৯ বছরে কোটি কোটি টাকার মালিক শার্শার গোগা ইউপি চেয়ারম্যান!
যশোরের শার্শা উপজেলার ৬নং গোগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ক্ষমতার ৯ বছরে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। রাজকীয় বাড়ী, গাড়ি, মাছের ঘের, সহায় সম্পত্তি কি নেই তার। এতো সবের কারণে এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে তার আয়ের উৎস নিয়ে।
চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ তার পরিষদের মেম্বর বাবুল হোসেনকে গত ২৭ অক্টোবর জনসম্মুখে মেরে রক্তাক্ত জখম করার পর তিনি এলাকায় বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে তার আয়ের উৎস নিয়ে। কি ভাবে এতো টাকার মালিক হলেন তিনি?
বাবুল মেম্বর তারই কাছের লোক। তার হাতে গড়া মেম্বর। তাকে দিয়েই ছেয়ারম্যানের ছেলে সম্রাট মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতো। গ্রামে শালিশ বিচারের নামে চাঁদাবাজী করাতো তাকে দিয়েই। প্রশাসনের কাছে ভালো থাকার জন্য চেয়ারম্যানের পরামর্শেই বাবুল মেম্বর বিজিবি’র মাথে মাদক নির্মুল অভিযান শুরু করেন। কিন্তু ব্যাটা পড়বি না পড় মালির ঘাড়ে। অভিযানের প্রথম দিন হরিশ্চন্দ্রপুর মাঠে চেয়ারম্যান পুত্র সম্রাটের ৫৯০ বোতল ফেনসিডিল ধরা পড়ে। সেখান থেকেই দ্বন্ধ শুরু হয় চেয়ারম্যান রশিদ ও বাবুল মেম্বরের মধ্য। যা পরবর্তিতে হিংসাত্মক আকার ধারন করে।সরেজমিন তদন্তে জানা গেছে এসকল তথ্য।
স্থানীয়রা জানান, চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ তার ছেলে সম্রাট হোসেন ও বাবুল হোসেন অপরাজনীতির সাথে জড়িত। টানা দু’বার আব্দুর রশিদ গোগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে তার নিজ গ্রাম হরিশচন্দ্রপুরে একটি সাদা মাটা বাড়ি ছিল। আজ সেখানে উঠেছে আলীশান ভবন। জনগনের সুবিধার্থে সরকারের দেয়া সোলার বাতি গুলো তিনি তার বাড়ির চারপাশে লাগিয়েছেন। এপযর্ন্ত তিনি দেড়শো বিঘা জমির মালিক হয়েছেন। এর মধ্য ১শ বিঘার একটি মাছের ঘের রয়েছে। চারটি পাওয়ার টিলার কিনেছেন, ৪টি মোটর সাইকেল কিনেছেন, একটি প্রাইভেট গাড়িও কিনেছেন তিনি। গ্রামে রাইস মিল রয়েছে। যশোর শহর ও ঢাকা শহরে দুটি বাড়ি করেছেন। গোগা বাজারে নিজস্ব একটি মার্কেট বানিয়েছেন। সেই সাথে গোগা স্কুলের পুকুর ভরাট করে দোকান বানিয়ে এক দেড় লাখ টাকা দোকান প্রতি অগ্রিম হাতিয়ে নিয়েছেন। মাদরাসার জমিতে দোকান বানিয়ে দেওয়ার কথা বলে অনেকের কাছ থেকে মোটা টাকা পকেটে নিয়েছেন। ফল ব্যবসায়ি আয়ুব মিয়ার কাছ থেকে নিয়েছেন ৬০ হাজার টাকা। মাদরাসায় চাকুরি দেওয়ার নাম করেও অনেকের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়েছেন বলে অভিযোগ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আম্পান ঝড়ে পড়ে যাওয়া আমলাই গ্রামের রাস্তার একটি মেহগনি গাছ তক্তা বানিয়ে তিনি নিজের বাড়িতে রেখেছেন। মনোয়ারা বেগম নামে এক হতদরিদ্র মহিলার সরকারী অর্থে করা বাড়ির রড, সিমেন্ট, বালি নিয়ে গরুর গোয়াল ঘর নির্মান করেছেন। তার ছেলে সম্রাট হোসেন এর রয়েছে মাদকের ব্যবসা। তার ভাই আব্দুল ওহাব চোরাচালান সিন্ডিকেট পরিচালনা করেন বলে জানা গেছে। কিছুদিন আগে চোরাইপথে ভারতে পাঠানো তার একটি ইলিশ মাছের চালান ধরা পড়ে বিজিবির হাতে। এছাড়াও রশিদ চেয়ারম্যান ইউনিয়ানের জিয়াউল, কাদের, আরব আলী সহ আরো অনেকের বিরুদ্ধে জামায়াত শিবির করার অভিযোগ উঠিয়ে মোটা টাকা চাঁদাবাজি করেছেন। এই সব অভিযোগ সব স্বীকার করেছেন বাবুল মেম্বর।
চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ এসব অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলছি, আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠানো হচ্ছে তা সঠিক নয়। এগুলো মিথ্যা বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য মুলক।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে বাবুল মেম্বর অভিযোগ তুলেছেন। সে নিজেই দুর্নীতিপরায়ন লোক। নানান অজুহাতে সে তার ওয়ার্ডের লোকজন এর কাছ থেকে সাড়ে ১১ লাখ টাকা নিয়ে আত্নসাৎ করেছেন। তার এলাকার ২৯ জন ব্যাক্তি স্বাক্ষর সম্বলিত এই অভিযোগটি আমার কাছে পেশ করেছে বলে জানান তিনি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)