চামড়া পাচার রোধে বেনাপোলে সতর্কতা
ভারতে চামড়া পাচার রোধে বেনাপোল সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এজন্য সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট এরই মধ্যে বিজিবির লোকবলও বৃদ্ধি করা হয়েছে। বন্দর এলাকাসহ স্থল, ও রেলপথে কঠোর নজরদারি বাড়িয়েছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিজিবির পাশাপাশি ভারত সীমান্তেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। চলতি মাসের ১লা আগষ্ট থেকে সীমান্ত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়।
এবছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ থেকে ৪০ টাকা। আর ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ২৮ থেকে ৩২ টাকা। অপরদিকে ছাগলের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ -১৫ টাকা প্রতি বর্গফুট। গতবছর এই চামড়ার দাম ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা। একারনেই এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ীরা ভারতে চামড়ার দাম বেশী হওয়ায় সীমান্ত পথে পাচারের জন্য প্রতি বছর চেষ্টা করে থাকে। এসব চামড়ার দুই একটি চালান আবার ধরাও পড়ে।
সুত্র মতে বেনাপোল ও শার্শার পুটখালী, গোগা, কায়বা,অগ্রভুলোট, রুদ্রপরু,দৌলতপুর, গাতিপাড়া, ঘিবা, সাদিপুর, বড় আঁচড়া, কাশিপুর ও রঘুনাথপুর সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।
সুত্র জানায় খুচরা ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা অবশ্য নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনে মজুদ করে রাখছেন। তারা স্থানীয় বাজারে চামড়া না তুলে নিজস্ব কায়দায় তা সংরক্ষণ করে করছেন। এই চামড়া বাংলাদেশে রাখা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ পাশের দেশ ভারতে চামড়ার দাম অনেক বেশি। ফলে চোরাকারবারিরা চামড়া পাচারের চেষ্টা করবেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের চাহিদার মোট চামড়ার মধ্যে কোরবানি ঈদে প্রায় অর্ধেক সংগ্রহ করা হয়। বাকি অর্ধেক কাঁচা চামড়া সংগ্রহ হয় বছরজুড়ে। চামড়া ব্যবসায়ীদের মতে, ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের পশুর চামড়ার গুণগত মান উন্নত। প্রতিবেশী দেশের পশুর চামড়া তুলনামূলক নিম্নমানের হওয়ায় এদেশীয় চামড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ভারতে। চোরাকারবারিরা প্রতিবেশী দেশে চামড়া পাচার করে ওই অর্থ দিয়ে ভারত থেকে অন্যান্য মালামাল কিনে আনার চেষ্টায় থাকে। কোরবানি ঈদের সময় পশুর চামড়ার দাম বাস্তব সম্মতভাবে নির্ধারণ করা হলে পাচারের প্রবণতা কমে। পাশাপাশি স্বস্তিতে থাকেন ব্যবসায়ীরাও।
এ বিষয় বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান বলেন, সীমান্ত এলাকা দিয়ে শুধু চামড়া নয় অবৈধ পথে যে কোন পণ্য পাচার রোধে পুলিশ সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় যেহেতু বাংলাদেশের চেয়ে ভারতের চামড়ার বাজার বেশী, সেই জন্য সেদিকে যাতে ঝুকে পড়ে চামড়া পাচার করতে না পারে চোরাই সিন্ডিকেটের সদস্যরা সেদিকে পুলিশের নজরদারী থাকবে।
বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের সুবেদার আব্দুল ওহাব বলেন, কোরাবানির চামড়া যাতে চোরাকারবারিরা ভারতে পাচার করতে না পারে সে জন্য বিজিবি কড়া সতর্ববস্থায় রয়েছে।
৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল সেলিম রেজা বলেন, সীমান্ত দিয়ে ভারতে চামড়া পাচার রোধে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে বিজিবি পোস্টে কড়া নজরদারি রযেছে। বিশেষ করে রাতে টহল ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। যাতে কেউ অবৈধভাবে দেশের অভ্যন্তর থেকে ভারতে চামড়া পাচার করতে না পারে সেজন্য ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তগুলো চিহ্নিত করে টহল ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবত থাকবে বলে জানায় তিনি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)