ইউপি নির্বাচন স্থগিত: কলারোয়ায় বেড়েছে প্রার্থীদের খরচ-কষ্ট, আশা-নিরাশায় ভোটাররা
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল মানুষের জীবন নিরাপত্তাও। এরই প্রেক্ষিতে দেশের সকল নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্দেশনা অনুযায়ী সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের আগামি ১১ এপ্রিলের নির্বাচনও স্থগিত হয়েছে। বন্ধ হয়েছে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা। তবে তীরে এসে তরী ডুবার মতো উপক্রম হলেও নির্বাচনের মাঠ ছাড়তে নারাজ প্রায় সব প্রার্থীরা। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা বন্ধ করে তারা বাড়ি বাড়ি, এলাকায় ও পাড়া মহল্লায় ঘুরে ভোটারদের কাছে নিজেদের অবস্থান আরো শক্ত করতে কর্মযজ্ঞতা অব্যাহত রাখতে শুরু করেছেন। কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা রাখতে নিয়মিত সংযোগ স্থাপন করতে হচ্ছে প্রার্থীদের। ফলে নির্বাচনী খরচ ও কষ্ট দুটোই বেড়ে যাচ্ছে তাদের। -এমনটাই জানালেন অনেক প্রার্থীরা।
অন্যদিকে, আশা-নিরাশায় রয়েছেন ভোটাররাও। ভোট উৎসবে নিজেদের সতর্ক সম্পৃক্ততায় কিছুটা ভাটা দেখা দিয়েছে। ভোটকে ঘিরে অনেকেই আশায় বুক বেঁধে ছিলেন, ছিলেন অনেক শংকাতেও। কী হতে পারে -এমন ভাবনায় আশা-নিরাশায় তারা।
জানা গেছে, কলারোয়ার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে উৎসবের আমেজ দৃশ্যমান হয়েছিলো সেটি এখন অনেকটা নিরাশায় রূপ নিয়েছে। চায়ের দোকান, হাটে-মাঠে, এমনকি দুই জন ব্যক্তি এক স্থানে থাকলেও চলতো নির্বাচনের তর্জমা, বিচার বিশ্লেষণ ও আলোচনা। কে হতে পারে চেয়ারম্যান, কে মেম্বর, কে মহিলা মেম্বর, কোন প্রার্থীর অবস্থান কেমন, ভালো-খারাপ তারই বিচার বিশ্লেষণ। এমনটাই চলছিলো ১ এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিন্তু করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক মাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্তে এক নিমিশে ভেস্তে গেলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উৎসবের আমেজ। আশা পরিনত হয়েছে নিরাশায়। বিষয়টি নিজেদের সুরক্ষার্থে মেনেও নিয়েছেন।
ইউনিয়ন পরিষদসহ সকল নির্বাচনকে স্থগিত করার খবর বাতাসের মত ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। নিমিষেই প্রার্থী ও ভোটারদের মুখের হাসি কিছটা মলিন হয়ে গেছে। এলাকায় দেখা যাচ্ছে না লম্বা লাইনের মটরসাইকেল শোভাযাত্রা। শোনা যাচ্ছে না নির্বাচনী প্রচারণা। দেখা যাচ্ছে না চায়ের দোকানে গণজমায়েতও।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচন স্থগিতে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা বন্ধ হলেও দূরত্ব কমছে না। অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় ভোটার ও কর্মী সমর্থকদের কাছে নির্বাচনী কর্মযজ্ঞতা অব্যাহত রাখতে হচ্ছে প্রার্থীদের। মাইকিং, পথসভা ও আনুষ্ঠানিক অন্যান্য প্রচারণা বন্ধ রাখতে হলেও প্রার্থীদের অফিস চালনা, কর্মীদের সুখে দুঃখে পাশে থাকা অবশ্যম্ভাবী। ফলে বেশ মোটা অঙ্কের টাকা খরচ বৃদ্ধি পাবে, বাড়ছে কষ্টও।
তবে এলাকার সচেতন মহল নির্বাচন কমিশনের ভোট স্থগিতের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
প্রার্থী ও ভোটাররা বলেছেন, আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করে অনানুষ্ঠানিক নির্বাচনী কাজ অব্যাহত রাখলেও করোনা ভাইরাসের এমন মহামারিতে দেশের মানুষের প্রত্যেককে নিজের অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে। সেই সাথে মাস্ক বাধ্যতা মুলক ব্যবহার করতে হবে। সরকারি বিধি নিষেধ উপেক্ষা করা যাবে না।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)