গবাদিপশুর খামার, গাড়ির গ্যারেজ
কলারোয়ায় বিনা ভাড়ায় সরকারি কোয়ার্টারে দুই যুগ বসবাস!
কলারোয়া এলজিইডি অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর (এমএলএস) কর্মচারি রহিমা খাতুন এখন কোটিপতি। রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠা রহিমা চাপে চ্যাপ্টা উপজেলা প্রশাসন। বিনা ভাড়ায় সরকারি কোয়ার্টারে বছরের পর বছর বসবাস করা রহিমা দখলবাজিতেও সিদ্ধহস্ত।
প্রভাব খাটিয়ে সরকারি বাস ভবন দখল করে সেখানে গড়ে তুলেছে গরুর খামারও। নিয়ম নিতির তোয়াক্কা না করেই সরকারি স্থাপনায় বসে চালিয়ে যাচ্ছে একাধিক ব্যবসা বানিজ্য। আর এভবেই একের পর এক অনিয়ম করে রহিমা এখন কোটিপতি।
উপজেলা প্রশাসনের আবাসিক এলাকায় তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী রহিমা খাতুন প্রশাসনের সরলতার সুযোগ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মরত কর্মকর্তাদের আবাসিক কোয়াটার এখন দখল করে সেখানে তার নিজের মালিকানার প্রাইভেট কার ও ইজিবাইকের গ্যারেজ বানিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করে যাচ্ছে।
একই সাথে প্রশাসনকে থোড়াই কেয়ার করে আবাসিক এলাকাতে গড়ে তুলেছে গরু, ছাগলের খামার। চলছে হাঁস মুরগী পালনও। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সামনে নিজেকে অসহায় ও এতিম সন্তান আছে এমন পরিচয় দিয়ে লোক চক্ষুর আড়ালে দীর্ঘ ২০ বছর যাবত উপজেলা সমাজসেবা অফিসের সংলগ্ন গোলাপ নামে আবাসিক কোয়াটারে বিনা ভাড়া বসবাসসহ এসব ব্যবসা বানিজ্য করে আসছে। সেখানে গবাদি পশুর চারণ ক্ষেত্র পরিণত করেছে। উপজেলার গোটা আবাসিক এলাকা এখন রহিমার গো চারণভূমি। সেই অবৈধভাবে রাতের অন্ধকারে উপজেলার চত্বরে বিভিন্ন ফলজ অর্থাৎ আম, কাঠালের গাছের ডাল ও পাতা ভেঙ্গে গো-খাদ্য বানিয়ে দীর্ঘদিন যাবত পশু পালন করে আসছে।
এতে করে এখন আর তেমন উপজেলার গাছগুলোতে ফল-ফলাদি হয় না, পাশা-পাশি সরকারে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকার বনজ সম্পদ ধ্বংস ও প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার আবাসিক কোর্য়াটারের বসবাসরত কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, খামরের পশু-পাখির মল মূত্রের দূর্রগন্ধে আবাসিক এলাকায় বসবাস করার পরিবেশ মারাত্মক বিনষ্ট হচ্ছে।
এদিকের উপজেলা মসজিদের নিয়মিত কয়েকজন মুছাল্লিরা জানান, রহিমা খাতুনের দুটি গাভী প্রায় সময় মসজিদের সামনে বেঁধে রেখে ঘাস খাওয়ানো হয় এতে গাভীর মল মূত্র মাটিতে পড়ে থাকে, সে এটা পরিস্কারও করে না। এতে পায়খানার দুর্গন্ধ ছড়ায়। অনেকের রাতের ইশার নামাজ পড়তে আসলে মুছাল্লির পায়ে লেগে উজু নষ্ট হয়ে যায়। বেখিয়ালে পা পিছলে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও আছে। বারবার নিষেধ করার স্বত্বেও তিনি তা মান্য করেন না। মসজিদের মুছাল্লিদের বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে গরু বেধে রাখে।
এলাকাবাসী জানান, তার স্বামী হাফিজুর রহমান উপজেলার ইলেকটিশিয়ান ছিলেন। গত ১৯৯৫ সালে বিদ্যুতের শাট খেয়ে মারা যান। তার পরে তিনি তদানিন্তন সাবেক নির্বাহী কর্মকতার কাছে অসহায়তা দেখি বয়স কমিয়ে এলজিইডি অফিসে ৪র্থ শ্রেনীর চাকরী নেন। আজ থেকে ২৬ বছর আগে তার স্বামী মারা যান, সেখান থেকে অদ্যাবধি উপজেলা এলজিইডি অফিসে চাকুরী করে যাচ্ছেন,।তার বর্তমান বয়স ৫৮ বছর সে কোনদিন বদলি হয়নি। এখনও চাকুরী আছে, ১০ বছর পরে অবসরের যাবেন। তার দুই ছেলে মধ্যে আব্দুল কাদেরকে অনেক টাকা ঘুষ দিয়ে পৌরসভার ইলেক চাকরী নেন সড়কবাতি কাজ করেন। রাতের বেলা এলজিইডি অফিসের নৈশ প্রহরী কাজ করেন।
রহিমা খাতুন বলেন, আমি গত ৩০ বছল যাবত এভাবে পশুপালনসহ বসবাস করে আসছি। কেউ আমাকে কিছু বলে না। বর্তমানে কুরবানীর হাটে কয়েকটা পশু বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমানে ৫টি গরু, ৬টি ছাগল, ৬টি কবুতরসহ হাঁস মুরগী আছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো: নাজমুল হক জানান, ঘটনাটি জানা ছিলো না। আমি তদন্ত করে দেখব। ঘটনা সত্য হলে রহিমার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)