সাতক্ষীরায় উচ্চমুল্য ফসলের সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি চিহ্নিতকরণ শীর্ষক কর্মশালা
‘প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার অন্য নাম উপকূলের কৃষি। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সংগ্রামী জীবনের মত এখানকার কৃষি ও কৃষকের জীবনও সংগ্রামমুখর। প্রতিকূল আবহাওয়ায় ও সেচের পানির দুষ্প্রাপ্যতার মধ্যেও লবণাক্ত মাটির বৃক চিরে এখনকার কৃষকরা ফলায় ফসল নামক রত্ন।’
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উচ্চমুল্য ফসলের সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি চিহ্নিতকরণ শীর্ষক দিনব্যাপী সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন।
সোমবার (১৫ মার্চ) সাতক্ষীরার বিনেরপোতাস্থ বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইস্টিটিউট উপ কেন্দ্রে ওই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা আরো বলেন, ‘কৃষকের ঘাম, শ্রম আর গবেষণার নবনব প্রযুক্তির যোগ্য প্রাপ্তি যত্নের এই রত্ন। কিন্তু মৌসুমের শেষ দিকে যখন কৃষক তাদের এই উৎপাদিত ফসলের উপযুক্ত মুল্য পায় না তখন তাদের চোখে নেমে আসে হতাশার ছায়া। মৌসুমের প্রথম দিকের এই সব উচ্চ মুল্যের ফসল সে সময় হয়ে দাড়ায় নিন্মমুল্যের ফসল। এসব ফসল গুলোর মধ্যে রয়েছে, টমেটো, বেগুন, সীম, লাউ ইত্যাদি। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে নিন্ম মুল্যের এই ফসলগুলিতে মুল্য সংযোজন করা গেলে এ গুলিই হতে পারে উচ্চমুল্যের ফসল।’
আর এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আইএফএডি ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এসএসিপি (বারি অঙ্গ) প্রকল্প ওই কর্মশালার আয়োজন করে।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, বিএআররআই’র মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ জিএমএ গফুর।
বিশেষ অতিথি ছিলেন এসএসিপি প্রকল্প পরিচালক মো. আইউব আলী, এসএসিপি (বারি অঙ্গ) ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বীজ প্রযুক্তি বিভাগ, বিএআরআই, গাজীপুরের কম্পোনেন্ট কো-অর্ডিনেটর ড. অপূর্ব কান্তি চৌধুরী।
প্রধান অতিথি কৃষিবিদ জিএমএ গফুর বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকেরা প্রতিকূল পরিবেশে ফসল উৎপাদন করলেও অনেক সময় তারা ফসলের সঠিক দাম পায় না। এক্ষেত্রে ফসলের সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তির মাধ্যমে পঁচনশীল ফসল প্রক্রিয়াজাত করে পরবর্তীতে বাজারজাত করে তাদের উপার্জন বাড়াতে পারে।’
বিশেষ অতিথি ড. অপূর্ব কান্তি বলেন, ‘ফসলের সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা ও পরিবহনে যথেষ্ট যত্নশীল না হলে পণ্য দ্রুত পঁচে যায় এবং খাওয়ার ও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এর ফলে উৎপাদনকারীরা যেমন পণ্যের ন্যায্য মুল্য পায় না তেমনি ভোক্তরাও ভালো মানের পণ্য থেকে বঞ্চিত হয়। পণ্যের সঠিক সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা শুধু এর গুণগতমানকেই উন্নত করে না, সেই সাথে মুল্যও সংযোজন করে।’
কর্মশালায় বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি বিপননের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ ও কৃষক-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের ভাড়াশিমলা গ্রামের কৃষক-কৃষানীদের টমেটোর সস ও পেয়ারার জেলি তৈরির প্রক্রিয়া হাতেকলমে দেখানো হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (চ:দা:), কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই, সাতক্ষীরা, ড. মো. মোশাররফ হোসেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)