দেবহাটায় প্রতারণার ফাঁদ থেকে ছেলেকে বাঁচাতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন পিতা
সাতক্ষীরার পারুলিয়ায় এক যুবককে ফাঁদে ফেলে ৫ লাখ টাকা দাবী অতঃপর দাবীকৃত টাকা না পেয়ে ওই যুবককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া এক প্রতারক নারীর সাজানো মামলা থেকে ছেলেকে বাঁচাতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কামাল সরদার (৬১) নামের এক অসহায় পিতা।
তিনি দেবহাটা উপজেলার দক্ষিন পারুলিয়া গ্রামের মৃত এলাহী বক্স’র ছেলে ও স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় দেবহাটা প্রেসক্লাবের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কামাল সরদার অভিযোগ করে বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর আমার ছেলে মনজুর এলাহীকে (২৭) পারিবারিক ভাবে কালিগঞ্জ উপজেলার দিয়া গ্রামের মনিরুজ্জামানের মেয়ের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দিই। বিয়ের ৪ দিন পর ১৪ সেপ্টেম্বর আমার ছেলেকে সু-কৌশলে একই ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে সিদ্দিক কারিকরের মেয়ে একাধিক বিয়ের নায়িকা শাহিদা খাতুন (৩৮) তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। তাদের বাড়িতে নিয়ে যেয়ে তাকে আটকে রেখে আমাদের খবর দেয়। এসময় ঐ নারী আমার ছেলের বউ হিসাবে দাবি করে। আমরা বিয়ের প্রমান হিসেবে কাগজপত্র দেখতে চাইলে সে কাগজপত্র দেখাতে ব্যার্থ হয়। পরে সে আমার ছেলেকে ব্লাকমেইলসহ বিষয়টি সমাধানের নামে বিভিন্ন লোক দিয়ে আমাদের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু আমি ও আমার পরিবার তাদের দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমার ছেলেকে ফাঁসাতে নানাভাবে ষড়যন্ত্র চালাতে থাকে।
তিনি বলেন, এক পর্যায়ে দাবীকৃত টাকা না পেয়ে ওই প্রতারক নারী শাহিদা আমার ছেলে মনজুর এলাহীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে সাতক্ষীরার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ০৩ এর ৯ (১) ধারায় একটি নাটকীয় মামলার পিটিশন দায়ের করে। যার নং-(না:শিশু: পিটিশন ৪০০/২০)। আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর উপর দায়িত্ব প্রদান করেছে। বিষয়টি নিয়ে পিবিআই সুষ্ঠ ভাবে তদন্ত করবেন বলে আমরা মনে করি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আমরা অতি সাধারণ পরিবারের মানুষ। আমরা সমাজের সকলের সাথে মিলেমিশে খুবই স্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন করি। এতে ইর্শান্বিত কিছু কুচক্রী লোকজন ওই প্রতারক নারী শাহিদা খাতুনকে দিয়ে হয়রানী করার জন্য আদালতে মিথ্যা মামলার পিটিশন দায়ের এবং এলাকায় নানামুখী অপপ্রচার চালিয়ে আমার পরিবারের সম্মানহানী করে যাচ্ছে। আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি যে, প্রতারক শাহিদা খাতুনের পূর্বে একাধিক বিয়ে থাকলেও প্রত্যেক স্বামীর সাথে প্রতারণা করে সে মোটা টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের থেকে দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদ ঘটিয়ে এবার আমার সদ্য বিবাহিত ছেলেকে ফাঁদে ফেলতে উঠেপড়ে লেগেছে। ইতোপূর্বে শাহিদা খাতুন বিভিন্ন ব্যক্তিকে নামমাত্র বিয়ে করে তাদেরকে বেকায়দায় ফেলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার ২০/২২ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। এর আগে শাহিদা খাতুন যেভাবে একাধিক ব্যাক্তিদের ফাঁদে ফেলে সর্বশান্ত করেছে, ঠিক একইভাবে এবার সে আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানী ও সর্বশান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতারক শাহিদা খাতুন তার পিটিশনে আমার ছেলের বিরুদ্ধে যে তথ্য উপস্থাপন করেছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা। তাছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার বর্তমান বয়স ৩৮ বছর। যাতে সুষ্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে ইে প্রতারক শাহিদা খাতুন আমার ছেলে মনজুর এলাহীর থেকে প্রায় ১১ বছরের বড়। আমার ছেলে সহজ, সরল হওয়ায় প্রতারক শাহিদা সুকৌশলে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কামাল সরদার আরো দাবী করেন যে, আমার ছেলে মনজুরের সাথে শাহিদা খাতুনের কোন বিয়ে হয়নি এবং তার বিরুদ্ধে আনীত এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা চাই বিষয়টির সুষ্ঠ তদন্ত হোক।
চলমান হয়রানী ও মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ঐ পিতা।
একই সাথে সাতক্ষীরা জেলার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, পুলিশ সুপার, দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ সহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী পিতা কামাল সরদার।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)