ত প্রয়োজন দেখা দিলে গাছের গায়ে তার বা রশি দিয়ে তা বেঁধে ব্যানার, ফেস্টুন লাগানো যেতে পারে। কোনোভাবেই পেরেক ঠোকা চলবে না।
তারা আরো বলেন, গাছে পেরেক ঠুকে সাইনবোর্ড না লাগানোর বিষয়ে ২০০২ সালের ৭ জুলাই জাতীয় সংসদে একটি আইন পাস হয়।এটা একটি অপরাধ। এছাড়া উপজেলার নাগরিক কমিটির সদস্য জাকির হোসেন বালেন, শুধু কাগজপত্রেই আইনটি আছে। বাস্তবে এর কোনো প্রয়োগ নেই। এই আইনটি সম্পর্কে সবাইকে জানাতে হবে এবং এর প্রয়োগ ঘটাতে হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টিতে উদ্যোগ নিতে হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)