তালায় ব্যাংক এশিয়া ও পোস্ট মাস্টারের যোগসাজশে গ্রাহকের অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ
সাতক্ষীরায় তালায় ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় উদ্যোক্তা আতাউর রহমান এলিট ও তালা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্যের বিরুদ্ধে পরস্পরের যোগসাজশে গ্রাহকদের প্রায় অর্ধ-কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনার পর সম্প্রতি এজেন্ট ব্যাংকটির উদ্যোক্তা আতাউর রহমান এলিট পালিয়ে গিয়েছে এবং পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্য কৌশলে বদলী হয়ে গিয়েছে বলে জানা যায়।
তালার ঘোনা নারানপুরের কাশেম খাঁর স্ত্রী আসমা বেগম জানান, তিন বছর বছর আগে তিন লক্ষ টাকা পোস্ট অফিসে রেখেছিলাম ফিক্সড-ডিপোজিট করে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুনরায় আরও তিন বছরের জন্য চার লক্ষ টাকা আমাদের দুই ভাইবোনের নামে রাখার জন্য পোস্ট মাস্টারকে বলি।
এসময় তিনি বলেন, ব্যাংক এশিয়াতে ইজি ফরম জমা দিয়ে টাকা জমা দিয়ে আসেন। (৮ ই ফেব্রুয়ারী) আমার ভাই সোহাগের নামে দুই লক্ষ টাকা এবং আমার নামে দুই লক্ষ টাকা জমি দিয়ে পোস্ট মাস্টারকে রিসিভ দেখায়। তখন তিনি জানান, দুদিন পরে বই নিয়ে যাবেন। দুদিন পরে গেলে বলে যে, বই এখনও আসেনি, আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। এভাবে আমাদের ঘোরাতে থাকে। পরে শুনি সে নাকি বদলী হয়ে গেছে।
একই ধরণের কথা বলেন, চরগ্রামের মৃত আলাউদ্দিন শেখের মেয়ে ফারজানা খাতুন ও তার মা আলেয়া বেগম। তাদের থেকে ৫ই ফেব্রুয়ারী একই ভাবে ভুয়া ভাউসারের মাধ্যমে নয় লক্ষ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে জানান।
একই ভাবে টাকা জমা রাখতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন শাহাপুর গ্রামের সুফিয়া বেগম, হরিশ্চন্দ্রকাটি গ্রামের মান্নান গাজীর স্ত্রী কামেলা বেগম, হাজরাকাটি গ্রামের নিমাই কুমার শীল।
শাহাজাৎপুর গ্রামের শুকুর আলী গাজী জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারী তিন বছর মেয়াদে চার লক্ষ টাকা রাখতে গিয়েছিলাম পোস্ট অফিসে। এসময়ে পোস্ট মাস্টার এলিটের কাছে নিয়ে যায়। পরে এক সপ্তাহ পর বই নিতে গেলে পোস্ট মাস্টার বলে এখনও হয়নি। এর তিন সপ্তাহ পর তাদের আর পোস্ট অফিসে যেয়ে পাওয়া যায়নি। তিনি এবিষয়ে তালা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৪ সালে আতাউর রহমান এলিট তালা পোস্ট অফিসের উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন, পরে ২০২০ সালে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট হিসেবে আর্থিক লেনদেন শুরু করে। এবিষয়ে আতাউর রহমান এলিটের ফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তালা পোস্ট অফিসের সাবেক পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্য বলেন, টাকা আত্মসাৎ এর এসব বিষয় ফাও কথা। আমার কাছে গ্রাহকরা আসলে আমি অনলাইন ফরম পূরণের জন্য এলিটের কাছে পাঠাতাম। ওখানে লেনদেন করলে সেটা তাদের ব্যাপার। পোস্ট অফিসের সাথে ব্যাংক এশিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
তালা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মধুসূদন বাছাঢ় বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ এর ব্যাপারে অনেকে অভিযোগ নিয়ে আসছে, কিন্তু কত টাকা আত্মসাৎ হয়েছে এবিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।
ব্যাংক এশিয়ার বিজনেস অফিসার শারাফাত হোসেন বলেন, প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকা নানাভাবে ব্যাংক থেকে খোয়া গেছে বলে আমরা ধারণা করছি। গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)