এসি গাড়িতে করে ১৫ সেনা কর্মকর্তা কারা হেফাজতে, যা বললেন আইজি প্রিজন

মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলার আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে কারা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান লেখা সবুজ রঙের গাড়িতে তাদের কারা হেফাজতে নেওয়া হয়।
জানা গেছে, এটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ১৫ সেনা কর্মকর্তা সেনানিবাসে বাশার রোডের সাব-জেলেই থাকবেন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার এবং জেলার সাব-জেলটি তদারকি করবেন।
এছাড়া সার্বক্ষণিক একজন ডেপুটি জেলার সেখানে ডিউটি অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাব-জেলে নিয়োজিত করা হয়েছে। কারাবিধি অনুযায়ী অন্যান্য ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের মতোই সুবিধা পাবেন এখানকার বন্দিরা।
আইজি প্রিজন্স আরও বলেন, আসামিদের নিরপত্তা বিবেচনায় পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আধুনিক গাড়ি চাওয়া হয়েছিল। এ কারণে আমরা পুলিশকে ওই গাড়িটি দিয়েছি। এ ধরনের গাড়ি আমাদের মোট ছয়টি আছে। প্রতি শুক্র ও শনিবার ভিআইপি বন্দিদের কাশিমপুর থেকে আনা-নেওয়ার জন্য এসব গাড়ি ব্যবহার করা হয়।
অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. তানভীর হোসেন বলেন, আদালত থেকে তাদের সেনানিবাসের সাব-জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তারা থাকবেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার আদালতে হাজির করা হলে কর্মকর্তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আদালতের আদেশের পর তাদের ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোডে সাব-জেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে সকাল সোয়া ৭টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সবুজ রঙের একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রিজন ভ্যানে অভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আনা হয়। তারা সবাই সাধারণ পোশাকে ছিলেন। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
এদিকে বুধবার যে গাড়ি দিয়ে আসামিদের আদালতে নেওয়া হয়, সেই বিলাসবহুল গাড়িটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিয়ম অনুযায়ী, আসামিকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের পর সে কারা অধিদপ্তরের গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে থাকে। কিন্তু বুধবার আসামিদের (১৫ সেনা কর্মকর্তা) কারাগারে পাঠানোর আগেই আধুনিক গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার এসএন নজরুল ইসলাম বলেন, আসামিদের আমাদের হেফাজতে আদালতে এবং আদালত থেকে সাব-জেলে নেওয়া হয়েছে। তবে গাড়িটি আমাদের না। আসামিরা ভিআইপি বিবেচনায় কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ওই গাড়িটি নেওয়া হয়েছে।
কারা সূত্র জানায়, সাব-জেলে থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তার জন্য তিনবেলা খাবাবের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাবারের মেন্যুতে সকালের জন্য আছে রুটি ও সবজি। দুপুরে থাকছে ডাল, ভাত, সবজি ও মাছ/মাংস। রাতে থাকছে মাছ/মাংস ও সবজি। সাব-জেলের বন্দিদের জন্য কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকছে-জানতে চাইলে ওই সূত্র জানায়, তাদের রুমে একটি বিছানা, চেয়ার, একটি টেবিল, একটি পত্রিকা, একটি ফ্যান আছে। তাদের জন্য চা পানের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বসেই সাব-জেলের তদারকি করবেন জেল সুপার ও জেলার। এছাড়া বাকিরা সেখানেই সশরীরে অবস্থান করে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের নেতৃত্বে আছেন তিনজন ডেপুটি জেলার। ডেপুটি জেলাররা তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে ডেপুটি জেলাররা স্থায়ী কেউ নন। কয়েকদিন পরপর তাদের পরিবর্তন করা হবে।
জানতে চাইলে এআইজি (প্রিজন্স) জান্নাতুল ফরহাদ বলেন, বুধবার আমরা আসামিদের পুলিশের কাছ থেকে বুঝে পেয়েছি। আসামিরা এখন আমাদের অধীন সাব-জেলে আছেন। পরবর্তী সময়ে যখন তাদের আদালতে হাজিরা থাকবে, তখন পুলিশ হেফাজতে আদালতে নেওয়া হবে। ফের আমাদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী তাদের খাওয়াদাওয়াসহ সব ধরনের ব্যবস্থা করছে কারা কর্তৃপক্ষ।
তিন মামলায় ২৫ জন সাবেক-বর্তমান সেনা কর্মকর্তাসহ ৩২ জন আসামি। তাদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়।
১১ অক্টোবর ঢাকা সেনানিবাসের এক মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৫ জন বর্তমানে সেনা হেফাজতে আছেন। ১২ অক্টোবর ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে সরকার
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
ভুল স্বীকার করলেন হাসিনাপুত্র জয়
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে বাংলাদেশ থেকে পলাতক সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলেবিস্তারিত পড়ুন
নভেম্বরেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান, আশা সালাহউদ্দিনের
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী নভেম্বরের মধ্যেই দেশে ফিরবেন বলে আশাবিস্তারিত পড়ুন
বাতিল ইভিএম, ফিরল ‘না ভোট’
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগতবিস্তারিত পড়ুন
