সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী ৭ দিনের লকডাউনের প্রথম দিনে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন
সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী সাতদিনের লকডাউনের প্রথম দিনে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন। সকাল থেকে সাতক্ষীরা শহরে মানুষের যাতায়াত অন্যদিনের চেয়ে খুবই কম লক্ষ্য করা গেছে। নিত্যপণ্যের দোকানপাট ছাড়া অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু কিছু দোকান খোলা রাখতে দেখা গেছে। জেলা শহরের চারিপাশ ঘিরে রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও চলছে ব্যাটারি ভ্যান, ইজিবাইক, টেমম্পু, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন।
দূরপাল্লার কোন যানবাহন চলতে দেখা যায়নি। সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়ক, সাতক্ষীরা-যশোর মহাসড়ক, সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ মহাসড়ক, সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের প্রবেশদ্বারে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশের টহল চলছে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের কয়েকটি টিম মাঠে রয়েছে। সীমান্তে চলছে বিজিবির টহল। শহর এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারের প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ১২টা ১মিনিট থেকে সাতক্ষীরা জেলাব্যাপি লকডাউন শুরু হয়েছে। লকডাউন চলাকালে সাতক্ষীরা জেলার সর্বত্র কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে। তবে, রোগী পরিবহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, জরুরী পণ্য বহনকারী ট্রাক এবং জরুরী সেবাদানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না। ঔষধের দোকান ব্যতীত সকল ধরণের দোকানপাট, শপিংমলসমূহ বন্ধ থাকবে। সাপ্তাহিক হাট ও গরুর হাট বন্ধ থাকবে।
কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় (মুদিখানা) পণ্যের দোকানপাট, খাবারের দোকান ও হোটেল রেস্তোরা যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে খাবারের দোকান ও হোটেল রেস্তোরাঁ কেবল খাদ্য বিক্রয় সরবরাহ করা যাবে। প্রয়োজন ব্যতীত কেউ এসব স্থানে যেতে ও জনসমাগম করতে পারবে না।
আমের আড়ৎ-বাজার পৃথক জায়গায় ছড়িয়ে আড়তদারদের মাধ্যমে বিক্রয় করা যাবে। বাগান থেকে আম ট্রাকে করে প্রেরণ করা যাবে। এছাড়া কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম পরিবহন চালু থাকবে। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন; জরুরী প্রয়োজনে চলাচলকারী সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। শিল্প-কারখানাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। শ্রমিকদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেয়া নিশ্চিত করতে হবে।
আইন-শৃঙ্খলা ও জরুরী পরিষেবা যেমন- কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, স্থলবন্দরসমূহের কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি, বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাকসেবাসহ অন্যান্য জরুরী ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে। অতি জরুরী প্রয়োজন ব্যতীত (ঔষধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন-সৎকার ইত্যাদি) কোনভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুম্মার নামাজসহ প্রতি ওয়াক্ত নামাজে সর্বোচ্চ ২০জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করতে পারবে। অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সমসংখ্যক ব্যক্তি উপাসনা করতে পারবে। ভোমরা স্থল বন্দরের সকল দোকান বন্ধ থাকবে। তবে ভোমরা স্থল বন্দরের কার্যক্রম সকাল ৮টা হতে বেলা-২টা পর্যন্ত চালু থাকবে। শুধুমাত্র সকল জরুরী সরকারি নির্মাণ কাজ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চলমান থাকবে এবং এ সংক্রান্ত পণ্য পরিবহন বিধি নিষেধের আওতা বহির্ভূত থাকবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)