শ্যামনগরে সড়ক নির্মাণে ব্যবহার হচ্ছে আমা ইট-ভাটার রাবিশ!
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে কালিন্দি নদীর মোড় পর্যন্ত ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ৩ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণে চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সড়কটির নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে আমা ইট ও ভাটার রাবিশ।
১০ সহস্রাধিক মানুষের চলাচলের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি নির্মাণে চরম দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হলেও কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ হয়ে আছে। অভিযোগ আছে, উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগসাজশে ঠিকাদার এই রাস্তাটি নির্মাণে চরম দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে রাস্তাটির কাজ শুরু করেন নলতার ঠিকাদার আব্দুর রাজ্জাক। ২ বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ৫ বছরেও রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেননি তিনি। বালু উত্তোলন ও এজিংয়ে নানা অনিয়ম শেষে ২০২২ সালের আগস্টে রাস্তায় ভাটার রাবিশ ও আমা ইটের খোয়া ছড়াতে শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সে সময় স্থানীয়দের রোষালনে পড়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ট্রাই ড্রাইভাররা। এরপর চলতি মাসের শুরুতে ফের একই কাজ করার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমের নজরে আসলে তিনি কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে দেন দরবার করে ফের কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তবে ব্যবহার করা হচ্ছে ভাটার সেই আমা ইট।
এদিকে স্থানীয়রা শংকা করছেন যে, এই ইট দিয়ে কাজ করা হলে রাস্তাটি তিন মাসও টিকবে না।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, রাস্তায় খোয়ার নামে যা দেওয়া হচ্ছে, তা বৃষ্টি হলেই ধুয়ে যাবে। পাকা রাস্তা নির্মাণের নামে যেন এখানে তামাশা করা হচ্ছে।
গনি মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, রাস্তায় যে রাবিশ দেওয়া হয়েছে, তা রোলার করার আগেই মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। রাস্তা তো তিন মাসও পার হবে না।
কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম বলেন, রাস্তার কাজ ঠিকভাবে করানো তো আমার একার দ্বারা সম্ভব না। উপজেলা প্রকৌশলীকে বিষয়টি জনানো হয়েছে। তারা নির্বিকার। আমা ও রাবিশ দিয়ে রাস্তা বানানোয় সেটি আমি কাজ বন্ধ করেছি। কিন্তু তাতেও মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। পাঁচ বছর ফেলানো ছিল, যেভাবে হোক হয়ে যাক। চেয়ারম্যান বন্ধ করলে তো মোটেই হবে না। কিন্তু মানুষ এটা বুঝছে না যে, রাস্তা ছয় মাসও টিকবে না। সরকারের প্রায় আড়াই কোটি টাকা পানিতে যাবে।
তিনি এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ঠিকাদার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, করোনার কারণে সময় মতো কাজ করতে পারেনি। এছাড়া সরকারিভাবে আমাদের যে বিল দেওয়ার কথা ছিল, সেটি না পাওয়ায় কাজ করতে পারছি না।
তবে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে দেব।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেনের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি রাগান্বিত হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে আমি আপনাদের কাছে জবাবদিহি করবো না।
সূত্র : বাংলানিউজ২৪
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)