কফি– ওজন ও চর্বি কমাতে সহায়ক
কফি পান ওজন কমাতে ও চর্বি কাটাতে সহায়ক। দিনে চার কাপ কফি গ্রহণ দেহের চর্বি চার শতাংশ কমাতে সহায়তা করে। তবে মাথায় রাখতে হবে, এক কাপ কফিতে শূন্য ক্যালরি থাকে। এক কাপ চিনিসহ ক্রিম কফিতে ৮০ ক্যালরি থাকে। তাই দিনে দুই কাপ কালো কফি খাওয়া বছরে ১৪ পাউন্ড ওজন বাঁচাতে সহায়কএকজন প্রাপ্তবয়স্কের দিনে ৪০০মিলির বেশি কফি খাওয়া একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়।চকলেটকোকো বিনস-এ প্রাকৃতিক ক্যাফেইন থাকে। ফলে আপনার পছন্দের চকোলেটেও যথেষ্ট পরিমাণে ক্যাফেন আছে। মিল্ক চকোলেটে ক্যাফেইনের পরিমাণ কম থাকলেও, ডার্ক চকোলেটে ১০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেন মজুত থাকে। এমনকি চকোলেট আইসক্রিমেও থাকে ক্যাফেন।পেইনকিলারেও থাকে ক্যাফেন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে সামান্য পরিমাণে ক্যাফেইন ব্যাথা দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।কিছু কিছু ব্র্যান্ডে চ্যুয়িং গামে যে পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে তা এক কাপ কফির সমতূল্য। পরের বার কোনও মাউথ রিফ্রেশিং গাম কেনার আগে একবার লেবেল ভালো করে দেখে নেবেন।কফি খাওয়ার কি কি পদ্ধতি রয়েছে ?
কফি প্রস্তুতির বিভিন্ন ধরন (যেমন, এসপ্রেসো, মোকা, কাপ্পুচিনো ইত্যাদি)-গুলির মধ্যে পার্থক্য কী?
বিভিন্ন ক্যাফে অথবা রেঁস্তোরাতে তে যে নানা ধরনের কফি বিক্রি হয় সেগুলো ঠিক কি সে ব্যাপারে অনেকেরই পরিষ্কার ধারণা নেই। তার ফলে তাঁরা ঠিক করতে পারেনা কোন কফিটি তাঁদের পছন্দের হবে।
১) এসপ্রেসো
সহজ সমীকরণ: কফি পাউডার + সামান্য জল = এসপ্রেসো। কফি পাউডারের মধ্যে সামান্য জল দিয়ে এসপ্রেসো কফি বানানো হয়। এক্ষেত্রে জলের পরিমাণ এতটাই কম হয় যে (২৫-৩০ মিলি) এসপ্রেসো কফি বেশ ঘন হয়।এটি আসলে অনেক ধরনের কফি প্রস্তুতির ভিত্তি বা বেস।
২) আমেরিকানো
সহজ সমীকরণ: কফি পাউডার + জল = এসপ্রেসো। এসপ্রেসোতে পর্যাপ্ত জল দিয়ে পাতলা করলেই আমেরিকানো তরি হয়। তার মানে কতটা জল ব্যবহার করা হচ্ছে সেটাই এসপ্রেসো ও আমেরিকানোর মধ্যে পার্থক্য সূচিত করে। আগেই বলেছি, এসপ্রেসো তে ২৫-৩০ মিলি জল মেশানে হয়, আমেরিকানোর ক্ষেত্রে সেই জলের পরিমাণ ৭৫-১০০ মিলি হতে পারে। বলা হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুুদ্ধের সময় আমেরিকান সৈন্যরা এই কফি তৈরি করত যাতে তা বেশিক্ষণ থাকে। যুদ্ধ শেষে আমেরিকান বারিস্তারা এই কফি বিক্রি করতে শুরু করে।
৩) ফ্ল্যাট হোয়াইট।
সহজ সমীকরণ: এসপ্রেসো + দুধ = ফ্ল্যাট হোয়াইট। এসপ্রেসোতে দুধ যোগ করা হলে সেটির নাম হয়ে যায় ফ্ল্যাট হোয়াইট।এই কফির উৎসস্থল নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। রাতে জেগে থাকার জন্য এই কফি খুব কাজের।
কীভাবে বানাবেন এই কফি?
আধা কাপ গরম জলে মিশিয়ে নিন এক টেবিল চামচ কফি। তবে কফির পরিমাপ একেবারেই আপনার পছন্দকে মাথায় রেখে। তারপর সেই কফিতে মিশিয়ে দিন এক চা চামচ ঘি, মাখন ও নারকেল তেল। ভাল করে নাড়িয়ে নিন কফি। অল্প করে কফির মধ্যে মিশিয়ে নিন দাড়চিনি পাউডার। পরিবেশন করুন একেবারে গরম গরম।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাখন, ঘি এবং নারকেল তেল কফির সঙ্গে মিশে এক ম্যাজিক রসায়নের রূপ পায়। আর সেই ম্যাজিকই সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে কফির মধ্যে দিয়ে। তবে বিশেষজ্ঞরা সাবধান করছেন, একটানা এই কফি পান না করতে। কারণ, যাদের গ্যাস-অম্বলের সমস্যা রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে এই কফি নিয়মিত খাওয়াটা মোটেই উচিত নয়। আর হ্যাঁ, ভুলেও এই কফি খালি পেটে খাবেন না ! স্বাস্থ্যের উপকার কিভাবে হয়?
অ্যাস্থমা, হৃদপেশী সংক্রান্ত রোগ কমাতে তথা ক্যান্সার নিরাময়েও এই কফি অত্যন্ত উপকারী। আর সেজন্যই বহু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এই কফি রেকমেন্ড করে থাকেন।
কখন পান করা উচিত বুলেটপ্রুফ কফি?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন সকালে উঠে চায়ের বদলে বুলেটপ্রুফ কফির পেয়ালা নিয়ে বসা উচিত। ব্রেকফাস্টের জায়গাতেও এই কফি পান করা যেতে পারে। তাতে অবশ্যই মেদ ঝরবে বলে দাবি, বিশেষজ্ঞদের। এনার্জি বর্ধক এই কফির মধ্যে ক্যাফিন থাকে বলে, এটি দিনভর আপনাকে চাঙ্গা রাখে। এনার্জিতে ভরপুর থাকা যায়। যার ফলে ছুটোছুটি জাতীয় কাজ করতে সমস্যা হয় না দিনভর।
কীভাবে ওজন কম হয় এই কফিতে?
বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই কফিতে এমনসব উপকরণ রয়েছে যা মেদকে পুড়িয়ে দেয়। ফলে সহজে ওজন কমে। নারকোল তেল জাতীয় সহজপাচ্য ফ্যাটকে এই কফি ঝরিয়ে দিতে সক্ষম।
লেখকঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লা, পুষ্টিবিদ, সাংবাদিক ও কলেজ শিক্ষক, কুমিল্লা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)