পুলিশের চাকরিতে যোগদানের আগেই কিশোরীকে ধর্ষণ!
পুলিশের চাকরিতে যোগদানের আগেই এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সদ্য পুলিশে চাকরি পাওয়া এক তরুণের বিরুদ্ধে।
ঢাকার ধামরাইয়ে এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি চার দিনেও।
পুলিশ কনস্টেবল পদে নতুন চাকরি পাওয়া হান্নান খান ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। এ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রাম্য সালিশবৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে শনিবার রাতে। পুলিশি আতঙ্কে ওই সালিশবৈঠকের কথিত মাতবর ও জনপ্রতিনিধিরা দৌড়ে পালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রোয়াইল ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফেসবুকে অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার কথা বলে গত ১২ এপ্রিল সকাল ১০টায় সিতি আলাদীন পার্কের ৩০৬ নম্বর কক্ষে নিয়ে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করেন হান্নান খান নামে ওই পুলিশ কনস্টেবল। এর পর ওই স্কুলছাত্রীকে ওই পার্কের আবাসিকে একা ফেলে রেখে পালিয়ে যান হান্নান। এর পর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর পর ওই স্কুলছাত্রীর বড়বোন বাদী হয়ে ধামরাই থানায় ওই ধর্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে যান।
থানার রাইটার মো. নজরুল ইসলামের কাছে অভিযোগটি লিখেনও। কিন্তু ওইদিন রোয়াইল ইউনিয়নের বিট অফিসার এসআই মো. ফয়েজ আহাম্মেদ ছুটিতে ছিলেন। তিনি থানায় না থাকার কারণে ধর্ষণের এ অভিযোগটি নিজেদের কাছেই রেখে দিতে বলেন। তবে ছুটি শেষে থানায় ফিরেই তিনি এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
অন্যদিকে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেওয়ার কথা বলে কথিত মাতবর মো. আব্দুল হক মোল্লা, আনোয়ার হোসেন মোল্লা, বেলায়েত খান, বকুল মোল্লা ও রোয়াইল ইউপি মেম্বার মো. ইয়াকুর মোল্লাসহ কতিপয় মাতবর শনিবার রাত ১০টার দিকে আড়ালিয়া গ্রামের কহিনুর মোল্লার বাড়িতে সালিশবৈঠকে বসেন। সালিশবৈঠক চলাকালে পুলিশ আসার গুজব উঠলে মাতবররা দৌড়ে পালিয়ে যান।
এ ব্যাপারে ওই স্কুলছাত্রীর বড় বোন বলেন, আমার বোন দশম শ্রেণিতে পড়ত। ধর্ষক তাকে নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিত ও উত্ত্যক্ত করত। দুর্ঘটনার ভয়ে বোনকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিই। ৫ মাস হলো সে স্কুলে যায় না। এর পরও আমার বোনের ইজ্জত রক্ষা করতে পারলাম না। আমি ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।
এ ব্যাপারে ওই অভিযুক্ত হান্নানের বড় ভাই মো. বেলায়েত খান বলেন, আমার ছোটভাইয়ের পুলিশে নতুন চাকরি হয়েছে। ৭ এপ্রিল তার ভিআর তদন্ত করেছেন ধামরাই থানার এসআই নাসির উদ্দিন আহমেদ। ঈদের পর টাঙ্গাইল মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে যোগদান করার কথা। এ ব্যাপারে বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন হুজুর দিয়ে বিয়ে পড়িয়ে রাখব। ট্রেনিং শেষে যখন বিয়ের অনুমতি মিলবে তখন কাবিন রেজিস্ট্রি করা হবে।
এ ব্যাপারে মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, এখন ওই ভুক্তভোগীর নামে ১০ শতাংশ জমি লিখে দেওয়া ও হুজুর দিয়ে বিয়ে পড়িয়ে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ সবেমাত্র অভিযুক্ত হান্নানের পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি হয়েছে। ঈদের পর ট্রেনিং সেন্ট্রারে যাবে, তাই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভিআর যাচাই-যাছাইকারী এসআই মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি হান্নান খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ শুনেছি পরে। এর আগেই ৭ এপ্রিল আমি ভিআর প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
এ ব্যাপারে রোয়াইল ইউনিয়নের বিট অফিসার মো. ফয়েজ আহাম্মেদ বলেন, ১২ এপ্রিল আমি ছুটিতে ছিলাম। আমাকে ফোন করা হলে আমি ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজনকে আমার ছুটিতে থাকার কথা জানাই। তাদের এও বলি— আমি থানায় ফিরে এসে এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আজ রোববার আমি থানায় যোগদান করেছি।
এ বিষয়ে ওসি অপারেশন নির্মল চন্দ্র দাস বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিম ও পরিবারের লোকজন থানায় এলেও তারা থানায় অভিযোগ দেননি। বিট অফিসার এসআই ফয়েজ আহাম্মদের ছুটির কথা শুনে হয়তোবা তারা থানায় অভিযোগ না দিয়েই চলে যান। অভিযোগ দিলে এ ব্যাপরে মামলা নেওয়া হবে।
সূত্র: যুগান্তর
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)