খুলনা-সাতক্ষীরা ভঙ্গুর মহাসড়কে মাছ ছেড়ে প্রতীকী প্রতিবাদ


দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রধান যোগাযোগ লাইফ লাইন খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক এখন ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। কোথাও গর্ত, কোথাও খানাখন্দ, আবার কোথাও জমে থাকা পানিতে কর্দমাক্ত জলাশয়—এ যেন আধুনিক কোনো সড়ক নয়, জনজীবনের জন্য এক মরণফাঁদ। প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন এই সড়কে চলাচল করছে আতঙ্ক নিয়ে। দুর্ঘটনা ঘটছে নিয়মিত, প্রাণহানির খবর আসছে বারবার। অথচ কর্তৃপক্ষের নীরবতা যেন জনভোগান্তিকে আরও গভীর করে তুলছে।
এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভিন্নধর্মী কর্মসূচি পালন করেছে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর খুলনা মহানগর শাখা।
নগরীর জিরোপয়েন্ট সংলগ্ন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক কেন্দ্রের সামনের ভাঙা সড়কে মাছ ছেড়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানায় সংগঠনটি। উদ্দেশ্য ছিল পরিষ্কার—রাস্তা এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে, যেন মাছ ছাড়া যায়!
প্রতীকী এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ও মহানগর নিসচার উপদেষ্টা প্রফেসর মো. সামিউল হক। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মুন্না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ সাংবাদিক, শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ।
সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, মাত্র পাঁচ বছর আগে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মহাসড়ক আজ ভয়ংকর অবস্থায় নেমে এসেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে প্রভাবশালী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মোজাহার এন্টারপ্রাইজ’। তারা ২০২০ সালের জুনে কাজ শেষ করলেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় আজ এ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
জিরোপয়েন্ট থেকে চুকনগর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার সড়কের কোথাও বড় গর্ত, কোথাও খানাখন্দ, আবার কোথাও জমে থাকা পানিতে গাড়ি উল্টে যাচ্ছে। স্থানীয়দের ভাষায়—এই মহাসড়ক এখন “মরণফাঁদ”।
বক্তারা বলেন, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা—সবকিছুর সঙ্গে জড়িত এই সড়ক। অথচ প্রতিদিন মানুষকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।
তাদের অভিযোগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) চরম উদাসীনতায় কোনো কার্যকর সংস্কার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বরং দায়সারা কাজ করে জনদুর্ভোগকে আরও বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে।
সভায় বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে এলাকাবাসী আরও কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। প্রয়োজনে তারা সড়ক ভবন ঘেরাও কর্মসূচিসহ সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দেবেন।
প্রতীকী কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষ জানায়, প্রতিদিন সড়কে চলাচল করা মানে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পথ পাড়ি দেওয়া। তারা বলেন, “মাত্র পাঁচ বছর আগে কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাস্তা বানানো হলো, অথচ এখন এর কোনো অস্তিত্ব নেই। তাহলে টাকা কোথায় গেল?”
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)

একই রকম সংবাদ সমূহ

সাতক্ষীরায় রইচপুরে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জশনে জুলুস বর্ণাঢ্য র্যালি
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে সাতক্ষীরার পৌর সাত নাম্বার ওয়ার্ড রইচপুরে একবিস্তারিত পড়ুন

১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবন খুলছে পর্যটক ও জেলেদের জন্য
এবিএম কাইয়ুম রাজ: প্রাণপ্রকৃতি রক্ষায় টানা তিন মাস বন্ধ থাকার পর আবারওবিস্তারিত পড়ুন

গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিনিধি: খুলনায় জেলা পর্যায়ে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ওবিস্তারিত পড়ুন