কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি
সাতক্ষীরার একটি রাস্তার মাটি ৮ মাস কেটে রাখায় জন-দূর্ভোগ চরমে


সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিষখালী ইউনিয়নের দলুয়া শুক্তিয়া টিকারামপুর অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ সরকারী কর্মকর্তাদের তদারকি না থাকা ও ঠিকাদারের গাফিলতিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। উন্নয়নের জন্য প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা প্রায় ৮ মাসের অধিক সময় মাটি কেটে রাখার ফলে ওই এলাকায় এ জনদূর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, টেন্ডারের মাধ্যমে খুলনার মেসার্স এম এম বিল্ডার্স নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে এক বছর আগে রাস্তাটি উন্নয়নের কার্যাদেশ পান। কিন্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি না করে দুই হাত বদল করে খলিষখালীর জনৈক খোকন ও তালার বুলু নামে দুই জনকে দিয়ে কাজটি ৯ মাস আগে শুরু করেন।
এরই ধারা বাহিকতায় রাস্তাটি দলুয়া বাজার থেকে টিকারামপুর পর্যন্ত মাটি কেটে বালি ফেলার জন্য রেখে দেয়া হয়। হঠাৎ কয়েক মাস ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ না করায় স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি উপজেলা উন্নয়ন সমম্বয় সভায় উপস্থান করেন। এর পর ঠিকাদার পক্ষে জনৈক খলিষখালীর খোকন দলুয়া অংশে বালি ভরাটের জন্য পাশ^বর্তী নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালি উত্তলন শুরু করে। একপর্যায়ে খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন অবৈধভাবে বালি উত্তলন বন্ধ করে দেওয়ার ফলে আবারও বন্ধ হয়ে যায় উন্নয়ন কাজ।
কয়েক মাস পর স্থানীয়দের চাপে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন রাস্তার তুলে রাখা ইট খোয়া করে কাজ শুরু করে। দলুয়া অংশে কয়েক ট্রাক বালি ও ফেলে। দুই থেকে তিন‘শ মিটার কাজ করার পর আবারও রাস্তার উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
এলাকাবাসি অভিযোগ আকারে বলেন, গত দুই দিন আগে হঠাৎ সামন্য বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাটিতে পানি জমে কদামক্ত হওয়ায় কয়েকটি গ্রামের মানুষের চলাচলের দূর্ভোগ চরমে পৌছেছে। রাস্তাটির বেহাল দশায় মানুষ বাড়ী থেকে বের হয়ে হাট বাজারসহ কোথাও যাওয়ার জোঁ নাই।
এর আগে বোরো ধান কেটে ওই রাস্তা দিয়ে চাষীরা কোন যানবাহনে করে তাদের উৎপাদিত ফসল বাড়ীতে আনতে পারেনি। রাস্তাটি যান চলাচলে এতই অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে যে, কৃষকরা মাঠের মধ্যে ধান ক্ষেতে ধান ঝাড়াই এর কাজ করতে বাধ্য হতে হয়েছে।
বিষয়টি স্থানীয় খলিষখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যার মোজাফ্ফর রহমান জানান, প্রতিনিয়ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন, তালা উপজেলা সহকারী প্রকৌশল কর্মকর্তা ও জেলা প্রকৌশল কর্মকর্তার সাথে একাধিক বার যোগযোগ করে জনগনের দূর্ভোগ লাগবের জন্য চেষ্টা করা হয়। কিন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এই কাজ শুরু হচ্ছে বলে তালবাহানা করতে করতে মাসের পর মাস কাটিয়ে দিচ্ছেন। ফলে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
তাই তিনি তালা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অীধদপ্তরের কর্মকর্তা ও জেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা দায়িত্ব কর্তব্যে অবহেলা এবং ঠিকাদর প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীসহ রাস্তাটি দ্রুত পাকা করনের দাবী জানিয়েছেন।
ঠিকাদার আব্দুল মাজেদ জানান, তার প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডার্স কাজটি করার কথা থাকলেও সরকারি বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে তালা অঞ্চলের ঠিকাদার বুলু ও খোকনকে দিয়ে রাস্তাটি কাজ করার দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্ত তারা কাজটি দীর্ঘদিনেও না করায় ঈদের পর নতুন করে তার এম এম বিল্ডার্স’র মাধ্যমে রাস্তাটি উন্নয়ন কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।
তালা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী রথীন্দ্র নাথ হালদার জানান, রাস্তাটির কাজের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর রহমান কয়েক দফায় আমাকে জানিয়েছেন। আমিও রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ যাতে দ্রæত শুরু হয় তার জন্য ঠিকাদারকে বলেছি।
এরপরেও যদি কাজ না করেন তাহলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
