স্কুলে রাতের জুয়ার বোর্ড ও দেহ ব্যবসা: তদন্তে প্রমাণিত, দপ্তরী চাকরিতে বহাল


নিজস্ব প্রতিনিধি: যশোরের শার্শার বাগুড়ী কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাতের অনৈতিক কার্যক্রম, দেহ ব্যবসা, জুয়ার বোর্ড ও আনুষঙ্গিক ব্যবসা চালানোর ঘটনায় দপ্তরী (নৈশপ্রহরী) কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে স্থানীয় এলাকাবাসী বহুবার লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর সম্পন্ন করা ওই অভিযোগে ৪৮ জন অভিভাবক ও সচেতন নাগরিক স্বাক্ষর করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, অভিযোগের বিষয়ে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির কাছে কামরুজ্জামান সমস্ত কৃতকার্য স্বীকার করেছেন। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দায় কিছু মাত্রায় প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চাকরিতে বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়; কিন্তু গ্রামবাসীর কিছু পক্ষ দাবি করেন—স্থানীয় মাতব্বরদের তথা প্ররোচনায় এবং মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাকে ক্ষমা করে স্বপদে রাখা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন ও কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে মাত্র ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে বলে জানা যায়।
বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ফরিদা আক্তার জানান, তদন্ত কমিটির কাছে অভিযুক্ত তার অপরাধ স্বীকার করে এবং এলাকাবাসীর অনুরোধে তাকে ঊল্লেখিতভাবে ক্ষমা করা হয়েছে। তিনি বলেন, তদন্তে সব কিছু প্রমাণিত হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও বিদ্যালয়ের সুনাম বজায় রাখা।
শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেহেনা বানু বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ আংশিক প্রমাণিত হয়েছে এবং কমিটি তাকে সাধারণ ক্ষমার সুপারিশ করে জানিয়েছে। তিনি বলেন, নতুন করে অভিযোগ ও তথ্য এলে আমি পুনরায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক দাবি করেছেন, একটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাতের অনৈতিক কার্যক্রম, দেহ ব্যবসা, জুয়ার বোর্ড, ও আনুষঙ্গিক ব্যবসা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের রাজনৈতিক প্রভাব ও ম্যানেজমেন্টের কারণেই শাস্তি নিতে ব্যর্থতা দেখা দিয়েছে; তারা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ হয়।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই; তবে তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। তিনি আরও বলেছেন, যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আর কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়।
স্থানীয়দের অসন্তোষ এবং অভিযোগ নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত বিষয়টি এলাকায় সক্রিয় বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে। বর্তমানে অভিযুক্ত কামরুজ্জামান তার অপরাধ স্বীকার করে মাফী চেয়েছেন এবং এলাকাবাসী ও কিছু শিক্ষা কর্মকর্তা তাকে ক্ষমা করেছেন, তবে গ্রামের অনেকে ও অভিভাবকরা দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে সন্তুষ্ট নন এবং পুনরায় সুস্পষ্ট ও স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)

একই রকম সংবাদ সমূহ

শার্শায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন
বেনাপোল প্রতিনিধি: যশোরের শার্শায় যড়যন্ত্রের শিকার সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি’র বিরুদ্ধে মিথ্যা,বিস্তারিত পড়ুন

শার্শার বাগআঁচড়ায় উঠান বৈঠকে বিএনপি নেতা তৃপ্তি
মো. শাহারুল ইসলাম রাজ, বাগআঁচড়া (শার্শা): যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ায় এক সমাবেশেবিস্তারিত পড়ুন

শার্শায় খেলাফত মজলিসের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বেনাপোল প্রতিনিধি: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস শার্শা উপজেলা শাখার উদ্যোগে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিতবিস্তারিত পড়ুন