কলারোয়ায় ইটালীতে রপ্তানীকৃত টালী কারখানা পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক
জাহাঙ্গীর হোসেন: সাতক্ষীরার কলারোয়ার তৈরি মাটির টালি বিশ্বের ১৩টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে অনেক আগে থেকেই। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রয়েছে এই টালির বেশ কদর। সময়ের সাথে সাথে হারাতে বসা এই টালি তৈরির কারখানার সংখ্যা পৌঁছেছে মাত্র ১৩টি তে। ঢাকা বাণিজ্য মেলায় গত ২১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী এক বক্তব্যে সাতক্ষীরার এই টালি শিল্পের কথা তুলে ধরেন।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) এই টালি শিল্প দেখতে কলারোয়া আসেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।
উপজেলার শ্রীপতিপুর গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেনের মালিকানাধীন কলারোয়া টালি ঘর নামের কারখানাটি পরিদর্শন করেন তিনি।
এ সময় জেলা প্রশাসক কারখানাটি ঘুরে দেখেন এবং এই শিল্প তৈরির সাথে জড়িতদের সাথে ঘন্টা ব্যাপি মতবিনিময় করেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানিতে নানান জটিলতা, অর্থাভাব আর বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে দিন দিন এই শিল্পকে হারিয়ে যাওয়া এবং বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিকায়ন করে এই শিল্পকে বাঁচানো যায় সেটা নিয়ে তিনি সরকারের উপরের মহলের সাথে আলোচনা করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কলারোয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাতুল ইসলাম, ৩নং কয়লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ সোহেল রানা, পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বাশারাত হোসেন, হিসাব সহকারী বেনজির হোসেন প্রমুখ।
টালি ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, ‘উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সমস্যার কারণে এই এলাকার মুরারিকাটি ও শ্রীপতিপুর এলাকায় ৪১টি কারখানার মধ্যে সচল আছে মাত্র ১৩টি। বর্তমানে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ১ হাজার শ্রমিকের অবস্থা করুণ।’
তিনি আরো জানান, ‘এখানকার টালি নিয়মিত রপ্তানি হয় ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। একে একে গড়ে ওঠে ৪১টি বিশাল টালি কারখানা। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে নানান প্রতিকূলতা আর অসহযোগিতার অভাবে ধংসের দ্বার প্রান্তে পৌছে গেছে সেই ঐতিহ্যবাহী টালি শিল্প।’
এই জন্য এই শিল্পকে বাঁচাতে তিনি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের নিকট সহযোগীতা কামনা করেছেন।
পরিদর্শন শেষে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন- ‘কলারোয়ায় তৈরি টালি বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। এতে করে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। এই শিল্পকে আর একটু আধুনিক করে আরো কিভাবে উন্নয়ন করা যায় এটি দেখতে এসেছি। যারা এই টালি উৎপাদন করেন তাঁদের সাথে কথা বলেছি। এই টালি কিভাবে আরো উৎপাদন বাড়ানো যায়, রপ্তানি বাড়ানো যায়। তাতে করে অনেক বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে, আমাদের অর্থনৈতিতে একটা অবদান রাখবে এই টালি শিল্প। পুরো প্রক্রিয়াটি দেখলাম এটি তৈরিতে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। উৎপাদনকারিদের সাথে কথা বলেছি যাতে করে এটি পরিবেশবান্ধব করা যায়। ব্যাংক থেকে যাতে করে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে, শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেয়া যায় কিভাবে এই ধরণের বিষয় নিয়ে তাদের সাথে কথা হয়েছে। আর সাতক্ষীরা জেলার যে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান নির্মিত হচ্ছে বা হবে প্রয়োজন অনুযায়ী এই গুলো ব্যবহার করলে এই শিল্প লাভবান হবে, এই শিল্প আরো এগিয়ে যাবে। তাঁদের নিয়ে আমার পরিকল্পনা করছি কিভাবে এই টালি শিল্প আরো আগিয়ে নেয়া যায়।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)