বুধবার, জুন ৪, ২০২৫

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

স্রোত আর চাপে ঝুঁকিতে বাঁধ

জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে বন্যার পানিতে ডুবতে শুরু করে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলার নিচু এলাকা। দ্রুতই বন্যার পানি বিস্তৃত হতে থাকে। এখন জেলার সাত উপজেলার ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দী। তাদের মধ্যে মাত্র হাজার তিনেক মানুষ উঠেছে আশ্রয়কেন্দ্রে। বাকিরা মূলত আশ্রয় নিয়েছে বেড়িবাঁধে। অনেকে গ্রামীণ সড়ক, সেতু ও উঁচু স্থানে অবস্থান করছে। জেলার প্রায় ৬০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন অংশে ছাউনি, অস্থায়ী ঘর তুলে দিন কাটাচ্ছে হাজারো পরিবার।

বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষের খাওয়ার পানির ব্যবস্থা করতে স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী টিউবওয়েল। বাঁধে একদিকে নানা ধরনের স্থাপনার চাপ, অন্যদিকে পানির তীব্র স্রোত—দুয়ে মিলে বাঁধ এমনিতেই দুর্বল হয়ে আছে। বাঁধের বিভিন্ন অংশে ফাটল ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী ও বাঁধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্যার পানি নেমে গেলে বাঁধের বিভিন্ন অংশে বড় ধরনের ভাঙন দেখা দিতে পারে। বন্যার পর যা নতুন বিপদ ডেকে আনবে।

জামালপুরের মতোই বগুড়া, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, সিরাজগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর মানুষ আশ্রয় নেওয়ার পাশাপাশি নানা অস্থায়ী স্থাপনাও গড়ে তুলেছে। আশ্রয়হীন মানুষ বাঁধে গবাদিপশু, খড়সহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে অবস্থান করছে। খড় থাকায় ইঁদুরের আনাগোনা বাঁধে বেড়ে যাচ্ছে। ইঁদুর বাঁধে গর্ত তৈরি করছে, ফলে বাঁধ আরও বেশি নড়বড়ে হয়ে উঠছে। এ ছাড়া বন্যার পানির কারণে এমনিতেই ইঁদুর বাঁধের মধ্যে উঠে আসছে।

নদী বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ আইন অনুযায়ী বাঁধের মধ্যে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষেধ। বাঁধে সরকারি কোনো সংস্থার টিউবওয়েল স্থাপন করা ঠিক হয়নি। বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, অনেকে বাঁধে একবার আশ্রয় নেওয়ার পর স্থায়ীভাবেই সেখানে থাকতে শুরু করে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক দরিদ্র মানুষ হয়তো পুনর্বাসনের বাইরে থেকে যাবে। তারা শেষ পর্যন্ত বাঁধেই থেকে যাবে। তাই বাঁধে আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টিকে সরকারের নিরুৎসাহিত করা উচিত।

অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, বন্যার পানি নামতে শুরু করলে বাঁধের ভাঙন আরও বাড়বে। এ জন্য এখন থেকেই বাঁধের দুর্বল অংশ জরুরিভিত্তিতে মেরামতের উদ্যোগ নিতে হবে। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে বাঁধ নির্মাণের পর কেন তা রক্ষণাবেক্ষণ করা গেল না, সেটাও দেখতে হবে।

কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই আমনের বীজতলাসহ অন্যান্য ফসল চাষ শুরু করতে হবে। কিন্তু বন্যার পর বাঁধ ভেঙে আবার পানি ঢুকে পড়লে ফসলের জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে।

দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাঁধে ভাঙন দেখা দেওয়া বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এনামুল হক গতকাল মুঠোফোনে বলেন, দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে বাঁধে ভাঙন দেখা দেওয়ায় তা জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। তবে এখনো সামগ্রিকভাবে ভাঙনের পরিমাণ এবং ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হয়নি। বাঁধে বন্যার্তদের অবস্থান করা সম্পর্কে উপমন্ত্রী বলেন, ‘এটা মানবিক বিষয়। এ পরিস্থিতিতে আমাদের কিছু করার নেই।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত দেশের ৩০টি জেলার কোনো না কোনো এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৪১ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী অবস্থায় আছে। এর মধ্যে মাত্র ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। বাকিরা সড়ক, বাঁধ ও উঁচু স্থানে অবস্থান করছেন।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন গৃহবধূ জ্যোৎস্না বেগম। তাঁর বাড়িতে কোমরসমান পানি। তিনি বলেন, উপায় না দেখে বাঁধে উঠেছেন। এ ছাড়া বাঁধ বাড়ির কাছে, আশ্রয়কেন্দ্র দূরে।

মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে না গিয়ে কেন বাঁধে ঝুঁকিপূর্ণভাবে অবস্থান করছে, এ ব্যাপারে এক যুগ ধরে গবেষণা করছেন অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক আশরাফ দেওয়ান। তিনি বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নারীদের জন্য শৌচাগারের সুবিধা কম। এ ছাড়া গবাদিপশু এবং অন্যান্য সম্পদ রাখারও তেমন ব্যবস্থা নেই। একই সঙ্গে বাড়ির আশপাশের বাঁধে থাকলে বাড়িতে থাকা সম্পদগুলো বন্যার্ত মানুষ নজরদারির মধ্যে রাখতে পারেন। দূরের আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে তা পারে না। এবার যেহেতু বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, তাই আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের যাওয়ার আগ্রহ কম।

আশরাফ দেওয়ান বলেন, বাঁধ থেকে মানুষকে সরাতে হলে প্রতিটি এলাকায় কমিউনিটিভিত্তিক আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। একই সঙ্গে সেখানে গবাদিপশু অন্যান্য জিনিসপত্র রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এসব না করে বাঁধ থেকে অসহায় মানুষকে সরানো অমানবিক হবে।
সূত্র প্রথম আলো

একই রকম সংবাদ সমূহ

নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিতে অভিযোগ থাকলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিতে যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ যাত্রীদের যেকোনো অভিযোগেরবিস্তারিত পড়ুন

গুমের একেকটি ঘটনা ভয়াবহ, গা শিউরে ওঠার মতো: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দ্বিতীয় ইন্টেরিম রিপোর্ট জমা দিয়েছে গুমবিস্তারিত পড়ুন

এখন থেকে ভুল সংবাদ পরিবেশন করলে ব্যবস্থা: উপ-প্রেস সচিব

এখন থেকে ভুল সংবাদ পরিবেশন করলে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন প্রধানবিস্তারিত পড়ুন

  • শেখ মুজিব, তাজউদ্দিনসহ যুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের খবর ভুয়া: উপদেষ্টা ফারুকী
  • জনতার হাতে আটক বিএসএফ সদস্যকে পতাকা বৈঠকে হস্তান্তর
  • মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের ভুয়া খবরে বিভ্রান্তি
  • শেখ মুজিবসহ জাতীয় ৪ নেতার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিলের খবর সঠিক নয় : ফারুক-ই-আজম
  • অনুপ্রবেশ করায় জনতার হাতে ধরা বিএসএফ সদস্য, নেপথ্যে যে ঘটনা
  • সাতক্ষীরায় ট্রেন লাইন বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান
  • ১২০০ বস্তা চাল নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে, ঘটনাটি চাঁদপুরের শাহরাস্তি : উপদেষ্টা আসিফ
  • সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ‘বড় সুখবর’
  • কলারোয়া সীমান্তে ৬ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর বিএসএফের
  • অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনই সরকারের প্রধান অঙ্গীকার: বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা
  • জাতীয় বাজেট ঘোষণা
  • দাম কমতে পারে যেসব পণ্য-সেবার