শ্যামনগরে ঘুষের টাকা যোগাতে কর্তনকৃত গাছসহ পুরাতন ভবন বিক্রয় করলেন প্রধান শিক্ষক


বিদ্যালয় কম্পাউন্ডে সাইক্লোন শেল্টার এর বরাদ্দ পেতে ঘুষ প্রদানের অর্থ যোগানোর জন্য বড় বড় তিনটি গাছসহ পরিত্যক্ত ভবন বিক্রয় করেছে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান। পরিচালনা পর্ষদের আহবায়ক কমিটি, শিক্ষক আর শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ স্থানীয়দের উপস্থিতিতে গত ১৩ ডিসেম্বর বিকালে অনুষ্ঠিত সভায় এমনই যুক্তি দেখান তিনি।
এর আগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গোপনে বিশালাকারের তিনটি গাছ কর্তনপুর্বক বিক্রয়সহ পরিত্যক্ত ভবন ভেঙে নেয়ার অভিযোগ উঠলে স্থানীয়দের চাপের মুখে ঐ সভা আহবান করা হয়। এদিকে বিদ্যালয়ের সম্পদ আত্মসাৎ ঘটনার প্রতিকারের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ১৫ ডিসেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছে স্থানীয় জনৈক নজরুল ইসলাম।
জানা যায় কয়েক মাস পুর্বে আব্দুর রহমান শ্যামনগর উপজেলার ৯০নং গৌরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ না থাকায় আহবায়ক কমিটির প্রভাবশালী সদস্যকে ‘ম্যানেজ’ করে বিশালাকারের একটি কড়ইসহ বেশকিছু মেহগনি গাছ কর্তন করেছেন তিনি। একই সময়ে পাকা দেয়ালে ঘেরা বিদ্যালয়ের চার কক্ষ বিশিষ্ট পরিত্যক্ত টিনসেড ভবনও তিনি অন্যত্র বিক্রয় করেছেন। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গাছ ও পরিত্যক্ত ভবন বিক্রয়ের টাকা ‘উপর মহলে’ ঘুষ হিসেবে দেয়ার দাবি করলেও স্থানীয়দের অভিযোগ সমুদয় অর্থ তিনি আত্মসাৎ করেছেন। একক সিদ্ধান্তে মুল্যবান গাছসহ পরিত্যক্ত ভবন বিক্রয়ের বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় ঘটনার দায় এড়াতে তিনি তড়িঘড়ি করে পুর্নাঙ্গ পরিচালনা পর্ষদ ঘটনের চেষ্টা শুরু করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের আহবায়ক কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, স্কুলের পাশে বাড়ি হওয়ায় প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের সম্পদ ইচ্ছামত মত ব্যবহার করছেন। কোন পুর্বানুমতি ছাড়াই ভবনসহ গাছ কর্তন ও বিক্রি করে সব টাকা আত্মসাৎ করেছেন। নিজেকে রক্ষা করতে এখন করোনার মধ্যেও পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে অপতৎপরতা চালাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ভূমিদাতার পৌত্র সফিউল আযম জানান, কর্তনকৃত সমৃদয় গাছ ইতিপুর্বে রাতের বেলা অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। তবে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানানোর পর বুধবার রাতে কিছু গাছের গুড়ি স্কুলের মাঠে কে বা কারা রেখে গেছে। এর আগে কর্তনকৃত গাছের অবশিষ্ট অংশের উপর দিয়ে কাঁদার প্রলেপ লাগিয়ে তা মানুষের দৃষ্টি থেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন। বিদ্যালয়ের ভবনসহ গাছ কর্তন ও বিক্রির ঘটনায় জড়িত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, পরিচালনা পর্ষদের আহবায়ক কমিটির সম্মতি নিয়ে হেলে যাওয়া গাছগুলো কাটা হলেও স্কুলের মাঠে রাখা আছে। পরিত্যক্ত ভবন আমার যোগদানের আগেই অপসারণ হয় দাবি করে তিনি বলেন, ঘুষ দেয়া হয়নি, বরং সাইক্লোন শেল্টারের জন্য উপর মহলে দৌড়ঝাঁপ করা হচ্ছে বলে সভায় জানানো হয়।
প্রধান সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সোহাগ হোসেন জানান, অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে গৌরিপুর স্কুল দেখভালের দায়িত্বে আছি। তবে এতদসংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ হওয়ায় ঘটনার তদন্তে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত টিম গঠনের কথা রয়েছে।
সূত্র পত্রদূত

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
