কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বহাল, বন্ধ পর্যটন স্পট


কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বহালসহ সব পর্যটন স্পট বন্ধ থাকছে। এছাড়াও বন্ধ থাকছে সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউস ও কটেজ।
সোমবার (২৪ মে) রাতে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ।
গণপরিবহন চালু ও শর্ত সাপেক্ষে হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়ে ৩০ মে পর্যন্ত চলমান বিধিনিষেধ বাড়িয়ে গত রোববার এক প্রজ্ঞাপন জারি হয়। এই প্রজ্ঞাপনে গণপরিবহন চালু ও শর্ত সাপেক্ষে হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা রাখার নির্দেশনায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বহাল, পর্যটন স্পট ও হোটেল বন্ধ রাখার নির্দেশনায় পর্যটন ব্যবসায়ীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, করোনা সংক্রমণ কক্সবাজারে বেড়েছে। তাই রোববার (২৩ মে) রাতে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সমুদ্র সৈকতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকাসহ সকল পর্যটন স্পট ও সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউস এবং কটেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
মো. আমিন আল পারভেজ আরও বলেন, জেলায় করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সবকিছু আগের মতোই চলবে। পর্যটন স্পট ও হোটেল-মোটেল বন্ধ থাকবে। তবে শুধুমাত্র রেস্তোরাঁগুলো শর্ত সাপেক্ষে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে।
তিনি বলেন, সংক্রমণ রোধে ২৩ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত উখিয়া উপজেলাকে লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। আগের দিন লকডাউন দেওয়া হয় টেকনাফ উপজেলাতেও। একই সময় উখিয়ার চারটি, টেকনাফের একটিসহ পাঁচটি রোহিঙ্গা শিবিরে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সকলকে করোনার সংক্রমণ রোধে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে সোমবারও পুরো সৈকত ছিল ফাঁকা। সৈকতের সুগন্ধা, কবিতা চত্বর, কলাতলী পয়েন্টে প্রতিদিনের মতো কড়া পাহারায় ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। আগত দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিরুৎসাহিত করছেন তারা। আর লাবণী পয়েন্টে অবস্থানরত বিচ কর্মীরাও মাইকিং করছেন সৈকতে প্রবেশ নিষেধ নিয়ে।
আর কলাতলীস্থ হোটেল মোটেল জোনে দেখা গেছে, কয়েকটি রেস্তোরাঁ খোলা রয়েছে। আবার অনেক রেস্তোরাঁ পরিষ্কা-পরিচ্ছন্ন করে খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সবকিছু আগের নিয়মেই থাকছে। শুধুমাত্র রেস্তোরাঁ খোলার বিষয়টি শিথিল করা হয়েছে। সৈকতে প্রবেশে দর্শনার্থীদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রবেশদ্বারে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাহারা ও সৈকতের টহল আগের নিয়মেই চলছে।
গত বছরের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে সরকার লকডাউনের ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দেয় পর্যটন কেন্দ্রগুলো। পরে সংক্রমণ কমলে সরকার বিধিনিষেধ শিথিল করে খুলে দেয়। কিন্তু সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে এপ্রিলের শুরুতেই ফের লকডাউনে যায় দেশ। আবার বন্ধ হয়ে যায় সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। যা এখনো জারি আছে।
এদিকে হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউস ও কটেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে চরম হতাশ পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে হলেও সৈকতে পর্যটকদের আসার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান তারা।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্টহাউস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, ১ এপ্রিল থেকে সৈকতে পর্যটক সমাগম নিষিদ্ধ করে জেলা প্রশাসন। ঘোষণার কারণে এখনো অধিকাংশ হোটেল মোটেলের কর্মচারীর মার্চ ও এপ্রিল মাসের বেতনভাতা পরিশোধ করেননি মালিকরা। বেশিরভাগ কর্মচারী এখন কষ্টে রয়েছেন। সরকারি প্রজ্ঞাপনে হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা রাখার ঘোষণায় কর্মচারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও সৈকত স্পট বন্ধ থাকায় এখন সবাই হতাশ।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০৮ জন। এর মধ্যে রোহিঙ্গা রয়েছে ১৩ জন।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
