বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী রুখিয়ার হাত পা বাধা লাশ উদ্ধার : গ্রেফতার ৩
পার্বতীপুরে হাত পা বাধা ক্ষতবিক্ষত অজ্ঞাত নারীর লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। ওই নারীর নাম রুখিয়া রাউত (২৩)। তিনি পাশ্ববর্তী রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের আদিবাসী পল্লী মিশন পাড়ার দিনেশ রাউত (বাবা) ও সুমতি (মা) রাউতের মেয়ে। তিনি রংপুর কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স (ইতিহাস) শেষ বর্ষের ছাত্রী।
রুখিয়া হত্যাকান্ডের মুল নায়কসহ তিন যুবককে আজ বুধবার রাত সাড়ে ৩টায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার খোদ্য বাগবাড় গ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে আনিছুর রহমান (২৫), একই গ্রামের বাচ্চু’র ছেলে ইজিবাইক চালক রাজু (২৫) ও পার্বতীপুর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের দূর্গাপুর নয়াবাজার গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে ভ্যানচালক আশিকুজ্জামান (৪০)। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ইজিবাইকটি পুলিশ জব্দ করেছে। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছে পার্বতীপুর মডেল থানা পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে পার্বতীপুর-মধ্যপাড়া-মিঠাপুকুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে পার্বতীপুর উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের পাঁচপুকুরিয়া শাল বাগানে একটি নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে মধ্যপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ওড়না দিয়ে হাত পা একসাথে করে বাধা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। লাশটির মুখে ও শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দাঁত ভেঙ্গে ফেলা হয়। রাতে মেয়েটির পরিচয় পাওয়া যায়।
পার্বতীপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা জানান- রুখিয়ার সাথে দীর্ঘদিন ধরে আনিছুরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একাধিকবার তাদের যৌনমিলনও হয়। কিছুদিন আগে আনিছুর অন্যত্র বিয়ে করে। এতে রুখিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে আনিছুরকে বিভিন্ন হুমকি দিতো। এ অবস্থায় আনিছুর তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে গত সোমবার একই গ্রামের রাজ এর ইজিবাইক ভাড়া করে। বিকেল ৫টার দিকে মোবাইলফোনে রুখিয়াকে ডেকে নিয়ে ওই ইজিবাইকে করে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে আনিছুর ইজিবাইকের মধ্যেই চালক রাজ এর সহায়তায় রুখিয়াকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে।
পরে ওই ওড়না দিয়ে তার হাত পা বেধেঁ পার্বতীপুর-মধ্যপাড়া-মিঠাপুকুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে পার্বতীপুর উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের পাঁচপুকুরিয়া শালবনে ফেলে যায়। এরপর আনিছুর ভ্যানচালক আশিকুজ্জামানকে ডেকে নিয়ে নিজ বাড়ীতে যায়। তিনি আরও বলেন, হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত ছিল আনিছুর ও রাজ। তথ্য প্রযুক্তি সহায়তায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার (বুধবার) দিকে নিজ নিজ বাড়ী থেকে ঘাতকদের গ্রেফতার করা হয়। আনিছুর ও রাজ হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে। ১৬৪ ধারায় জবাব বন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তাদেরকে দিনাজপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে পরিদর্শক সোহেল রানা জানান।
তবে রুখিয়ার বাবা দিনেশ রাউত সাংবাদিকদের নিকট দাবী করেছেন তার মেয়েকে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আনিছুর প্রায় রুখিয়াকে উক্তত্য করতো। সোমবার বিকেলে রুখিয়াকে অপহরণ করা হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রুখিয়ার মা সুমতি মেয়ের সাথে সর্বশেষ কথা বলেন। এরপর থেকে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে হরিরামপুর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ আবরাহাম মিঞ্জি বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার বিকেলে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)