করোনাকালে ভালো নেই নড়াইলের পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা
করোনাকালে ভালো নেই নড়াইলের পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা। বাংলা নববর্ষ ও চৈত্রসংক্রান্তির মেলা ঘিরে তাঁরা যে আয় করেন, তা দিয়ে চলেন সারা বছর। এবার সেটাই হয়নি। এখনো তাঁদের কোনো উপার্জন নেই। তাই অর্থ সংকটে তাঁদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। দিন কাটছে খেয়ে না-খেয়ে। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, জেলা সদরের শাহাবাদ ইউনিয়নের আতশপাড়া গ্রামের রমেন চন্দ্র পাল বলেন, ‘প্রায় পাঁচ মাস ধরে লকডাউনে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ। অনাহারে-অর্ধাহারে চলছে আমাদের জীবন।’সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এ সম্প্রদায়ের লোকজন বেঁচে থাকেন বাংলা নববর্ষকে ঘিরে। পয়লা বৈশাখের দিন থেকে পুরো বৈশাখজুড়েই দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো এ জেলায়ও মাসব্যাপী বৈশাখী মেলা হয়ে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে কোভিড-১৯ মহামারি তাঁদের জন্য বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। করোনার কড়াকড়ির মধ্যে পেরিয়ে গেছে বৈশাখী উৎসব। আগে থেকে বায়না করে রাখা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা শেষ মুহূর্তে ফরমাশ বাতিল করেছেন। ফলে মাটির তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কুমাররা। রতডাঙ্গা গ্রামের মৃৎশিল্পী শঙ্কর চন্দ্র পাল বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে হাটবাজারসহ সব ধরনের যাতায়াত বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন চলছে। বৈশাখের রোজগার করা টাকা দিয়ে বছরের বাকি ১১ মাস সংসার চলে। বৈশাখকে ঘিরে এখনো টিকে আছে পালপাড়ার কুমাররা। লকডাউনের কারণে চরম সমস্যায় পড়েছি আমরা। শঙ্কর চন্দ্র পাল আরও বলেন, বৈশাখে মাটির পুতুল, হাতি, ঘোড়া, গণেশের মূর্তি, পান্তা-ইলিশ খেতে মাটির থালার বিকল্প নেই। মাটির তৈরি হাজার হাজার তৈজসপত্র রয়েছে কারখানায়। মাটির থালাও রয়েছে প্রচুর। ফলে এই সম্প্রদায়ের মানুষের রুজিরোজগার প্রায় বন্ধের পথে। জেলার কালিয়া উপজেলার কুলশুর পালপাড়া গ্রামের করুণা কান্ত পাল বলেন, ‘মাটি কিনে এনে ওই সব জিনিস বানাতে হয়। এবার মাটি কিনে হাঁড়ি, পাতিল, পেয়ালা, ফুলদানি তৈরি করা হলেও তা বিক্রি হয়নি। এ কারণে করোনায় কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়ে গেল। এ অবস্থায় এখানকার প্রায় ২০০ পরিবার চরম বিপাকে পড়েছে। তাই সরকারি প্রণোদনার দাবি জানাই। নড়াইল সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রতন হালদার বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাঁরা (মৃৎশিল্পী) ব্যাপক অবদান রাখেন। সরকারিভাবে তাঁদের সহযোগিতার অনেক সুযোগ আছে। তবে এ সংগঠিত হয়ে সমিতির মাধ্যমে আসতে হবে। তাহলে তাঁদের জন্য আর্থিক সুবিধা দেওয়া যেতে পারে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)