ঝিকরগাছা কৃষি বিভাগের প্রচেষ্টায় কারেন্ট পোকার ক্ষতি কমেছে ৮০ ভাগ
হঠাৎ করেই আবহাওয়া পরিবর্তন, কৃষকের দুশ্চিন্তা শুরু। মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলতে পারবেন কিনা কোন নিশ্চয়তা নেই। একদিকে হতাশা অন্য দিকে পোকার আক্রমণ। চরম দিশেহারা কৃষক।
বিভিন্ন কীটনাশক কোম্পানীর চটকদার বিজ্ঞাপন আর বিক্রেতার কথার ফুলঝুড়িতে নিম্ন মানের কীটনাশক সস্তায় পেয়ে চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষক।
ধান চাষের সবচেয়ে ক্ষতিকর পোকা বাদামী গাছ ফড়িং (ব্রাউন প্লান্ট হপার ) বা স্থানীয় ভাষায় কারেন্ট পোক। ধানের কাইচ থোড় আসা থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত যে কোন সময় এটির আক্রমণ হতে পারে। সতর্ক না হলে জমির ১০০ শত ভাগ ফসল ধ্বংস হতে পারে। এমনকি নষ্ট হওয়া জমির ধান গাছ পশু খাদ্য হিসাবেও ব্যবহার করা যায়না।
হঠাৎ করেই আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে এবার উপজেলাধীন মাগুরা ইউনিয়নের সন্তোষনগর, মিশ্রীদেয়াড়া, আংগারপাড়া, আশিংড়ী, বহিরাম্ পুর , জয়রামপুর, কায়েমকোলা, মাগুরার শতকরা ৭০ ভাগ জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ হয়।
সন্তোষনগর গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক, মহিদুল ইসলাম, সেলিম হোসেন, আজাদ আলী, বাবু , জয়দেব, আসমত আলী, শামীম হোসেন, ওমর আলী সহ অনেকের জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ হয়। বিভিন্ন কীটনাশকে ভালো ফলাফল না পেয়ে কৃষি অফিসের সহায়তা নেন এবং পরবর্তীতে তারা ভালো ফলাফল পেয়েছেন বলে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন।
এক কৃষকের ফোন কলে বুধবার সকাল থেকে শুরু করে রবিবার বিকাল পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন মাঠে কৃষি কর্মকর্তারা এ পরিস্থিতিতে করণীয় জানাতে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান পেতে পাইমেট্রাজিন গ্রুপের কীটনাশক, উন্নত সংস্করণ হিসাবে পাইমেট্রাজিন এবং নিটেনপাইরাম গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। শতকরা ৮০ ভাগ ধান পেকে গেলে কেটে ফেলা, ধান ক্ষেত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, সারের সুষম বন্টন নিশ্চিত করা, লোগো পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপন সহ নানা বিষয়ে পরামর্শ দেন।
উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম, গদখালী ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম এবং মাগুরা ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শান্ত সাহার সমন্বয়ে কয়েকদিনের এ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, ‘যে কোন ফসল কৃষকের কাছে তার সন্তানের চাইতে কোন অংশে কম নয়।জনবল সঙ্কট থাকলেও কৃষকের সন্তান সমতূল্য ফসল বাঁচাতে কৃষি বিভাগ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে। এক কৃষকের কল পাওয়ার সাথে সাথে আমরা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের মাঠে পাঠিয়ে দিয়েছি সাথে ওই এলাকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কোম্পানীর বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট না হয়ে কৃষি বিভাগের সহায়তা নিয়ে সর্বোচ্চ ফলাফল নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন এ কৃষি কর্মকর্তা।‘
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)