ডিবির পর র্যাব অফিসে ইমন
অভিনেত্রী মাহিয়া মাহিকে কেন্দ্র করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে অডিও প্রকাশের ঘটনায় অভিনেতা মামনুন ইমনের সাথে কথা বলেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও র্যাব। আর নায়িকা মাহিয়া মাহি দেশে ফিরলে তার সাথেও কথা বলা হবে বলে জানিয়েছেন ডিবির কর্মকর্তারা।
এদিকে মাহিকে তুলে আনতে দেওয়া হুমকিতে ডিবি পুলিশের নাম উল্লেখ করায় ডা. মুরাদকেও প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিবির যুগ্ম-কমিশনার হারুন অর রশিদ।
তবে অডিও প্রকাশ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবসানের জন্য আইনি পরামর্শ নিতে সোমবার রাতে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন অভিনেতা ইমন। এছাড়া মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাইরাল অডিও ক্লিপ ফাঁসের ঘটনায় কথা বলার জন্য র্যাব সদর দফতরেও যান ইমন। সেখান থেকে রাত ১১টায় ইমন বেরিয়ে যান বলে জানা গেছে।
ডিবি কার্যালয়ে যাওয়ার বিষয়ে ইমন জানিয়েছিলেন, অডিও প্রকাশের পর অসহায়ত্ব বোধ করছিলেন। চলচ্চিত্রের সহকর্মীরাও তাকে ভুল বুঝতে থাকেন। অথচ ইমনের দাবি, ফোনালাপ দু-তিন বার শুনলে বোঝা যাবে তিনি মন্ত্রীকে ওই পরিস্থিতিতে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের ডিবির যুগ্ম-কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার জের ধরে নায়িকা মাহিয়া মাহিকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব। তিনি বিদেশে থাকায় তাকে এ বিষয়ে এখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। দেশে ফিরলেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ ছাড়া মাহি দেশে না থাকায় অভিনেতা ইমনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এ বিষয়ে তার কাছ থেকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি।’
ভাইরাল হওয়া একটি ফোনকলে শোনা যায়, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে যেতে বলছেন গতকাল পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। যদি মাহি নিজ ইচ্ছায় সেখানে না যান তাহলে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবহার করে তুলে আনার হুমকি দেন তিনি। ফোনকলে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসব সংস্থাকে ব্যবহার করার কথা বলেছিলেন এর মধ্যে অন্যতম ছিল ডিবি পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে যুগ্ম-কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমি অন্য কোনো বাহিনীর কথা বলব না। যেহেতু তিনি (ডা. মুরাদ হাসান) ডিবির কথা উল্লেখ করেছেন, প্রয়োজনে তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।’ সেদিন মাহি ও মুরাদের ফোনালাপের পর ধর্ষণ সংঘটিত হয়েছিল কি না? এক সাংবাদিকের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে এখনো আসেনি। আমরা প্রয়োজনে সবার সঙ্গেই কথা বলব।’
ডিবি-সূত্র জানান, সোমবার প্রায় ৩০ মিনিট পর ইমন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান।
এ বিষয়ে ইমন বলেছেন, ‘হারুন ভাই (ডিবির যুগ্ম-কমিশনার হারুন অর রশিদ) আমার পূর্বপরিচিত। তার সঙ্গে এর আগে নানা সময়ে আমার দেখা ও কথা হয়েছে। গতকাল (সোমবার) যখন মন্ত্রীর সঙ্গে কল রেকর্ড ফাঁস হয়, সারা দিন এ নিয়ে আমাকে কথা বলতে হয়েছে। আমি নিজের অবস্থান সবাইকে পরিষ্কার করলেও সহকর্মীরাই আমাকে ভুল বোঝেন। কেউ কেউ আবার আমাকে ইঙ্গিত করে ফেসবুকে পোস্টও দেন। এসব আমাকে খুবই বিব্রত করেছে, কষ্ট দিয়েছে। বিপর্যস্ত আমি। তাই হারুন ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে রাতেই তার অফিসে দেখা করতে যাই। আমার অবস্থান তার কাছে পরিষ্কার করি। এরপর এসব বিষয়ে আমার কী করণীয় সে ব্যাপারে পরামর্শও চাই। তিনিও আমাকে সেই পরামর্শ দিয়েছেন। এরপর চা খেয়ে আমি চলে আসি।’
৩০ সেকেন্ডের জন্য হলেও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চান মাহি :
মাহি বর্তমানে ওমরাহ পালন করতে স্বামীর সঙ্গে সৌদি আরবে আছেন। নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মাহি। জানিয়েছেন, ৩০ সেকেন্ডের জন্য হলেও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চান তিনি।
স্ট্যাটাসে মাহি লেখেন, ‘ওমরাহ থেকে ফিরেই আমার প্রথম এবং একমাত্র চাওয়া আমি আমাদের সবার অভিভাবক, আমাদের মমতাময়ী মা (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার) সঙ্গে ৩০ সেকেন্ডের জন্য হলেও দেখা করতে চাই। অনেক কিছু বলার আছে। এই মনোবাসনা নিয়েই আমি মক্কা ত্যাগ করব। আমার বিশ্বাস এই চাওয়া ব্যর্থ হবে না।’
এর আগে এক ভিডিওবার্তায় মাহি বলেছিলেন, ‘সেদিন ঘটনা ঘটার পর আমি বেশ বিব্রত ছিলাম। নিজের আত্মসম্মানে কতটুকু আঘাত লেগেছে তা আমি আর আমার আল্লাহ জানেন। আজকেও আমি ভীষণ লজ্জিত নিজের কাছে, সেই সঙ্গে দেশবাসীর কাছে। আপনারা নিজে থেকে একবার চিন্তা করে দেখবেন আসলে এই ভাষার প্রতি উত্তর আমি কী দিতাম সেই সময়? বলার ভাষা আমার সেদিন ছিল না। আমি নিজের মতো করে উত্তর দিয়ে পাশ কাটিয়ে গিয়েছিলাম সেদিন। এটা ঠিক দুই বছর আগের ঘটনা ছিল।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)