লাশ উদ্ধার
মণিরামপুরে বিধবা নারীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার তিন আসামির


যশোরের মণিরামপুরে জাহানারা বেগম (৪৫) নামে বিধবা নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতারের কথা নিশ্চিত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
তারা হলেন, ধলিগাতী গ্রামের আলতাফ বাবু (৪৫), একই গ্রামের মনিরুল ইসলাম (৩০) ও সমসকাঠি গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন লাল্টু (৩২)।
রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) গ্রেফতার তিনজনকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহাদী হাসানের আদালতে সোপর্দ করেছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক হিরন্ময় সরকার।
আদালতে দেয়া জবানবন্দীতে তারা জাহানারাকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।
তবে তারা হত্যার বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এদিকে, কিভাবে জাহানারা হত্যার শিকার হলেন তা এখনো অস্পষ্ট। পুলিশ বলছে- মরদেহের পাশ থেকে উদ্ধার নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের কললিস্ট বিশ্লেষণ ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে না পেলে এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যাচ্ছে না।
হিরন্ময় সরকার বলেন- গত বুধবার সকালে সুন্দলপুর-জামলা সড়কের ধলিগাতী মাঠ থেকে জাহানারা বেগমের মরদেহ উদ্ধার হয়। এরপরই আলতাফ ও মনিরকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া সূত্রমতে গত শুক্রবার ডুমুরিয়া এলাকা থেকে লাল্টুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে- তারা তিনজন অসৎ উদ্দেশে জাহানারাকে মণিরামপুর বাজারের রাজগঞ্জ মোড় হতে ভাড়া করে নিয়ে যায়। এরপর ধলিগাতী মাঠে একটি শ্যালো ঘরে নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে জাহানারাকে ধর্ষণ করে।
হিরন্ময় বলেন- গ্রেফতারকৃত জানিয়েছে লাল্টু ও মনির মোটরসাইকেলে করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাহানারাকে সুন্দলপুর বাজারে নিয়ে যায়। এরপর তারা ওই নারীকে ধলিগাতী মাঠে আলতাফের শ্যালো ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে আলতাফ প্রথমে জাহানারাকে ধর্ষণ করে। আলতাফ বেরিয়ে আসলে সেখানে যায় লাল্টু ও মনির। তারাও জাহানারাকে ধর্ষণ করে। ঘটনাক্রমে রাত সাড়ে ৯টার দিকে আলতাফের স্ত্রী শ্যালো ঘরে যেয়ে জাহানারা, লাল্টু ও মনিরকে দেখতে পেয়ে বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়।
বিষয়টি দেখতে পেয়ে চালের টালি খুলে লাল্টু ও মনির বের হয়ে জাহানারাকে মুক্ত করে। পরে তারা পৃথক হয়ে যায়। এ ঘটনার পর বুধবার সকালে শ্যালো ঘরের অদূরে ধান ক্ষেতের আইলে জাহানারার মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা।
পিবিআইর এ কর্মকর্তার বলেন- গ্রেফতার তিনজন জাহানারাকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করলেও ওই নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় কোনো তথ্য দিতে পারেনি। কীভাবে জাহানারার মৃত্যু হলো তাও স্পষ্ট নয়।
জাহানারা বেগম মণিরামপুরের জয়নগর গ্রামের লুৎফর রহমানের স্ত্রী। তিন বছর আগে তার স্বামী মারা যান। তিন সন্তানের সবাই শ্বশুর বাড়ি অবস্থান করায় স্বামীর ভিটায় একা থাকতেন জাহানারা। তার বাবার বাড়ি আগরহাটি গ্রামে। বুধবার সকালে বাবার বাড়ি এলাকার একটি মাঠ থেকে জাহানারা বেগমের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
হিরন্ময় সরকার বলেন- এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আলাউদ্দিন অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে মণিরামপুর থানায় মামলা করেছে। গ্রেফতার তিনজনকে ওই মামলায় আসামি করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আমরা তদন্ত অব্যহত রেখেছি।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
