কালিগঞ্জের জেলে পরিবার নিরাপত্তাহীনতায়, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন
কালিগঞ্জের জগবাড়ীয়া খাল উন্মুক্ত’র দাবীতে আন্দোলনকারী সংখ্যালঘু পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের জেলা সমিতির সভাপতি শ্রী কুমার মন্ডল।
তিনি বলেন-আমিসহ কালিগঞ্জের জেলে পরিবারের সদস্যরা আপনাদের দারস্থ হয়েছি মিথ্যা মামলাসহ নানান হুমকী ধমকীর প্রতিবাদ ও ভুমিদস্যুদের কবল হতে সরকারী জলমহল উন্মুক্তের দাবী নিয়ে। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের অতি জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারী জলমহল বিএনপি নেতা আজিজ শেখসহ তার দোসররা দীর্ঘদিন ভূয়া কাগজপত্রের বলে জবরদখল করে আসছে। ভুমি সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের নাকের ডগায় খালের মাঝখানে বাঁধদিয়ে মাছচাষ করছে। খালটি উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ভেগেরহাট খোলা থেকে বামনহাট পযর্ন্ত ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তীর্ণ। ঐতিহ্যবাহী জগবাড়ীয়া খালটি নামে-বেনামে দখল করে এর রূপ ও নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে পরিকল্পিত ভাবে। আর এভাবেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখের সামনেই ধীরে ধীরে দখল হয়ে যাচ্ছে জনগুরুত্বপুর্ণ সরকারি খালগুলো। যেন বলার কিছু নেই, দেখারও কেউ নেই। যে যার মতো দখল করে নিয়েছে জনগুরুত্বপুর্ণ সরকারি সম্পত্তি। খালটি দীর্ঘদিন যাবৎ উন্মুক্ত ছিল বর্তমানে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীরা খালটি নিজেদের জায়গা দাবী করে দখল করে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৪০ বিঘা জমি দখলে নিয়েছে উল্লেখিত ভুমিদস্যরা। এসব প্রভাবশালীদের খাল দখলের কারণে জগবাড়ীয়া খালটি বিলীন হতে বসেছে।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় গ্রামবাসী রমেশ মন্ডল, সন্ন্যাসি মন্ডল, তরু মন্ডল, ভারতী মন্ডলের সহ একাধিক ব্যক্তির পূর্ব পুরুষ থেকে আমরা এই খালটিতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলাম। এই খালটির প্রায় ৬ বিঘা এরিয়া জুড়ে খালের মাঝখান হতে খুঁটি পুঁতে বেড়া দিয়ে দখল করা শুরু করেছিল ঐ এলাকার বানিয়াপাড়া গ্রামের ভুমিদস্যু সব্বান আলী শেখের দুই ছেলে সাইদুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলাম। যা ইতিমধ্যে আপনাদের লিখনীর ফলে স্থানীয় প্রশাসন ঘেরাবেঁড়া উচ্ছেদ করে দিয়েছেন। তবে বানিয়াপাড়া খালের প্রায় ২৭ বিঘা এরিয়া জুড়ে ২০১৩ সাল থেকে দখল করে সেখানে মাছের প্রজেক্ট তৈরি করেছে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি, আলহাজ্ব আক্কাস আলী শেখ এর পুত্র ভুমিদস্যু আঃ আজিজ শেখ ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নুর ইসলাম শেখ। তারা খাল দখলে রেখে আছে বহল তবিয়তে। তাদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতন, সরকারী সম্পত্তি জবরদখল, সহিংসতা সৃষ্টিকরা, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ও আইন অমান্যকরাসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ রয়েছে। একটা সময় এই আজিজ শেখ সন্ত্রাসীর রাজত্ব কায়েম করেছিল কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে। ভুমিদস্যু এই আজিজ শেখ কোন মৎস্যজীবি সমিতির সদস্য কিংবা ব্যক্তি নন তাহলে তিনি এটি কিভাবে ইজারা নিলেন কিভাবে? ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা জালাল উদ্দীনসহ কতিপয় কর্তা ব্যাক্তিদের সহযোগিতায় হীনস্বার্থ চরিতার্থ করে আসছে আজিজ ও তার সহোদর ধুরন্ধর নুর ইসলাম। তাদের বিরুদ্ধে সহজে কেহ মুখ খুলতে চায়না, তাদের আছে পেটুয়া বাহিনী ও সন্ত্রাসী বাহিনী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ইতোপূর্বে খাল দখলের খবরটি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ায় আমাদের নানান হুমকী ধমকি দিচ্ছে আজিজ বাহিনী। এমনকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পরিকল্পিত ভাবে খাল উদ্ধারে অন্যতম সহযোগী বানিয়াপাড়া গ্রামের জমাত আলী গাজীর পুত্র কেরামত আলীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানী মুলক সাজানো মামলা দিয়েছে। আমাকেও রেহাই দিবে না বলে আস্ফালন করছে। কেরামত আলীর বিরুদ্ধে মামলাটি প্রত্যাহারের দাবী জানাচ্ছি। সেই সাথে ষড়যন্ত্র মুলক মামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা গনমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি। আমরা চাই জাল যার জলা তার। ভুমিদস্যুদের হাত হতে সরকারী খাস সম্পত্তি দখলমুক্ত হোক। আমার পুর্ব পুরুষরা যেভাবে জগবাড়িয়া খালে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেছে, আমরাও চাই ঐ খালে উন্মুক্ত অবস্থায় মাছ ধরে সংসার নির্বাহ করতে।
সংবাদ সম্মেলনে ভুমিদস্যুদের কবল হতে প্রশাসন দ্রুত খালটি উদ্ধার করে জনগনের জন্য উন্মুক্ত করার পাশাপাশি সরকারি সম্পত্তি জবরদখল কারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
এসময় জেলে সমিতির সেক্রেটারী রবিন মন্ডল, সহ-সভাপতি রমেশ মন্ডল, দিবাশ কুমার, প্রশান্ত মন্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)